>সর্বশেষ ৬ ম্যাচের ৫টিতে হেরেছে ঢাকা ডায়নামাইটস। বিপিএলের শুরুতে যে দলটিতে দুর্দান্ত মনে হচ্ছিল, সে দলটিই এখন বেশ দিগ্ভ্রান্ত। সেরা দুইয়ে থাকতে পারে সাকিবের দল, বাদও পড়ে যেতে পারে!
ম্যাচ শেষে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের দর্শকদের অভিনন্দনের জবাব দিলেন চিটাগং ভাইকিংসের খেলোয়াড়, কর্মকর্তারা। গ্যালারিতে তখন করতালির বন্যা। ডিজে বাজিয়ে যাচ্ছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির থিম সং। চিটাগংয়ের উচ্ছ্বসিত খেলোয়াড়, কর্মকর্তাদের দেখে মনে হচ্ছিল যেন যুদ্ধজয় করেছেন তাঁরা। যুদ্ধজয়ই তো! ঢাকা ডায়নামাইটসকে হারিয়ে শেষ চার নিশ্চিতের এই আনন্দ যে যুদ্ধজয়ের মতোই।
ভাইকিংসরা যখন আনন্দে মাতোয়ারা, মাঠেরই এক প্রান্তে ডায়নামাইটসের ড্রেসিং রুম থমথমে। চিটাগংয়ের ১৭৪ রান টপকে যেতে না পারার ব্যর্থতা যেন কুরে কুরে খাচ্ছে। এই ড্রেসিং রুমের সবচেয়ে বিধ্বস্ত মানুষটি বোধ হয় ছিলেন সাকিব আল হাসান। ঢাকা-অধিনায়ক আজ জান লড়িয়ে খেলেছিলেন। কিন্তু যোগ্য সঙ্গীর অভাবে দলকে বিজয়ের বন্দরে নিতে পারেননি।
১৭৫ রানের লক্ষ্যটা কঠিন, তবে দলটা ঢাকা বলেই অসম্ভব কিছু ছিল না। সাকিব আল হাসান, কাইরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেলরা যে দলের অলংকার, সে দলটির পারাই উচিত। কিন্তু পারল না। সাকিব নিজে ৪২ বলে ৫৩ রানের ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু ও পাশ থেকে আর এক বা দুজন আরেকটু দাঁড়িয়ে গেলে অন্য রকম হতেও পারত ফল। ২৩ বলে ৩৩ করেও নুরুল ফিরেছেন বড় অসময়ে। কাইরন পোলার্ড এ পর্যায়ের ক্রিকেটে মানা যায় না এমন একটা রান নিতে গিয়ে রানআউট হয়েছেন। আন্দ্রে রাসেল ক্যামেরন ডেলপোর্টের ‘নো বলে’র কল্যাণে জীবন পেয়েও আরেকটু সময় থেকে যেতে পারেননি। ২৩ বলে ৩৯ রান করে তিনিও ফিরেছেন অসময়ে।
সাকিব ম্যাচ শেষে ম্যাচ হারার কারণ হিসেবে এগুলোকেই ইঙ্গিত করেছেন, ‘আমরা উইকেট হারিয়েছি নিয়মিত বিরতিতে। সে কারণেই আমরা ম্যাচটা শেষ করে আসতে পারিনি।’
নিজের হতাশার কথাও বলতে ভোলেননি বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক, ‘আসলেই খুব হতাশ আমি। ভেবেছিলাম আমরা বোলিংয়ে ভালো করেছি। চিটাগংয়ের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রাটাও পূরণ করতে পারব। কিন্তু পারলাম না।’
বিপিএলে এখন পর্যন্ত ১০ ম্যাচ খেলে ঢাকার জয়-পরাজয়ের সংখ্যা সমান। ৫টিতে জয়, ৫টিতে হার। পয়েন্ট ১০। পয়েন্ট টেবিলের চারে। আজ দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে রাজশাহী কিংস জিতলে, নিরাপদ চারের বাইরেও চলে যেতে হবে। ঢাকার জন্য দু ধারি তলোয়ার হয়ে গেল এই ম্যাচটি। সিলেট সিক্সার্স বড় ব্যবধানে জিতলেও ঢাকার ঝামেলা বাড়বে।
এই ঢাকাই টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে একের পর এক ম্যাচ জিতে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে গিয়েছিল। কিন্তু তারা ছন্দ হারিয়ে ফেলেছে। ৫ পরাজয় এসেছে গত ৬ ম্যাচে। দুটি ম্যাচ বাকি আছে বলে ঢাকার শুধু শেষ চার নিশ্চিত করা নয়, সেরা দুইয়ে থাকার সম্ভাবনাও এখনো উজ্জ্বল। তবে শঙ্কাও আছে। ঢাকা বাদও পড়ে যেতে পারে!
অথচ এই দলটাকেই একসময় মনে হচ্ছিল সবচেয়ে ফেবারিট! ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি ঢাকার এখনো আছে। তবে পা হড়কালেই বিপদ, এই টেনশন মাথায় নিয়ে সাকিবরা এখন কী করেন, সেটাই দেখার।