লেগ স্পিনে নতুন বৈচিত্র্য যোগ করছেন আমিনুল

নতুন নতুন অস্ত্রের খোঁজে লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম। ফাইল ছবি, প্রথম আলো
নতুন নতুন অস্ত্রের খোঁজে লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম। ফাইল ছবি, প্রথম আলো

স্পিনারদের মোকাবিলায় মুশফিকুর রহিম নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ খুলনা টাইগার্সের নেট সেশনে মুশফিককে বল করেছেন লেগস্পিন অলরাউন্ডার আমিনুল ইসলাম। কিছুক্ষণ পর মুশফিকের সঙ্গে নেটে যোগ দেন রাইলি রুশো। সংক্ষিপ্ত সংস্করণে দক্ষিণ আফ্রিকার এ ব্যাটসম্যান পরীক্ষিত স্ট্রোকমেকার। দুজনের বিপক্ষে অনুশীলনে একেবারে একেবারে খারাপ বোলিং করেননি আমিনুল। দু-একটা আলগা ডেলিভারিতে মার খেলেও আদায় করেছেন সমীহ, আউট করেছেন রুশোকেও।

টি-টোয়েন্টি সংস্করণ লেগ স্পিনারদের জন্য এমনিতেই চ্যালেঞ্জের। এবার বিপিএলে সব দলে বিসিবি লেগ স্পিনার খেলানোর কথা বলায় আমিনুল নিয়মিতই সুযোগ পাচ্ছেন খুলনায়। দলটির খেলা দুটি ম্যাচেই ছিলেন আমিনুল, ঢাকায় প্রথম ম্যাচে ওভারপ্রতি ড়ে ৬.২৫ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট। চট্টগ্রামে খুলনার প্রথম ম্যাচে অবশ্য ভালো করতে পারেননি। রাজশাহীর বিপক্ষে ২ ওভারে দিয়েছিলেন ১৫ রান। কাল রংপুর রেঞ্জার্সের মুখোমুখি হবে খুলনা। স্বাভাবিকভাবেই নেটে তাই নিজেকে একটু বেশিই ঝালিয়ে নিলেন আমিনুল। জহুর আহমেদের ব্যাটসম্যানবান্ধব উইকেটে লেগ স্পিনারদের চ্যালেঞ্জটা আমিনুল ভালোই জানেন। মার খাওয়ার দিন এলে সামলানোর কায়দাটা জানতে হয় তাদের।

অনুশীলন শেষে চাপ সামলানোর মানসিকতা নিয়েই বললেন জাতীয় দলে লেগ স্পিনার হিসেবে খেলা আমিনুল, ‘টি-টোয়েন্টিতে আসলে প্রতিটি ম্যাচ লেগ স্পিনারদের জন্য চ্যালেঞ্জের। বিশেষ করে চট্টগ্রামে খেলা হলে তখন একটু বেশিই চ্যালেঞ্জিং। কারণ এখানে উইকেট থাকে ব্যাটসম্যানদের পক্ষে। কিন্তু এটা আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নেই। এখানে যদি ভালো করতে পারি তাহলে বোলিং উইকেটে আরও ভালো হবে।’

লেগ স্পিনারদের প্রথাগত ডেলিভারির পাশাপাশি বৈচিত্র্য থাকতে হয়। এমনিতে ঝুলিয়ে ছাড়ার পাশাপাশি একটু জোরের ওপর বল ছাড়ার ক্ষমতা, গুগলি, ফ্লিপার, টপ স্পিন মজুত থাকলে ব্যাটসম্যানদের ওপর চাপ বিস্তার করা সহজ হয়। আমিনুলের অস্ত্রাগারেও নিশ্চয়ই এমন কিছু আছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি টানলেন জাতীয় দলের স্পিন কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টোরির প্রসঙ্গ, 'আলাদা ভ্যারিয়েশন বলতে আমি নরমালি যা করি সেটাই করছি। আর ভেট্টোরি যা দেখিয়েছেন, তার সঙ্গে যেগুলো নিয়ে কাজ করেছি, সেগুলোই ম্যাচে করার চেষ্টা করছি।’

আমিনুলের বোলিং একটু খেয়াল করলেই বোঝা যায়, মাঝে-মধ্যেই জোরের ওপর ছাড়েন। প্রথাগত বাঁক ছাড়াও জোরের ওপর টপ স্পিন করতেও দেখা যায়। তবে লেগ স্পিনার হাত থেকে আর্ম বল খুব বেশি দেখা যায় না। ২০ বছর বয়সী এ স্পিনার এ অস্ত্র টাই যোগ করেছেন তার ভান্ডারে, ‘নির্দিষ্ট করে বললে আর্ম বলটা। লেগ স্পিনের মধ্যে একটা ভ্যারিয়েশন হিসেবে আমি এটা যোগ করেছি। আর্ম বলটা করি আরকি। টপ স্পিনটাও করছি।’

ঘরোয়া ক্রিকেটে মূলত ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত ছিলেন আমিনুল। বোলিং করতেন অল্পবিস্তর। সেটাও নেটে। আমিনুল তাহলে আগের ব্যাটসম্যান পরিচয়টা কি ভুলে গেছেন? খুলনার দুটি ম্যাচে অবশ্য তাঁর ব্যাট করতে নামার দরকার পড়েনি। কিন্তু আমিনুল জানালেন ব্যাটিংটা তিনি ভোলেননি। নিজেকে অলরাউন্ডার হিসেবেই তৈরি করছেন তিনি, ‘অনেকে ভাবে আমি হয়তো বা এইচপি (হাই পারফরম্যান্স) থেকে বোলিং করা শুরু করি। আসলে তা না। ছোটবেলা থেকেই বোলিং করি। তবে প্রথম পছন্দ হিসেবে ওটা আসেনি। আমি অলরাউন্ডার হিসেবেই নিজেকে তৈরি করতে চাই। এর মধ্য দিয়েই এগোতে চাই। আমি ব্যাটিংয়ে সময় রাখতে চাই আর কোচিং স্টাফও সময় দিচ্ছে।’

আজ নেটে রবি ফ্রাইলিঙ্কের কাছ থেকেও ব্যাটিংয়ের টিপস নিয়েছেন আমিনুল। বড় শট নেওয়ার জন্য পজিশন ও ব্যাট সুইংটা ভালো হওয়া জরুরি বলে আমিনুলকে টিপস দিয়েছেন ফ্রাইলিঙ্ক।