প্রশ্নটার উত্তরে তাঁর প্রথম কথায়ই সংবাদ সম্মেলনে এক দফা হাসি। সংবাদ সম্মেলনে তার আগে চার-পাঁচটি প্রশ্ন হয়ে গেছে। এরপর প্রশ্নটা শুনে মুশফিকুর রহিম বললেন, ‘আমি তো ভেবেছিলাম প্রথম প্রশ্নই এটা হবে!’
প্রশ্নটা রিভার্স সুইপ নিয়ে।
মুশফিকের শক্তির জায়গা থেকে গত কিছুদিনে মুশফিকের ‘অ্যাকিলিস হিল’ই হয়ে গিয়েছিল শটটা। রানের চাপে পড়লেই রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে কতবার যে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন মুশফিক, তার হিসাব নেই।
আজ অবশ্য রিভার্স নয়, সাধারণ সুইপ করতে গিয়েই আউট হয়েছেন। মুশফিকের সেঞ্চুরি রাঙানো, বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৫ হাজার রানের মাইলফলক পেরোনোর দিনেও তাই প্রশ্ন হলো এই সুইপের প্রবণতা নিয়ে।
এটা আমার খুব পছন্দের শট, একই সঙ্গে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ শটও। তবুও আমি ভবিষ্যতে এই শট খেলা থেকে বিরত থাকব না।রিভার্স সুইপ নিয়ে মুশফিকুর রহিম
তাতে মুশফিকের উত্তরের শুরুতেই সংবাদ সম্মেলনকক্ষে হাসির রোল! এরপর ক্রিকেটীয় ব্যাখ্যা, অতীতের উদাহরণের পর মুশফিকের কণ্ঠে থাকল ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতিও—এই শট খেলা কখনো বন্ধ করবেন না মুশফিক।
প্রথমে ক্রিকেটীয় ব্যাখ্যায় থাকল চট্টগ্রামের উইকেটের প্রসঙ্গ। এই উইকেটে সুইপ-রিভার্স সুইপের মতো শটের দরকারই পড়ে না বলে জানালেন মুশফিক, ‘যেসব উইকেটে ডিফেন্স করে টিকতে পারবেন সেখানে তো আর অন্য শট খেলার প্রশ্নই ওঠে না। আমি মনে করি এটা খুব ভালো উইকেট এবং ব্যাটিংবান্ধব উইকেট। এখানে যদি ডিফেন্স ভালো করেন তাহলে সোজা ব্যাটেই ভালো খেলা যায়, অন্য শট দরকার হয় না।’
দ্বিতীয় পর্বে থাকল অতীতচারণা। তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের দুই দ্বিশতকের উদাহরণ টেনে মুশফিকের কথাগুলোতে একটু ঝাঁজ খুঁজে পেলেও পেতে পারেন, ‘আর একটা জিনিস বলি, আমি কিন্তু আমার দুটি ডাবল সেঞ্চুরিতে রিভার্স শট সফলভাবে খেলেছি। এটা একটু বলে রাখতে চাই। ওই দুটো ডাবল সেঞ্চুরির ভিডিও যদি কারও কাছে থাকে দেখবেন ওই দুটো দুই শ–তে তিন–চারটা রিভার্স সুইপ আছে।’
আর শেষে মুশফিকের কণ্ঠে ভবিষ্যৎ নিয়ে একটা হুঁশিয়ারি। তাঁর রিভার্স সুইপে বারবার আউট হওয়া নিয়ে তো সব সময়ই কথা ওঠে, সেসব মনে থেকে যাওয়াতেই কি না, আজ কীর্তি গড়ার দিনে মুশফিকের একটুখানি অভিমান থাকল। সঙ্গে ভবিষ্যদ্বাণীও, ‘নিশ্চিতভাবে আমি মনে করি এটা আমার খুব পছন্দের শট, একই সঙ্গে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ শটও। তবুও আমি ভবিষ্যতে এই শট খেলা থেকে বিরত থাকব না।’