>আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞা এখনো ওঠেনি। ২০১৮ সালটা তাঁর কেটেছে বিতর্কে। নতুন বছরের প্রথম দিনে সাব্বিরকে তাই দিতে হলো কঠিন কঠিন সব প্রশ্নের উত্তর। বিতর্কে পেছনে রেখে তিনি এখন তাকাতে চান সামনে।
বছরের প্রথম দিনেই কঠিন এক পরীক্ষা দিতে হলো সাব্বির রহমানকে। সে পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে যে উত্তীর্ণ হয়েছেন, তা নয়। বরং একটা পর্যায়ে গিয়ে অসহায় আত্মসমর্পণই করতে হয়েছে তাঁকে। বিপিএল শুরু হচ্ছে ৫ জানুয়ারি থেকে। ছুটি শেষে দলগুলো শুরু করেছে অনুশীলন। ঝালিয়ে নিতে শুরু করেছে সিলেট সিক্সার্সও। সিলেটের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে এলেন সাব্বির। কঠিন কঠিন সব প্রশ্ন ছুটে গেল তাঁর দিকে।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুটা সহজ কিছু প্রশ্ন দিয়ে। গত সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলায় ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল বিসিবি। আর এক মাস পরই শেষ হবে সেটি। নিষেধাজ্ঞার খড়্গ সরে গেলেই সাব্বির পারবেন জাতীয় দলে চোখ রাখতে। আর এখন জাতীয় দলের প্রসঙ্গ মানেই অবধারিত চলে আসবে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপ দলে আদৌ জায়গা হবে কি না, সেটি অবশ্য সাব্বির এখনই ভাবতে চান না, ‘জাতীয় দলের দরজা সবার জন্যই খোলা আছে। বিপিএলটা আমার জন্য অনেক বড় মঞ্চ। আমার কাছে অনেক বড় টুর্নামেন্ট। আমি চেষ্টা করব আমার স্বাভাবিক ক্রিকেটটা খেলতে। বিশ্বকাপ অনেক দূরে আছে এখনো। আপাতত বিপিএল নিয়ে চিন্তা করছি।’ তবে তাঁর আত্মবিশ্বাস, বিপিএলে যদি ভালো করতে পারেন, হারানো জায়গা ফিরে পাবেন আবার, ‘যদি বিপিএলে ভালো করি সুযোগ থাকবে আমার। চেষ্টা করব বিপিএলে ভালো কিছু করার। তারপর বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারটা আসবে।’
হারানো জায়গা ফিরে পাওয়া না-পাওয়ার প্রশ্নটা সাব্বিরকে শুনতে হচ্ছে অনেক দিন ধরেই। বিতর্ক যে তাঁর পিছু ছাড়ে না, ২০১৮ সালটা হয়ে আছে বিতর্কময়! কখনো বড় অঙ্কের টাকা জরিমানা গুনেছেন, নিষিদ্ধ হয়েছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে, কখনোবা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। নিষিদ্ধ হওয়াটা কতটা কষ্টের সাব্বিরের চেয়ে ভালো বুঝবে কে, ‘অনেক কঠিন, বিশেষ করে মানসিকভাবে। এই সময়ে এনসিএল খেলেছি, বিসিএল খেলেছি। অনুশীলন করেছি নিজের উদ্যোগে। বাসায় ছিলাম পরিবারের সঙ্গে। প্রায় (নিষেধাজ্ঞার) পাঁচ মাস হয়ে গেছে, আর এক মাস বাকি আছে। দেখি এবার বিপিএলটা কী হয়।’ তাঁর আশা বিতর্কিত ঘটনা প্রভাব পড়বে না মাঠের পারফরম্যান্সে, ‘তেমন প্রভাব পড়েছে বলে মনে হয় না। আপনি চাইলেই সেঞ্চুরি করবেন এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমি চেষ্টা করেছি নিজের প্রস্তুতি ঠিকমতো নিতে।’
কিন্তু বারবার বিতর্কে জড়াচ্ছেন, নিষিদ্ধ হচ্ছেন, এ থেকে কী শিক্ষা নিচ্ছেন সাব্বির? কঠিন প্রশ্নটা রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে সামলানোর চেষ্টা তাঁর, ‘কাল রাতে প্রতিজ্ঞা করেছি, ২০১৮ আমার অনেক খারাপ কেটেছে। ভুলে গেছি। আজ নতুন বছরের প্রথম দিন, সামনে তাকিয়ে আছি এখন।’ বারবার একই ভুল ক্যারিয়ারের জন্য কতটা হুমকি? কী আত্মোপলব্ধি তাঁর, প্রশ্নকর্তার দিকে একবার তাকিয়ে শুধু এতটুকুই বললেন, ‘হুম, আসলেই ভাই। অনেক বড় হুমকি।’
ডেভিড ওয়ার্নার আসছেন সিলেটের হয়ে বিপিএল খেলতে। অস্ট্রেলীয় তারকার সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা কাজে দেবে বলেই মনে করেন সাব্বির, ‘অবশ্যই তিনি অনেক ভালো খেলোয়াড়। তাঁর অভিজ্ঞতা অনেক। অবশ্যই তাঁর দলে থাকাটা ভালো একটা দিক। তাঁর মতো বড় খেলোয়াড়ের অভিজ্ঞতা যদি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেন, আমরা যদি তাঁকে অনুসরণ করি, আমরা যদি বাকি ১০ জন সমর্থন দিতে পারি, তাহলে ভালো কিছু হবে।’
ওয়ার্নারের সঙ্গে একটা জায়গায় মিল আছে সাব্বিরের, দুজনই আপাতত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিষিদ্ধ। অতীতে ওয়ার্নার বিতর্ক পেরিয়ে ভালোভাবে ফিরে এসেছেন। সাব্বির পারবেন? প্রশ্নটা যেন ভয়ংকর বাউন্সার হয়ে ধেয়ে গেল সাব্বিরের দিকে। হুক, পুল নয়; বেশ বিব্রত তিনি, প্রশ্নের উত্তর খুঁজে না পেয়ে ওখানেই সমাপ্তি তাঁর সংবাদ সম্মেলনের।