সাকিবকে পাঁচেই খেলানো হোক

>

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম। দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ানও। এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের বিভিন্ন দিক নিয়ে লিখছেন প্রথম আলো অনলাইনে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের আগে আমিনুল মনে করেন, সাকিব আল হাসানকে ব্যাটিং পজিশনের ৫ নম্বরে খেলানোটাই দলের জন্য ভালো হবে।

বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচটাতেই বাংলাদেশ এমন একটা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলতে যাচ্ছে তারা বেশ দুর্ভাগাই। চমৎকার ক্রিকেট খেলিয়ে একটি দেশ, মাঠে ভীষণ কঠিন প্রতিপক্ষ, দলে দারুণ ক্রিকেটারেরও অভাব নেই। কিন্তু বিশ্বকাপে তাদের কোনো বড় সাফল্য নেই। দুর্ভাগ্যবশত, দলটা ‘চোকার’ উপাধি পেয়েছে। এবারের বিশ্বকাপেও তারা নিজেদের প্রথম ম্যাচে বড় ব্যবধানে হেরেছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। তারপরও বাংলাদেশের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা অনেক কঠিন প্রতিপক্ষ, এটি না বললেও চলছে।

এ ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশ কেমন হবে—এ নিয়ে অনেকেরই কৌতূহল আছে। তবে আমি এটা বলি, আমার একাদশ তৈরির ক্ষমতা থাকলে আমি তিনজন ‘ওপেনার’কেই দলে নিতাম। তিন ওপেনার বলতে তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার আর লিটন দাস। হ্যাঁ, আমার দলে লিটন আছে। আপনাদের প্রশ্ন থাকতে পারে লিটনকে দলে নিলে সে কোন জায়গায় ব্যাটিং করবে?

আমি সাকিব আল হাসানকে তিনে খেলাতে চাই না। তামিম, সৌম্য ওপেন করবে আমার দলে তিনে লিটন। সাকিব কিন্তু খেলবে পাঁচে। চারে আমি রাখব মুশফিকুর রহিমকে। ছয়ে ব্যাটিং করবে মাহমুদউল্লাহ।

৭ নম্বর জায়গাটা নিয়ে আমি অনেক ভেবেছি। মেহেদী হাসান মিরাজ, মোসাদ্দেক হোসেন নাকি সাব্বির রহমান। এটা একটা কঠিন নির্বাচন। তবে সাব্বির দলে ঢোকার ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়েই থাকবে। এই জায়গায় প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত মোসাদ্দেক হোসেন। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে সে প্রমাণ করেছে ওর ভেতরে কী আছে। সুযোগ পেলে সে কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। মিরাজ এই জায়গায় আমার দ্বিতীয় পছন্দ। তিনজনের মধ্যে একজনকে বেছে নিতে বললে আমি অবশ্যই মোসাদ্দেককে বেছে নেব।

দলের প্রয়োজনেই সাকিবকে পাঁচে চান আমিনুল। ফাইল ছবি

তিন পেসারই খেলানো উচিত। মাশরাফি বিন মুর্তজা, মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে কে? রুবেল হোসেন, সাইফউদ্দীন নাকি আবু জায়েদ! শুনছি সাইফউদ্দীনের নাকি চোট আছে। এটা চিন্তার বিষয়। দিনে দিনে ছেলেটি দারুণ একটা অলরাউন্ডার হয়ে উঠছে। সেদিন ভারতের বিপক্ষে কার্ডিফের প্রস্তুতি ম্যাচে মোটামুটি ভালোই বোলিং করেছে। দলের বিপদে ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে পড়াটাও সে অভ্যাসে পরিণত করছে। চোটের কারণে ওকে না পাওয়াটা দুর্ভাগ্যই বলব। তবে সাইফ না খেললে রুবেল হোসেন চলে আসবে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই। আবু জায়েদকে আরও একটু অপেক্ষাই করতে হচ্ছে।

অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন, সাকিবকে কেন আমি তিনে খেলাতে চাই না। প্রশ্নটার উত্তর খুবই সোজা। দক্ষিণ আফ্রিকা দলে ইমরান তাহির নামের একজন বিশ্বসেরা লেগ স্পিনার আছেন। আমি ব্যাটিং অর্ডারের মাঝামাঝি একজন বাঁহাতিকে রাখতে চাই। তামিম, সৌম্য দুজনই বাঁহাতি। সাকিবকে তিনে নামালে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের একটু আগেভাগেই ব্যবহার করে ফেলার ঝুঁকি থাকে। লেগ স্পিনারদের বিপক্ষে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানরা সুবিধা আদায় করতে পারে। এটা ভেবেই আমি সাকিবকে পাঁচে খেলাতে চাই।

শুভকামনা তো অবশ্যই থাকবে বাংলাদেশ দলের প্রতি। এই ম্যাচটা খুব ট্যাকটিক্যালি খেলতে হবে আমাদের দলকে। কোচ স্টিভ রোডস যে পরিকল্পনা করে দলকে মাঠে নামাবেন, সে পরিকল্পনার অনেক ব্যত্যয় ঘটবে। মাশরাফিকে মাঠে তাৎক্ষণিকভাবে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলগুলো এমনই। খুবই বুদ্ধিদীপ্ত দল ওরা। এদের সঙ্গে ছোট ছোট মুহূর্তে বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্তগুলোই দলকে এগিয়ে দেবে। আমি মনে করি মাশরাফির সে সামর্থ্য পুরোপুরিই আছে।