>নয়টি টেস্ট খেলুড়ে দেশ নিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করতে যাচ্ছে আইসিসি। আগামী ১ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে দুই বছর চলবে এই মহাযজ্ঞ, শেষ হবে ২০২১ সালের জুন মাসে। প্রতিটি টেস্ট খেলুড়ে দেশ একাধিক দ্বিপক্ষীয় টেস্ট সিরিজ খেলবে। শেষমেশ শীর্ষ দুই দল বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়ন খেতাব পাওয়ার লড়াইয়ে অবতীর্ণ হবে ইংল্যান্ডে।
ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টির দাপটে টেস্ট ক্রিকেটটা দিন দিন রং হারাচ্ছে যেন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটের ‘আগ্রাসনের’ মুখে টেস্টকে বাঁচানোর জন্য এক অভিনব টুর্নামেন্ট আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছে আইসিসি। শুরু হতে যাচ্ছে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। টেস্ট খেলুড়ে ৯ জাতি আগামী দুই বছর একাধিক দ্বিপক্ষীয় টেস্ট সিরিজ খেলবে। শীর্ষ দুই দল মুখোমুখি হবে ফাইনালে। ফাইনাল জয়ী দল হবে টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।
১ আগস্ট থেকে শুরু হবে এই মহাযজ্ঞ। দুই বছর টেস্ট খেলুড়ে ৯ দেশ খেলবে ২৭টি টেস্ট সিরিজ। সিরিজগুলোয় ৭২টি টেস্ট ম্যাচ হবে। আইসিসির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি, ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি জেমস অ্যান্ডারসন, অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক টিম পেইন প্রমুখ।
জেমস অ্যান্ডারসন মনে করছেন, এখন থেকে প্রতিটা টেস্ট ম্যাচের আলাদা গুরুত্ব থাকবে। দলগুলো এখন আর শুধু টি-টোয়েন্টি আর ওয়ানডেকে বেশি গুরুত্ব দেবে না, ‘টেস্ট ক্রিকেটেই রয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা। ক্রিকেটের আদি ও আসল ফরম্যাট এটাই। বিশ্বব্যাপী অনেক খেলোয়াড় এই ফরম্যাটে খেলে নিজেদের উন্নত করতে চায়। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করা আইসিসির একটি চমৎকার উদ্যোগ। এখন থেকে প্রতিটা টেস্ট ম্যাচের একটা আলাদা গুরুত্ব থাকবে।’
আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার জন্য মুখিয়ে আছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি, ‘অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে আমরা আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য অপেক্ষা করছি। ক্রিকেটের দীর্ঘতম ফরম্যাটকে আরও গুরুত্ববহ করবে এই আয়োজন। টেস্ট ক্রিকেট খেলা সব সময়েই চ্যালেঞ্জের, আর টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করলে অন্য রকম একটা শান্তি পাওয়া যায়। টেস্টে ভারত কয়েক বছর ধরে বেশ ভালো করছে। আমরা চাইব এই চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার জন্য।’
অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের কাছে টেস্টের ব্যাগি গ্রিন ক্যাপের মর্যাদা অন্য রকম। এই ক্যাপ পরে সাফল্য অর্জন করা প্রত্যেক অস্ট্রেলীয় তারকার কাছে স্বপ্নের মতো। আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আবির্ভাবের কারণে ব্যাগি গ্রিন ক্যাপ পরে টেস্টে আরও ভালো করতে চাইবে অস্ট্রেলিয়ানরা, এমনটাই মনে করছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক টিম পেইন, ‘এটি একটা চমৎকার উদ্যোগ। আমরা টেস্ট খেলতে ভালোবাসি। আমাদের কাছে ক্রিকেটের শীর্ষ পর্যায় টেস্টই। অস্ট্রেলিয়ায় এখনো টেস্টের কদর সবচেয়ে বেশি। ঘরের মাঠে খেলোয়াড়, সমর্থক, মিডিয়ার কাছে টেস্টের আবেদন অন্য রকম। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের কাছে এখনো ব্যাগি গ্রিন ক্যাপ পরে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারাটা সর্বোচ্চ সাফল্য। আইসিসি এমন একটা টুর্নামেন্টের আয়োজন করছে, তাঁর মানে এখন থেকে টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলো টেস্টকে গুরুত্ব দেবে আরও বেশি।’
প্রতিটা দেশ তিনটি করে হোম ও অ্যাওয়ে সিরিজ খেলবে। প্রত্যেক সিরিজে ১২০ পয়েন্ট থাকবে। এই ১২০ পয়েন্ট ভাগ হবে সিরিজে কয়টা টেস্ট হচ্ছে তাঁর ওপর। তিনটা টেস্ট হলে প্রতি টেস্টের জন্য ৪০ পয়েন্ট করে থাকবে, দুটি টেস্ট হলে ৬০। টেস্ট টাই হলে পয়েন্ট ভাগাভাগি হবে। ড্র হলে ৩:১ অনুপাতে পয়েন্ট ভাগাভাগি হবে। সিরিজগুলোর দৈর্ঘ্য দুই টেস্ট থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ টেস্ট পর্যন্ত হবে।
আর এই আয়োজন শুরু হবে ১ আগস্ট, অ্যাশেজ থেকে। যেখানে মাঠে নামে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া।