>মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ হতাশ ও বিধ্বস্ত। মনটা তাঁর বিষাদে ডুবে আছে। হতাশায় কথাই বলতে পারছেন না মাহমুদউল্লাহ। খুলনা টাইটানসের ওঠা হচ্ছে না শেষ চারে। আজ সিলেট সিক্সার্সের কাছেও হেরেছে তাঁর দল। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ যেন ভেঙে পড়েছেন আরও।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে শামীম চৌধুরীর প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে ভীষণ কষ্টই হচ্ছিল মাহমুদউল্লাহর। কণ্ঠ দিয়ে যেন কথাই বের হতে চাচ্ছে না। বলতে হয় বলে মৃদুস্বরে কিছু বলে গেলেন। শেষের দিকে শব্দগুলো ঠিক বোঝাও গেল না।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে মাহমুদউল্লাহ যখন সংবাদ সম্মেলন কক্ষের দিকে আসছিলেন, তাঁর পা দুটি যেন চলছিল না। তাঁকে দেখে জীবনানন্দ দাশের পঙ্ক্তি মনে পড়ছিল, 'আমি ক্লান্ত প্রাণ এক'! সংবাদ সম্মেলনেও ভেঙে পড়া মাহমুদউল্লাহকেই দেখা গেল। ডায়াসে উঠতেই রসিকতা করা হলো, তাতেও মুখে হাসি দেখা গেল না। সিলেট সিক্সার্সের পেসার ইবাদত হোসেনের একটা উদ্যাপন আছে—উইকেট পেলেই স্যালুট দেন। তাঁকে এ উদ্যাপন করতে সব সময়ই উৎসাহ দেন মাহমুদউল্লাহ। বিমানবাহিনীতে কর্মরত ইবাদতকে তিনি বলেন, 'উইকেট পেলেই স্যালুট দিবি। শুধু আমার উইকেটটা বাদে! '
আজ মাহমুদউল্লাহকে আউট করেই বিপিএলে প্রথম উইকেট পেলেন ইবাদত। পেয়ে যথারীতি স্যালুট! মানা করছিলেন তার পরও তো ইবাদত স্যালুট দিলেন—সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে এই রসিকতাও মাহমুদউল্লাহর মুখে হাসি ফোটাতে পারল না। মনটা তাঁর এমনই বিষাদে ডুবে আছে।
মাহমুদউল্লাহর দল খুলনা টাইটানস যেন 'টাইটানিক', হিম শৈলে আঘাত খেয়ে আটলান্টিকের অতলে ডুবে যাওয়াই যেন অনিবার্য! জাহাজের এ ডুবে যাওয়ার মর্মান্তিক দৃশ্য কাপ্তানের চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া উপায় নেই। তাঁর যে সাধ্য নেই ডুবন্ত জাহাজকে রক্ষা করা। খুলনার বিদায়ঘণ্টা তো বেজেছেই। টেবিলের তলানিতে পড়ে থাকায় শুনতে হচ্ছে টিপ্পনিও।
দেশের ক্রিকেটে বড় তারকা, অথচ দলকে ভালো ফল এনে দিতে পারেননি, মাহমুদউল্লাহর কষ্টটা এখানেই, 'এটা ব্যাখ্যা করা কঠিন। ড্রেসিংরুমে সবাই খুব হতাশ। আমরা সবাই ম্যাচ জিততে চেয়েছি। সেটি না হলে অবশ্যই খারাপ লাগে। খেলাটা ভালোবাসি বলেই খেলি, একই সঙ্গে আমার রুটি-রুজি। যখন ভালো করতে পারব না, দলকে কিছু দিতে পারব না, এত ভরসা করে আমাকে অধিনায়ক করেছে, গত দুই বছর খারাপও করিনি। এ বছরটা কিছু করতে পারছি না, যেভাবে নেতৃত্ব দিতে চেয়েছি পারিনি। আমার ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সও ভালো যায়নি। এটারই প্রভাব পড়েছে পুরো দলে।'
এবারের বিপিএলে নিজের খেলা নিয়েও হতাশ বাংলাদেশ টেস্ট দলের সহ অধিনায়ক। তাঁকে সবচেয়ে বেশি পোড়াচ্ছে অনেকগুলি ম্যাচেই তিনি শুরু করেও সেগুলি বড় করতে পারেননি, 'আমি বেশ কিছু ম্যাচে শুরুটা ভালো করতে পেরেছি। কিন্তু ইনিংসগুলি বড় করতে পারিনি। বড় করতে পারলে দলের জন্য ভালো হতো। নিয়মিতই শুরু করেছি। ১৫,১৬, ২০,২৫ পেয়েছি। কিন্তু বড় করতে পারিনি। এটা আমার ব্যর্থতা। তবে সেগুলি নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। আমি আসলেই খুব হতাশ।'