হাফিজকে নিয়েও হারল মোহামেডান
হাফিজকে নিয়েও হারল মোহামেডান

হাফিজ ম্লান, হেরে শুরু মোহামেডানের

মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহসহ মোট ছয়জন দক্ষিণ আফ্রিকায়। তবু মোহামেডানের একাদশ দেখে কেউ অভিজ্ঞতার অভাবের কথা বলবেন না। সৌম্য সরকার, শুভগত হোম চৌধুরীরা তো আছেনই, পাকিস্তান থেকে উড়িয়ে নিয়ে আসা হয়েছে মোহাম্মদ হাফিজকে। সে তুলনায় শাইনপুকুর দলটা ছিল অনেকটাই অনভিজ্ঞ। কিন্তু সেই শাইনপুকুরই কিনা হারিয়ে দিল মোহামেডানকে!

কাল প্রিমিয়ার লিগের উদ্বোধনী দিনেই আবাহনী লিমিটেডকে হারিয়ে দিয়েছিল রূপগঞ্জ টাইগার্স। আজ মোহামেডান শাইনপুকুরের কাছে হারল ৪১ রানে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম যেন লিগের শুরুতেই হয়ে উঠেছে অঘটনের মঞ্চ।

অথচ ম্যাচের শুরুতে ছিল মোহামেডানেরই দাপট। শাইনপুকুর আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৪৪ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে। ছোট ছোট জুটিতে শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে উঠলেও শাইনপুকুরের সংগ্রহটা বড় হবে, সেটি মনেই হয়নি। কিন্তু ইনিংসের ৪৪তম ওভারে নাঈম হাসান আউট হওয়ার পর শুরু হয় আলাউদ্দিন বাবু ও সাজ্জাদুল হকের ব্যাটিং–তাণ্ডব।

আলাউদ্দিন বাবু ম্যাচসেরা

সৌম্য সরকার, ইয়াসির আরাফাতের বোলিংয়ে দ্রুত রান তুলে মোহামেডানের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। যে শাইনপুকুর ২০০ করতেই হিমশিম খাচ্ছিল, শেষ পর্যন্ত আলাউদ্দিন ও সাজ্জাদুলের ব্যাটিংয়ে ৭ উইকেটে ২৫০ রান করে দলটি। ৫৯ বলে ৭০ রান করে আউট হন সাজ্জাদুল। আলাউদ্দিন টি-টোয়েন্টিসুলভ ব্যাটিংয়ে মাত্র ১৯ বল খেলে করেছেন ৪৬ রান।

ইনিংসের শেষে ধরতে পারা ছন্দটা শাইনপুকুরের বোলাররাও কাজে লাগিয়েছেন ভালোভাবে। মোহামেডানের শক্তিশালী টপ অর্ডারকে দাঁড়াতেই দেননি আলাউদ্দিন আর অফ স্পিনার নাঈম হাসান। ৫০ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে তারা। অবশ্য নিজেদের বোঝাপড়ার ভুল এ ক্ষেত্রে বড় কারণ।

উদ্বোধনে নেমে পারভেজ হোসেনের ভুলেই রানআউট হয়েছেন সৌম্য সরকার ও আরিফুল ইসলাম। আগের দিন বিকেলে উড়ে আসা হাফিজের ওপর অনেক আস্থা ছিল মোহামেডানের। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার কম সময়ে মাঠে কিছুই করতে পারেননি পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক। বল হাতে ৮ ওভারে ৩৩ রানে ১ উইকেট দখলের পর ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ বলে ৪ রান করে আউট হয়েছেন আলাউদ্দিনের বলে।

বল হাতে হাফিজ নিয়েছেন ১ উইকেট

মোহামেডানের অন্য ব্যাটসম্যানরাও ইনিংস লম্বা করতে ব্যর্থ হন। আরিফুল হক, শুভাগত, জাহিদুজ্জামানের কেউই জুটি বাঁধতে পারেননি। তবে পারভেজ যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, ততক্ষণ জয়ের ক্ষীণ আশা ছিল মোহামেডানের। ৩৫তম ওভারে পারভেজও মারতে গিয়ে আউট হন। আলাউদ্দিনকে কাভারে বাউন্ডারি ছাড়া করার চেষ্টায় ক্যাচ তুলে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন এই বাঁহাতি। ৮৮ বল খেলে ৫৪ রান করা পারভেজের বিদায়ে মোহামেডানের পরাজয় হয়ে দাঁড়ায় সময়ের ব্যাপার।

মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী ও ইয়াসিন আরাফাত শেষের দিকে দ্রুত কিছু রান যোগ করলেও সেটি পরাজয় এড়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। সোহরাওয়ার্দী ৫২ বল খেলে ৫১ রান করেন, ইয়াসিনের ব্যাট থেকে এসেছে ৪২ বলে ৩৮ রানের ইনিংস। দুজনের সৌজন্যে মোহামেডান ৪৮.৩ ওভারে ২০৯ রান করতে সক্ষম হয়। ব্যাটিংয়ে ৪৬ রানের পর ২ উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরা হয়েছেন আলাউদ্দিন।