>টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষেই অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ। সেটির কারণ হিসেবে বোলিং নয়, দুই দলের ব্যাটিংয়ের পার্থক্যকেই তুলে ধরছেন বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসন
বাংলাদেশ প্রথম দিনে ২৩৩ রানে অলআউট। পাকিস্তান দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেটে ৩৪২ রান নিয়ে। অপরাজিত দুই ব্যাটসম্যানের মধ্যে বাবর আজম আজ দিন শুরু করবেন ১৪৩ রানে, আসাদ শফিক ৬০ রানে। এর আগে সেঞ্চুরি করেছেন ওপেনার শান মাসুদও। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের দুই দিন যেতে না যেতেই যে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে পড়েছে, সেটা সংখ্যাগুলোই বলে।
কিন্তু কেন এত পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ? বিশ্লেষণে সাদা চোখে একটা বাক্যই আসবে—দুদিনে ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে মোটেও এগিয়ে থাকার মতো ক্রিকেট খেলেনি তারা! ফিল্ডিংয়ে বাবর আজমের ক্যাচ পড়েছে ২ রানে। শান মাসুদ ৮৬ রানে থাকার সময় বল তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটকিপার লিটন দাসের গ্লাভসে গেলেও অনবধান বাংলাদেশ বুঝতেই পারেনি আউট হয়েছে, আপিলই করেনি তারা। ব্যাটসম্যানের পর যার সেটি সবচেয়ে বেশি বোঝার কথা, সেই উইকেট কিপার লিটন দাসও নির্বিকার! পাটা পিচে বোলিংও আহামরি কিছু ছিল না। তবে এসব নয়, বাংলাদেশের বোলিং কোচ ওটিস গিবসনের চোখে, এই টেস্টে বাংলাদেশের শুরুতেই এত পিছিয়ে পড়ার কারণ আসলে বাজে ব্যাটিং।
টেস্টের প্রথম দিনে বাংলাদেশের ব্যাটিং ছিল ছন্নছাড়া। ছয়ে নামা মোহাম্মদ মিঠুনের ৬৩ রান ছাড়া আর কোনো অর্ধশতক নেই। ৪০-এর বেশি ইনিংসই আছে আর শুধু তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্তর। চার ব্যাটসম্যান সেট হয়ে আউট হয়ে গেছেন ২০-৩০-এর ঘরে। এমন একটা দলের রান ২৫০ পেরোবে কীভাবে? গিবসনের চোখে, এখানেই পিছিয়ে গেছে বাংলাদেশ দল। তাঁর চোখে এই পিচ ২৩৩-এর নয়, অন্তত ৩০০ রানের। দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে পিচ নিয়ে প্রশ্নেই গিবসন বলছিলেন, ‘গতকাল পিচে কিছু ছিল, তবে অত বেশি কিছু না। এটা ২৩৩-এর পিচ নয়। আমি বলব, আমাদের অন্তত ৩০০ করা উচিত ছিল।’
বোলিং প্রসঙ্গে গিবসনের দুই দলের তুলনাটা হলো এ রকম, ‘পাকিস্তানি পেসারদের বলের গতি আমাদের চেয়ে অনেক বেশি। শাহিন আফ্রিদি কাল ভালো বোলিং করেছে। মোহাম্মদ আব্বাস রান নেওয়ার সুযোগ দেয় না। তরুণ এই বোলার অনেক জোরে বল করেছে, কিন্তু ও কিছু রানও দিয়েছে। কিন্তু ওদের গতি আছে, আমাদের বোলাররা বলে সুইং করাচ্ছে।’ এরপরই ব্যাটিং ব্যর্থতার প্রসঙ্গ, ‘আমাদের ব্যাটসম্যানরা ৩০-৪০ করে আউট হয়েছে, ওদের ব্যাটসম্যানরা সেঞ্চুরি করেছে। পার্থক্যটা সেখানেই।’
এর আগে পিচ নিয়ে প্রশ্নেও দুই দলে ব্যাটিংয়ের পার্থক্যটা তুলে ধরেন গিবসন, ‘ওরা অনেক সুযোগ পেয়েছে। বাবর আজম বিশ্বমানের একজন ব্যাটসম্যান, ওকে আপনি সুযোগ দিতে পারেন না। ৪ রানে জীবন পেয়ে ও আমাদের ভুগিয়েছে। আমাদের ব্যাটসম্যানরা ৩০-এর ঘরে আউট হয়ে গেছে, একজন ফিফটি করেছে। আজ ওদের দুজন সেঞ্চুরি করল, একজন ফিফটির ওপরে অপরাজিত। এটাই দুই দল কোথায় আছে সেই পার্থক্য বোঝায়। আমার মনে হয়েছে, আমাদের একজন ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরি পাওয়া উচিত ছিল।’
এই আফসোসগুলো না কমালে ম্যাচ শেষে যে হতাশই হওয়ার সম্ভাবনা।