>টি-টোয়েন্টিতে রশিদের ৪ ওভার খেলতে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের কত হিসাব-নিকাশ করতে হয়। অথচ আজ তাঁকে কিনা কী স্বচ্ছন্দে খেলছেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। প্রথম টেস্ট উইকেট পেতে তাঁকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১২৩ বল।
অবশেষে উইকেট পেলেন রশিদ খান। উইকেটটা পেতে তাঁকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১২৩ বল, আর ১০৯ রান। রশিদের মুখে হাসি ফুটেছে রিভিউ নিয়ে। পেছনের পায়ে ফ্লিকটা ঠিকঠাক করতে পারেননি অজিঙ্কা রাহানে। ভারতের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ককে এলবিডব্লু করে অবশেষে হাসতে পারলেন রশিদ। সেটির চেয়ে রশিদের স্বস্তি, লজ্জার একটা রেকর্ড অন্তত এড়ানো গেছে। বেঙ্গালুরু টেস্টের প্রথম দিনে ২৫ ওভারে দিয়েছেন ১১৮ রান, ওই একটাই উইকেট।
টি-টোয়েন্টিতে যে বোলার অধিনায়কের প্রধান অস্ত্র, তাঁকেই কিনা আজ বোলিং আক্রমণে আনতে কখনো কখনো বেশ ভাবতে হয়েছে আসগর স্টানিকজাইকে। সকালের দুই সেশনে নির্বিষ বোলিং করে গেছেন ওভারের পর ওভার। আফগানরা অপেক্ষায় ছিলেন নিজেদের অভিষেক টেস্টে জাদু দেখাবেন রশিদ। সেটি এখনো পুরোপুরি দেখা যায়নি। একটা সময় তো টেস্ট অভিষেকে সবচেয়ে বাজে বোলিংয়ের রেকর্ডও চোখ রাঙিয়েছে তাঁকে।
টেস্ট অভিষেকে সবচেয়ে বাজে বোলিংয়ের রেকর্ড আদিল রশিদের। ২০১৫ সালের অক্টোবরে আবুধাবি টেস্টে নিজের অভিষেকে ১৬৩ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। এই তালিকায় দুইয়ে আছেন ব্রাইস ম্যাকগেইন। ২০০৯ সালের ১৯ মার্চ কেপটাউন টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৪৯ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন ম্যাকগেইন। ম্যাকগেইন-আদিলের বড় মিল কোথায় জানেন? দুজনই লেগ স্পিনার! মজাটা হচ্ছে, বাজে বোলিংয়ের এই রেকর্ড যাঁকে ‘ধাওয়া’ করেছে, রশিদও একজন লেগ স্পিনার। যেনতেন লেগ স্পিনার নন, বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত!
টি-টোয়েন্টিতে রশিদের ৪ ওভার খেলতে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের কত হিসাব-নিকাশ করতে হয়। অথচ আজ তাঁকে কী স্বচ্ছন্দে খেলছেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। ১৮তম ওভারে এসে প্রথম মেডেন পেয়েছেন রশিদ। রশিদকে একটা পর্যায়ে পাড়ার বোলারে নামিয়ে এনেছিলেন শিখর ধাওয়ান। রশিদ-মুজিবকে মনের সুখ মিটিয়ে পিটিয়ে লাঞ্চের আগে সেঞ্চুরি করে রেকর্ড বইয়ে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন ভারতীয় ওপেনার।
এখনো পর্যন্ত ১১৫ রান দিয়ে রশিদ পেয়েছেন ১ উইকেট। ইকোনমি একটা সময় সাতের ওপর ছিল। সেটি নেমে এসেছে ছয়ের নিচে, এতটুকুই তাঁর প্রাপ্তি!
ভারতের দুই ওপেনারের সেঞ্চুরির পর তিনে নামা কে এল রাহুলের ফিফটি। এরপর মিডল অর্ডার দাঁড়াতে পারেনি। জোড়ায় জোড়ায় দুবার উইকেট হারিয়েছে। ২৮০ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের ৪ রান পর পড়েছে তৃতীয় উইকেট। ৩১৮ রানে চতুর্থ উইকেট পড়ার ১০ রান পর পড়েছে পঞ্চম উইকেট। ৬ রান পর রান আউটের খাঁড়ায় বিদায় নিয়েছেন দিনেশ কার্তিক। ৬ উইকেটে ৩৩৪ রান করেছে ভারত।
টেস্ট অভিষেকে উইকেটশূন্য থেকে রান হজম
বোলার | ওভার | রান | প্রতিপক্ষ | ভেন্যু | সাল |
আদিল রশিদ (ইংল্যান্ড) | ৩৪ | ১৬৩ | পাকিস্তান | আবুধাবি | ২০১৫ |
ব্রাইস ম্যাকগেইন (অস্ট্রেলিয়া) | ১৮ | ১৪৯ | দ. আফ্রিকা | কেপ টাউন | ২০০৯ |
পঙ্কজ সিং (ভারত) | ৩৭ | ১৪৬ | ইংল্যান্ড | সাউদাম্পটন | ২০১৪ |
জন ওয়ার (ইংল্যান্ড) | ৩৬ | ১৪২ | অস্ট্রেলিয়া | সিডনি | ১৯৫১ |
তাওয়ান্দা মুপারিওয়া (জিম্বা.) | ৩৪ | ১৩৬ | শ্রীলঙ্কা | বুলাওয়ে | ২০০৪ |
বাপু নাদকার্নি (ভারত) | ৫৪ | ১৩২ | নিউজিল্যান্ড | দিল্লি | ১৯৫৫ |
সোহেল খান (পাকিস্তান) | ২১ | ১৩১ | শ্রীলঙ্কা | করাচি | ২০০৯ |
সুলেমান বেন (উইন্ডিজ) | ৪০ | ১২০ | শ্রীলঙ্কা | গায়ানা | ২০০৮ |
গাবি অ্যালেন (ইংল্যান্ড) | ৩৪ | ১১৫ | অস্ট্রেলিয়া | লর্ডস | ১৯৩০ |
ক্লাইড বাটস (উইন্ডিজ) | ৪৭ | ১১৩ | নিউজিল্যান্ড | গায়ানা | ১৯৮৫ |