>জ্যামাইকা টেস্টে টস জিতে বোলিং নিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করেছে ২ উইকেটে ৭৯। দুটি উইকেট নিয়েছেন মিরাজ
টস জিতে কেন বোলিং নিয়েছেন, সেটির ব্যাখ্যায় সাকিব আল হাসান বললেন, ‘উইকেট একটু আর্দ্র, আশা করি আমাদের পেসাররা সুযোগটা কাজে লাগাতে পারবে।’ বাংলাদেশ অধিনায়কের কথায় মনে হবে পেসারদের ওপর ভীষণ আস্থা রেখেই তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অথচ জ্যামাইকা টেস্টে একজন পেসার বসিয়ে তিন বিশেষজ্ঞ স্পিনার নিয়ে খেলছে বাংলাদেশ। পেসারদের যে সুযোগের কথা বললেন সাকিব, প্রথম সেশনের প্রায় পুরোটা সময় তাঁদের ‘অলস’ সময় কেটেছে।
সাকিবের কথা কিংবা সিদ্ধান্ত চমকে ভরা, নাকি আসল চমক দিচ্ছে স্যাবাইনা পার্কের উইকেট, সেটিই প্রশ্ন! উইকেটে প্রথম দিনের সকাল থেকেই যেভাবে স্পিন ধরছে, বাংলাদেশ অধিনায়ক তাঁর ‘আস্থাভাজন’ দুই পেসারের হাতে বলতে গেলে বলই দিলেন না। আবু জায়েদ ও কামরুল ইসলাম ১ ওভার করে বোলিং করে দুটি মেডেন দিয়ে শুধু বল কুড়ানোর কাজটি করেছেন। বাকি ৩৩ ওভার করেছেন তিন স্পিনার। এতেই প্রথম স্পেলে নির্ধারিত ৩০ ওভারের চেয়েও বাড়তি ৫ ওভার করার সুযোগ পেয়েছে।
দ্বিতীয় ওভারেই নতুন বলে আক্রমণে এসেছেন সাকিব। পরের ওভার থেকে বোলিং করছেন মিরাজ। টার্ন-বাউন্সে মাঝেমধ্যে বাংলাদেশের স্পিনাররা এমন ভড়কে দিচ্ছেন ক্যারিবীয়দের, মনে হতে পারে এটা স্যাবাইনা পার্ক নাকি গামিনি ডি সিলভার তৈরি করা মিরপুরের ‘ডিজাইন পিচ’! বাংলাদেশ স্পিনারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ক্যারিবীয় ওপেনার ডেভন স্মিথকে এতটা নড়বড়ে লেগেছে, উইকেটকিপার নুরুল হাসান বারবার বোলারদের উৎসাহিত করছেন এই বলে, ‘এ বেশিক্ষণ থাকবে না, সুযোগটা কাজে লাগাও!’ সুযোগটা কাজে লাগালেন মিরাজ। ৯ম ওভারের প্রথম বলে ফিরিয়ে দিলেন স্মিথকে (২)। কাইরন পাওয়েল-স্মিথের দ্বিতীয় উইকেট জুটি ৫০ রান অবশ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু জুটিটা আর বড় হতে দেননি মিরাজ। মিরাজের সোজা বলে লাইন মিস করে এলবিডব্লু পাওয়েল (২৯)। সাকিবের সিদ্ধান্ত যদি শুরুর চমক হয়, তবে প্রথম দিনের প্রথম স্পেলে মিরাজের এমন সাফল্যই চমকে দিয়েছে বেশি।
২ উইকেটে ৭৯ রান তুলে মধ্যাহ্নবিরতিতে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম সেশনটা দুই দলই সমানে সমান। দু-একটি ‘হাফ’ চান্স কাজে লাগাতে পারলে পুরো সেশনটাই বাংলাদেশের হতে পারত। তা না হলেও স্বস্তির বিষয়, অ্যান্টিগার মতো জ্যামাইকা টেস্টের শুরুটা অন্তত ভয়াবহ হয়নি! তবে জ্যামাইকা টেস্ট যে অনেক চমক নিয়ে বসে আছে, সেটির কিছু নমুনা পাওয়া গেল প্রথম সেশনেই। বাংলাদেশ যখন তিন বিশেষজ্ঞ স্পিনার নিয়ে নেমেছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সেখানে ছেঁটে ফেলেছে তাঁদের লেগ স্পিনার দেবেন্দ্র বিশুকে। স্যাবাইনা পার্কের উইকেট কারা ভালো পড়তে পারল, কে জানে!