ঢাকা টেস্ট যদি ড্র হয়, তবুও সিরিজ বাঁচাতে পারবে না বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সামনে এটি তাই বাঁচা-মরার লড়াই। আর লড়াইয়ে জিততে হলে মাহমুদউল্লাহ মনে করেন ১২০ শতাংশ দিয়ে খেলতে হবে
বাংলাদেশ দল আজ সকালে অনুশীলন শুরু করল প্রায় কুয়াশায় ঢাকা পরিবেশে। এই কুয়াশায় শীতের আগমনী বার্তা থাকলেও বাংলাদেশের জন্য সেটি মোটেও ভালো বার্তা বয়ে আনছে না। কুয়াশায় থাকা মানেই দিনটা শুরু হবে কঠিন কন্ডিশনে, যে কন্ডিশনে ব্যাটিং করা সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং। টস তখন হয়ে উঠবে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ যদি সিলেট টেস্টের মতো ঢাকা টেস্টেও হেরে যায়? বাংলাদেশ দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ উত্তরটা দেন এভাবে, 'যদি আপনি মন্থর উইকেটে খেলেন, সম্ভবত চতুর্থ ইনিংসে স্পিনাররা বেশি সুবিধা পাবে। অবশ্যই আপনি চাইবেন টস জিততে।’ সিলেট টেস্টের ফল এসেছে চতুর্থ দিনে। কিন্তু বাংলাদেশ হেরে গেছে আসলে প্রথম দুই দিনেই! সেই হারে এখন সিরিজটা বাঁচানো নিয়ে সংশয়ে। জিম্বাবুয়ের কাছে যদি বাংলাদেশ এই সিরিজ হারে, দেশের ক্রিকেটে বড় ধাক্কা হয়ে আসবে সেটি।
বাংলাদেশ এখন খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে। মাহমুদউল্লাহ বলছেন, তাঁদের পিঠ ঠেকে গেছে দেয়ালে। এখন একটাই উপায়, গা ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ানো, দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে যাওয়া। আর এগিয়ে যেতে মাহমুদউল্লাহ বলছেন, ‘মাঠে গিয়ে ভালো খেলাটাই মূল লক্ষ্য। সেটা যদি আপনি করতে না পারেন, তাহলে ভীষণ খারাপ লাগবে, আপনি দেশের হয়ে ভালো করতে পারছেন না। এটা সবাইকে অনেক পীড়া দেয়। আমাদের এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মতো অবস্থা। আমাদের ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এখানে অন্য কোনো সুযোগ নেই।’
সিলেট টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছে বাজে ব্যাটিংয়ে। মাহমুদউল্লাহ হতাশা থেকে বলেছিলেন, ‘এভাবে টেস্ট খেলার মানে হয় না!’ এমন হতাশার পর ভীষণ কঠিন হয়ে যায় সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানো। এ কঠিন চ্যালেঞ্জ উতরে যেতে কী করতে হবে, সেটিও জানা মাহমুদউল্লাহর, ‘সিলেট টেস্টের পর আমরা সব খেলোয়াড় এক জায়গায় বসেছিলাম। ওই টেস্টে কী কী ইতিবাচক দিক ছিল, কোথায় খারাপ করেছি, যেগুলো পরের ম্যাচে করা যাবে না, সেগুলো চিহ্নিত করেছি। কিছু জায়গায় যদি শক্ত থাকতে পারি, তাহলে আমরা ভালো করতে পারব। আমাদের আসল চিন্তার জায়গা ব্যাটিং। এই জায়গায় আমরা অন্য সংস্করণে যত ভালো করতে পারছি, টেস্ট ক্রিকেটে তত ভালো করতে পারছি না। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় চিন্তার জায়গা। আবার আমরা যদি খুব বেশি চিন্তা করি তাহলে চাপটা আমাদের ওপরই পড়বে। আমাদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে হবে।’
এই টেস্ট যদি ড্র হয়, তবুও সিরিজ বাঁচাতে পারবে না বাংলাদেশ। আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারলে দলকে কতটা অস্বস্তিতে পড়তে হবে, সেটি নিশ্চয়ই অজানা নয়। বাংলাদেশের সামনে তাই বাঁচা-মরার লড়াই শুরু কাল। আর এ লড়াইয়ে জিততে হলে মাহমুদউল্লাহ মনে করেন ১০০ শতাংশের বেশিই দিতে হবে, ‘সবার ব্যক্তিগত বিশ্বাসের জায়গা থাকে। খেলোয়াড়েরা নিজ থেকে চিন্তা করে, দলও চিন্তা করে। আমরা হৃদয় দিয়ে খেলি। যে তাঁর দেশের জন্য খেলে, সব সময় ১০০ ভাগ দিয়েই খেলে। তবে এই টেস্টে আমরা ১২০ ভাগ দিয়ে খেলব।’
দেয়ালে পিট ঠেকে যাওয়া দলের সামনে এ ছাড়া যে আর উপায় নেই। ১২০ কেন, প্রয়োজনে বাংলাদেশকে ২০০ ভাগও দিতে হতে পারে। না হলে দীর্ঘদিন পর পড়তে হবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ হারের লজ্জায়।