সাকিবের মতো তথ্য না দেওয়ায় শাস্তি পেয়েছিলেন জয়াসুরিয়াও

সনাথ জয়াসুরিয়া। ছবি: এএফপি
সনাথ জয়াসুরিয়া। ছবি: এএফপি
>জুয়াড়িদের কাছ থেকে ম্যাচ পাতানো কিংবা স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েও তা আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগকে না জানানোয় শাস্তি হয়েছে বেশ কিছু ক্রিকেটারের

আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগের আচরণবিধিতে বলা আছে, কোনো ক্রিকেটার অনৈতিক প্রস্তাব পেলে তা আকসুকে না জানিয়ে চেপে গেলে সেটি অপরাধ বলে গণ্য হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন কাজ করে শাস্তি পাওয়া ক্রিকেটার আছেন অনেকেই। উমর আকমলের কথাই ধরুন। গত বছর এক টিভি সাক্ষাৎকারে স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন বলে দাবি করেন পাকিস্তানের এ ব্যাটসম্যান। এরপরই নড়চড়ে বসে আইসিসি। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের তরফ থেকেও ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল উমর আকমলের কাছে। আইসিসিও সে ঘটনার তদন্ত করেছিল।

আজ তথ্য না জানানোর বড় শাস্তি পেয়েছেন সাকিব আল হাসান। ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন এই অলরাউন্ডার। সে যা–ই হোক, জুয়ারিদের কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাব আইসিসিকে না জানানোর অপরাধে ক্রিকেটারদের শাস্তি পাওয়ার কয়েকটি ঘটনা আসুন জেনে নিই:

সনাথ জয়াসুরিয়া
শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ইতিহাসে তিনি অমর। জিতেছেন বিশ্বকাপ, আলো ছড়িয়েছেন ব্যাটে-বলে। কিন্তু জয়াসুরিয়ার বিপক্ষেও উঠেছে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ। সেটি অবশ্য খেলা ছাড়ার অনেক পরে, এ বছরের শুরুতে। আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগ জয়াসুরিয়ার বিপক্ষে অভিযোগ তোলে গত বছরের অক্টোবরে। শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটে দুর্নীতি নিয়ে তদন্তে নেমে জয়াসুরিয়ার সাহায্য চেয়েছিল আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগ। কিন্তু সংস্থাটিকে ম্যাচ পাতানো নিয়ে কোনো তথ্য দিয়ে সহায়তা করেননি জয়াসুরিয়া। তাঁর কাছে কোনো প্রস্তাব এসেছিল কি না, সে বিষয়েও কিছু জানাননি। তদন্তে বাধা সৃষ্টির অভিযোগও উঠেছিল তাঁর বিপক্ষে। এতে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন জয়াসুরিয়া।

কুশল লোকুরাচ্চি নিষিদ্ধ হয়েছিলেন বিপিএলে। ছবি: রয়টার্স

কুশল লোকুরাচ্চি
বিপিএলে ম্যাচ পাতানো বিতর্কে জড়ানোয় ক্যারিয়ার আর লম্বা হয়নি লোকুরাচ্চির। ঢাকা গ্লাডিয়েটরসের হয়ে বিপিএলে খেলেছেন শ্রীলঙ্কার সাবেক এ অলরাউন্ডার। ২০১৪ সালে বিপিএলে ম্যাচ পাতানো বিতর্কে জড়িয়ে ১৮ মাস নিষিদ্ধ হন লোকুরাচ্চি। তাঁর বিপক্ষে আকসুর অভিযোগ ছিল, ম্যাচ পাতানো হবে জেনেও তা যথাযথ (আকসু) কর্তৃপক্ষকে জানাননি। এরপর আর ক্রিকেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকেননি শ্রীলঙ্কার হয়ে ২১ ওয়ানডে ও ৪ টেস্ট খেলা সাবেক এ ক্রিকেটার।

জিন সাইমস
দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের জার্সি তাঁর গায়ে ওঠেনি। তবে প্রোটিয়াদের ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালোই আলো ছড়িয়েছেন ৬২ প্রথম শ্রেণি ও ১০০টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলা এ ক্রিকেটার। ২০১৬ সালে তাঁকে ৭ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা। সাইমসের বিপক্ষে আইসিসির ‘অ্যান্টি করাপশন কোড’ ভাঙার অভিযোগ ছিল দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের। ম্যাচ পাতানোর জন্য অর্থ নিয়েও আকসুর এক কর্মকর্তার কাছে তা স্বীকার করেননি সাইমস। কোনো তথ্যও তাঁকে জানাননি।

সিদ্ধার্থ ত্রিবেদী আইপিএলে রাজস্থানের হয়েও খেলেছেন। ছবি: বিসিসিআে

সিদ্ধার্থ ত্রিবেদী
ভারতের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে পরিচিত মুখ সিদ্ধার্থ ত্রিবেদী। আইপিএলে খেলেছেন রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে। জুয়াড়িদের কাছ থেকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগকে এ কথা তিনি জানাননি। এ জন্য ২০১৩ সালে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন ত্রিবেদী। পরে দিল্লি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছিলেন, জুয়াড়িদের কাছ থেকে অর্থ নিয়েও তা ফেরত দিয়েছিলেন। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সবশেষ ২০১৫ সালে খেলেছেন ত্রিবেদী।

থামি সোলেকিলে
২০০৪-০৫ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে তিনটি টেস্ট খেলেছেন সোলেকিলে। ২০১৫ সালে প্রোটিয়াদের ঘরোয়া টুর্নামেন্টে ‘র‌্যাম স্লাম’-এ ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ ওঠে তাঁর বিপক্ষে। বাজিকরদের প্রস্তাব গোপন করার অভিযোগও ছিল। আকসুকে এ ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেননি। সব রকম অপরাধ মিলিয়ে তাঁকে ১৬ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।