অনুশীলনে বাংলাদেশ দল

স্পিন সামলানোর ব্যাটিংয়েই মনোযোগ

প্রথম ওয়ানডের অভিজ্ঞতা থেকে দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে স্পিন বোলিং সামলানোর প্রস্তুতিই বেশি নিয়েছেন বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানরা।

—অনেক লম্বা অনুশীলন সেশন হলো...

জন লুইস: ‘হ্যাঁ, দেখছেন তো...কতটা ক্লান্ত আমি!’

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ইনডোর থেকে ব্যাটিং অনুশীলন শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় এই প্রতিবেদককে কথাটা বলে গেলেন বাংলাদেশ দলের নতুন ব্যাটিং কোচ। বাংলাদেশ দলের অনুশীলন দেখে মনেই হয়নি এটি আসলে ছিল ঐচ্ছিক অনুশীলন। প্রথম ওয়ানডের ম্যান অব দ্য ম্যাচ সাকিব আল হাসানের অনুশীলন দেখেও সেটি বোঝার উপায় ছিল না। নেটে এসেই বোলিং মেশিনের সামনে ব্যাটিং করলেন। এরপর ইনডোর ছাড়ার আগে প্রায় এক ঘণ্টা চালালেন ব্যাটিং অনুশীলন।

জয়ের পরদিনের অনুশীলনে সাধারণত আগের ম্যাচের একাদশে থাকা ক্রিকেটাররা অনুশীলনে আসেন না। হোটেলেই বিশ্রাম নেন। কাল দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। ঐচ্ছিক অনুশীলনের দিনেই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে চলে এলেন সাকিব, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমসহ আট ক্রিকেটার। বোঝাই যাচ্ছে যাঁরা এসেছেন তাঁরা সবাই ব্যাটসম্যান। পেসারদের মধ্যে এলেন শুধু প্রথম ম্যাচে না খেলা তাসকিন আহমেদ। সে ম্যাচে বাংলাদেশ দল ৬ উইকেটে জিতলেও ১২২ রান তাড়া করোর ম্যাচে ব্যাটিংটা হয়নি সন্তোষজনক। ১০৫ রানেই পড়ে গিয়েছিল ৪ উইকেট। সে কারণেই ব্যাটিংয়ে একটু বেশি মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা।

ম্যাচ শেষে অধিনায়ক তামিম ইকবাল দলের ব্যাটিং ভালো না হওয়ার জন্য উইকেটের চরিত্রকেই দায়ী করেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের তরুণ বাঁহাতি স্পিনার আকিল হোসেনের ঘূর্ণি বোকা বানিয়েছে তিন বাংলাদেশি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে। জেসন মোহাম্মদের নির্বিষ অফ স্পিনকেও মনে হয়েছে ভীতিকর। কাল হয়তো সে কারণেই বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং অনুশীলনটাও হলো মূলত স্পিন বোলিংয়ের বিপক্ষে। তামিম, মুশফিক, সাকিবরা পেসের চেয়ে স্পিন বলই বেশি খেললেন।

ওপেনার লিটন দাস লম্বা সময় নিয়ে নতুন ব্যাটিং কোচ জন লুইসের সঙ্গে কাজ করলেন এবং সেটাও স্পিনের বিপক্ষে ব্যাটিং নিয়েই। মোহাম্মদ মিঠুনকেও প্রচুর সময় দিলেন নতুন কোচ। অনুশীলন শেষে প্রথম ওয়ানডের ব্যাটিং নিয়ে লুইস দিলেন এক বাক্যের উত্তর, ‘ব্যাটসম্যানদের পারফরম্যান্স ছিল মোটামুটি। আপনারা তো দেখেছেনই...।’

পেস বোলাররা অনুশীলনে না এলেও এসেছিলেন পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসন। অনুশীলনে তিনিও হাত লাগান স্পিনে, নেটে হয়ে যান অফ স্পিনার। অনেকটা সময় বোলিং করেছেন সৌম্য সরকারকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দুটি টেস্ট আর ১৫টি ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা আছে গিবসনের। অনুশীলনেই ক্যারিবীয় স্পিন খেলার অভিজ্ঞতাটা তাই খারাপ হয়নি সৌম্যের।

পেসাররা অনুশীলনে না এলেও গিবসন কথা বলেছেন তাঁদের আগের দিনের পারফরম্যান্স নিয়ে। পরশু ওয়ানডে অভিষেক হওয়া হাসানকে আগেই বাংলাদেশ পেস বোলিংয়ের ভবিষ্যৎ ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। হাসানের পারফরম্যান্স তাই অবাক করেনি গিবসনকে, ‘আমি একটুও অবাক হইনি। এ জন্যই তো আমরা তাঁকে নিয়েছি! ১২ মাস ধরে সে আমাদের সঙ্গে আছে। কাল (পরশু) তাঁর জন্য ভালো সুযোগ ছিল। অভিষেকে ৩ উইকেট তাঁর কঠোর পরিশ্রমেরই ফল।’

ওটিস গিবসন উন্নতি দেখছেন মোস্তাফিজুর রহমানের বোলিংয়েও। প্রথম ওয়ানডেতে ক্যারিবীয় ওপেনার সুনিল অ্যামব্রিসকে লেংথ থেকে ভেতরে আসা বলে এলবিডব্লিউ করেন এই বাঁহাতি। সুনিলের এই আউটই বলে দেয়, মোস্তাফিজের তূণে যোগ হচ্ছে কাঙ্ক্ষিত নতুন অস্ত্র, যার জন্য প্রায় এক বছর ধরেই অপেক্ষা বাংলাদেশ দলের। গিবসন বলছিলেন, ‘আমরা বল ভেতরে আনা নিয়ে কাজ করেছি। ওর কবজির অবস্থান নিয়েও অনেক কাজ করেছি। কাল (পরশু) ও নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে। সামনের ম্যাচগুলোতে ওর আরও ভেতরে আসা বল দেখবেন।’