>এশিয়া কাপের দলে হঠাৎ ডাক পেয়ে অবাকই হয়েছেন সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েস।
বিসিবি হাইপারফরম্যান্স (এইচপি) ইউনিটের অধীনে চার দিনের ম্যাচ খেলতে খুলনায় ছিলেন সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েস। কাল সন্ধ্যায় হঠাৎ খবর পৌঁছায় দুজনকে যেতে হবে দুবাই। তড়িঘড়ি করে আজ ঢাকায় ফেরা। সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে দুজন রওনা দিচ্ছেন মরুর দেশে। হঠাৎ এশিয়া কাপে সুযোগ পেয়ে স্বাভাবিকভাবে দুজনই গেছেন চমকে!
হঠাৎ তড়িঘড়ি ডেকে নেওয়া হচ্ছে নিশ্চয়ই বসিয়ে রাখতে নয়। তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুজনই খেলবেন, না একজন—সেটি এখনো নিশ্চিত নয়। কথা হচ্ছে, মধ্যরাতে দুবাই পৌঁছে পরের দিন বিকেলে ১৫০ কিলোমিটার দূরে আবুধাবিতে নেমে কতটা ভালো করতে পারবেন, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে; যেখানে টুর্নামেন্ট শুরুর ছয় দিন আগে দল দুবাই পৌঁছেও এখনো কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে নতুন দুজন নেমেই ভালো করবেন, সেটি আশা করা একটু কঠিনই।
এত কিছু ভাবছেন না ইমরুল-সৌম্য। দলে সুযোগ পেলে ভালো প্রমাণ করতে হবে, স্বাভাবিকভাবে এটাই প্রত্যাশা। দেশ ছাড়ার আগে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আজ সে কথাগুলো বলেছেন বহুবার। তবে এভাবে দলে ডাক পাওয়াতে তাঁরা ভীষণ চমকে গেছেন। এভাবে দলে ডাক পাবেন, তা ভাবনাতেই ছিল না গত বছরের ২২ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে খেলা ইমরুল, ‘আসলেই অবাক হওয়ার মতোই ব্যাপার। সবাই জানেন আমরা খুলনায় চার দিনের ম্যাচ খেলছিলাম। এই টুর্নামেন্টে এভাবে ডাক পাব, চিন্তা করিনি কখনোই। এমন একটা টুর্নামেন্টে খেলতে পারছি, নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। যদি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাই, চেষ্টা করব নিজের সেরাটা দিয়ে ভালো করতে।’
দুবাইয়ে যাওয়া মানেই খেলা পুরোপুরি নিশ্চিত নয়। কার জায়গায় একাদশে সুযোগ পেতে পারেন, সেটি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তবে সুযোগ পেলে নিজেকে প্রমাণ করে দেখাতে হবে এটাই ইমরুলের প্রত্যাশা, ‘দেখুন আমার আসলে দলের যেই চাহিদা পূরণ করার জন্য ডাকা হয়েছে, আমি চেষ্টা করব সেটা পূরণ করতে। আমার ওপর যেই আস্থা রাখা হয়েছে, সেটার প্রতিদান দিতে চাই।’
আরব আমিরাতে যাবেন আর গরম নিয়ে কথা হবে না, তা নয়। ইমরুল চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছেন, ‘বাংলাদেশে ৩৩-৩৪ ডিগ্রি গরম, সেখানে ৪২-৪৩, ওখানেই আমাদের খেলতে হবে। আমি আবার অনুশীলনের সুযোগ পাচ্ছি না। সেখানে গিয়েই হয়তো পরের দিন ম্যাচ খেলতে হবে। এটা ভিন্ন অভিজ্ঞতা হবে। তবে আমাকে মানিয়ে নিতে হবে। দলের জন্য সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করব।’
হুট করে গিয়েই কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে ভালো খেলাটা যে কঠিন হবে, সেটি মানছেন সৌম্য, ‘চ্যালেঞ্জিং তো সব সময়ই। যেহেতু নতুন একটা ওয়েদারে যাচ্ছি আবার সফরের ঠিক মাঝামাঝি অবস্থায়। সুতরাং যত দ্রুত পারা যায়, মানিয়ে নিতে হবে। আর কোনো উপায়ও নেই, মানিয়ে নেওয়া ছাড়া। নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত রাখতে হবে, ধরে নিতে হবে সব ঠিক আছে।’
সৌম্যর ব্যাটে অনেক দিন হলো রান নেই। সেটি জানা আছে তরুণ বাঁহাতি ওপেনারের। আর এমনই সময় দলে যোগ দিচ্ছেন, যখন বাংলাদেশের এশিয়া কাপ ফাইনাল খেলার স্বপ্ন ধূসর হতে চলেছে। পরের দুই ম্যাচ জিততে পারলেই কেবল মিলতে পারে ফাইনাল খেলার টিকিট। তবে এখনই দুই ম্যাচ না ভেবে শুধু আফগানিস্তানের ম্যাচটা নিয়ে ভাবছেন সৌম্য, ‘টুর্নামেন্টে নকআউট পর্ব থাকে, তখন কিন্তু হারলেই বাদ। এখন আমাদের সেভাবেই ভাবতে হবে। ম্যাচ ধরে ধরে চিন্তা করলেই ভালো। আমার মনে হয় আমাদের পরের ম্যাচটা কোয়ার্টার ফাইনাল ও তার পরের ম্যাচ সেমিফাইনাল হিসেবে ধরতে হবে। ওইভাবে যদি চিন্তা করি, তাহলে আমাদের জন্য ভালো হবে। তাই প্রথমে আফগানিস্তান ম্যাচ, এরপর পাকিস্তান। এভাবে চিন্তা করলে চাপ কম থাকবে।’
কাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে সুপার ফোরের দ্বিতীয় ম্যাচটি খেলতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে সুপার ফোরের শেষ ম্যাচটি ২৬ সেপ্টেম্বর।