>অসাধারণ ইনিংস খেলেছেন সাব্বির। তাসকিন পেয়েছেন ৪ উইকেট, এনে দিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু। তবুও সিলেট সিক্সার্স আজ হেরেছে। সাব্বিরের জন্য কষ্টই লাগছে তাসকিনের। দল হারায় নিজের পারফরম্যান্স নিয়েও খুশি হতে পারছেন না তিনি
কত দিন পর সাব্বির রহমানকে দেখা গেল দুর্দান্ত চেহারায়। ব্যাটিংয়ে রানখরা, মাঠের বাইরে নানা বিতর্কে পথ হারিয়ে ফেলা ২৭ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান আজ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দেখার মতো এক ইনিংস খেললেন। ‘টি-টোয়েন্টি আমার খেলা’—কথাটা তিনি প্রায়ই বলেন। নিজের প্রিয় সংস্করণে যেদিন ভালো খেলেন, সেদিন সাব্বিরের দল পায় ভালো সংগ্রহ। আজ সিলেট সিক্সার্সও পেয়েছে।
দিন শেষে বৃথাই গেল সাব্বিরের ৫১ বলে ৮৫ রানের ইনিংসটা। তবে ৫ চার আর ৬ ছক্কায় সাজানো ইনিংসটা যেন তাঁর ফিরে আসার বার্তা। সাব্বিরের দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করেই সিলেট পেয়েছে ১৯৪ রানের বড় স্কোর। বোলারদের ব্যর্থতায় এই স্কোরটাও জেতার জন্য যথেষ্ট হলো না সিলেটের। রংপুর সেটি টপকে গেল ৪ উইকেট আর ৩ বল হাতে রেখে। সিলেট যদি ম্যাচটা জিতত ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারটা হয়তো সাব্বিরের হাতেই উঠত, সংবাদ সম্মেলনে এসেও হয়তো নিজের সাফল্যের গল্পটা বলতেন। সেটি হয়নি, দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে এলেন তাসকিন আহমেদ।
তাসকিনের মনে আফসোস আর কষ্ট। গুরুত্বপূর্ণ কিছু ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন তবুও দল জেতেনি, সেটি তো আছেই। তাসকিনের কষ্ট লাগছে সাব্বিরের জন্যও, ‘ব্যক্তিগতভাবে খুবই খারাপ লেগেছে ম্যাচ হারার পর। ম্যাচটা জিতলে হয়তো ও ম্যান অব দ্য ম্যাচ হতো। আমি আসলে খুবই কষ্ট পেয়েছি। ওর জন্য হলেও জেতা উচিত ছিল ম্যাচটা।’
সাব্বিরের কথা বললেন। নিজের কথা বলবেন না? এই বিপিএলে অন্যরকম তাসকিনকে দেখা যাচ্ছে। ধারাবাহিক উইকেট পাচ্ছেন। ৭ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়ে এই মুহূর্তে আছেন সবার ওপরে। আজও ৪ উইকেট নিয়েছেন। খরচে ছিলেন, তবে সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু তিনিই এনে দিয়েছেন। আউট করেছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স ও রাইলি রুশোকেও।
উইকেটপ্রাপ্তির এ আনন্দ তাঁর আড়াল হয়েছে দলের হারে, ‘ম্যাচ হারলে একটু খারাপ লাগে। এ ম্যাচটা জেতার খুব ইচ্ছে ছিল। চেষ্টা করেছি। খুবই ভালো ব্যাটিং পিচ। ১৯৪ রান করে হারাটা মোটেও উচিত হয়নি। দুঃখজনক। কিছু কিছু ভুল হয়েছে। কিছু ক্যাচ ছেড়েছি আমরা। কিছু বাজে ওভার গেছে। সব মিলিয়ে এটা দলীয় খেলা। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স যদি বলি, আমি উইকেট পেয়েছি চারটা, কিন্তু খুশি হতে পারছি না। ঠিক আছে, আমি ভালো ভালো চারটি উইকেট পেয়েছি। দিন শেষে এটা দলীয় খেলা। শেষ পর্যন্ত নিজেকে খুশি রাখতে পারছি না ম্যাচ হেরে যাওয়ায়।’
গতবার সাদামাটা দল গড়েও সিক্সার্স সিলেটের মাঠে চার ম্যাচের তিনটিই জিতেছিল। এবার তারকাসমৃদ্ধ হওয়ার পরও হারের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না দলটা। ৭ ম্যাচে ৫ হার নিয়ে এখন তাদের শেষ চারে ওঠা নিয়েই সংশয়। কী হলো সিলেটের, কেন ধারাবাহিক জিততে পারছে না, ব্যাখ্যা নেই তাসকিনের কাছে, ‘আসলে কী যে বলব, বলা কঠিন। ১৯৪ করে হারা, আমার কাছে ব্যাখ্যা দেওয়ার ভাষা নেই। ভাগ্য খারাপ যে ছোট ছোট ভুলের কারণে হেরে গেছি। ওদের দলে (রংপুরে) বড় নাম ছিল। ওদের চার সেরা ব্যাটসম্যানকে আউট তো করেছিলাম। শেষের দিকে আসলে ছোট ভুলের কারণে হেরে গেছি।’
টি-টোয়েন্টি খেলাই তো এমন, পার্থক্য গড়ে দেয় ছোট ছোট ভুলগুলো। এবার সিলেট ভুল বেশিই করে ফেলছে। লিগ পর্বে তাদের বাকি ৫ ম্যাচে সেটির প্রায়শ্চিত্ত হয় কি না কে জানে!