জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রায় তিন বছর পর জাতীয় দলে ফিরেছিলেন নুরুল হাসান। ফেরাটা মন্দ হয়নি তাঁর। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তো সিরিজ জয়ে দারুণ অবদান তাঁর। মুশফিকুর রহিমের অনুপস্থিতিতে জিম্বাবুয়ে আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দলের উইকেটকিপিংয়ের দায়িত্ব দারুণভাবেই সামলেছেন।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ফিরছেন মুশফিক। দুটি সিরিজ এত ভালো করার পরেও নুরুল উইকেটকিপার হিসেবে সুযোগ পাবেন কিনা, সেটি নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। তবে সুযোগ পান আর না-ই পান নুরুল এসব নিয়ে ভাবতে চান না। তাঁর মাথায় আছে বাংলাদেশের জয়ই।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নুরুল খেলেছিলেন পাঁচ ম্যাচের সব কটিতেই। এর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিনটি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দলে থাকুন বা না থাকুন, নুরুল চান যারাই সুযোগ পান, তারা যেন ভালো করেন, ‘বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুম এখন খুবই ভালো অবস্থায় আছে। ১৫ বা ২০- যে কজনই থাকি না কেন, আমরা সবাই চাই যে ১১ জন খেলছে তারা যেন ভালো করে। যেটা দল হিসেবে ভালো করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ ব্যবধানে হারানোর সুখস্মৃতি নিয়ে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। কিউইদের দলে নেই তাদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াডের কেউ। তবে সিরিজটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলেই মনে করছেন নুরুল।
তিন দিনের কোয়ারেন্টিনের পর আজই মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলনে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ দল। সেখানেই বিসিবির দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় নুরুল বলেছেন নিজের ইচ্ছার কথা, ‘অবশ্যই নিউজিল্যান্ড ভালো দল। আমার কাছে মনে হয় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সিরিজ হবে। আমরা যদি দল হিসেবে খেলতে পারি, তাহলে অবশ্যই ভালো করার সম্ভাবনা থাকবে। আমার ওয়ানডে ও টেস্ট অভিষেক নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে হয়েছিল। অবশ্যই এবার সুযোগ পেলে শতভাগ দেওয়ারই চেষ্টা করব।’
দলের জয়ে অবদান রাখাই বড় ব্যাপার নুরুলের কাছে, ‘আমার কাছে মনে হয়, ৫০-১০০ রান করেও যদি দল হারে, সেটার চেয়ে ৫-১০ রান করেও দলের জয়ে অবদান রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। যেখানেই সুযোগ পাই না কেন, আমার কাছে মনে হয় দলের প্রয়োজনে যতটুকু করতে পারি। অবশ্যই আমার কাছে মনে হয় যে, শেষ দুটি সিরিজে আমরা দল হিসেবে খেলতে পেরেছি।’
দলের বোলিং নিয়েও কথা বলেছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রায় তিন বছর পর জাতীয় দলে ফেরা নুরুল, ‘বোলিং ইউনিট হিসেবে আমরা ভালো করেছি। মোস্তাফিজ (মোস্তাফিজুর রহমান) তো অসাধারণ। আমার কাছে মনে হয় সাকিব ভাই, শরীফুল (ইসলাম)— সবাই খুবই ভালো করেছে। মেহেদীও খুব ভালো বোলিং করেছে আমার কাছে মনে হয়। সত্যি কথা বলতে আমরা সবাই দল হিসেবে খেলতে পেরেছি, এটা গুরুত্বপূর্ণ। এটা যদি চালিয়ে যেতে পারি, ইনশা আল্লাহ ভালো কিছু হবে।’
করোনাভাইরাসের সময়ে কঠোর জৈব সুরক্ষা বলয়ে থেকে খেলতে হচ্ছে ক্রিকেটারদের। জিম্বাবুয়ে সফরের পর সরাসরি অস্ট্রেলিয়া সিরিজের জৈব সুরক্ষা বলয়ে ঢুকেছিলেন ক্রিকেটাররা। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের শেষ ম্যাচে নুরুলের বলা ‘তাড়াতাড়ি আউট করেন ভাই, অনেক দিন পর বাসায় যাব’ কথাটাও ছড়িয়ে পড়েছিল সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে। সে সিরিজের পর কদিনের ছুটি মিলেছিল, এরপরই আবার ঢুকে যেতে হয়েছে নিউজিল্যান্ড সিরিজের জৈব সুরক্ষা বলয়ে।
তবে মাঝের কিছুদিনের অবসর সামনের সিরিজে সহায়তা করবে বলেই মনে করেন নুরুল, ‘সত্যি কথা বলতে জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকা কঠিন। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় যে এই পরিস্থিতির সঙ্গে আমাদের মানিয়ে নেওয়া উচিত। সবাই সেটাই করছে। দুটি সিরিজে বলয়ে থাকার পর সবাই একটু ছুটি কাটিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়েই অনুশীলনে এসেছি। এমন পরিস্থিতিতেও যে ক্রিকেট খেলতে পারছি, সেটাই বড় কথা। আমার মনে হয় সবাই মানিয়ে নিয়েছে, ভবিষ্যতে আরও ভালোভাবে নিতে পারব।’
১ সেপ্টেম্বর শুরু হবে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। সব কটি ম্যাচই হবে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে।