রংপুর রাইডার্সের হয়ে ছয় ম্যাচের চুক্তিতে বিপিএলে খেলতে এসেছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। দলটির হয়ে আজই ছিল তাঁর শেষ ম্যাচ
দরজায় কড়া নাড়ছে ভালোবাসা দিবস। আর এবি ডি ভিলিয়ার্স কি না, খিড়কি খুলে চলে গেলেন! বিরহে ডোবালেন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের। আরও দুঃখের ব্যাপার, ভালোবাসা দিবসে তাঁর মন পাবে পাকিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমীরা!
জনাব ‘৩৬০ ডিগ্রি’কে বিশ্বাসঘাতক ভাবার আগে পুরো ব্যাপারটি শুনুন। বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের সঙ্গে ৬ ম্যাচের চুক্তিতে এসেছিলেন এই প্রোটিয়া, সেটি তো আগেই জানা। আজ কুমিল্লা-রংপুর ম্যাচটি দিয়ে শেষ তাঁর এই ছয় ম্যাচের কোটা। অর্থাৎ, চুক্তি অনুযায়ী বিপিএলে এটাই ছিল ডি ভিলিয়ার্সের শেষ ম্যাচ। শেষ চারে খেলবেন কি না, তা এখনো জানা যায়নি। বিপিএল থেকে উড়াল দিয়ে ডি ভিলিয়ার্স যাবেন দুবাইয়ে। সেখানে ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল)। আর উদ্বোধনী দিনেই মাঠে নামবে তাঁর দল লাহোর কালান্দার্স। এবার বোঝা গেল?
পেশাদার ক্রিকেটাররা এমনই। নুন খাই যায় গুণ গাই তার। বাংলাদেশে এসে ক্রিকেটপ্রেমীদের রোমাঞ্চিত করেছেন ডি ভিলিয়ার্স। প্রশংসাও করেছেন বিপিএল আর দর্শকদের। পিএসএলেও নিশ্চয়ই এমন কথাই বলবেন তিনি। রংপুর সমর্থকেরা তা জানেন। তারপরও মন মানছে? ডি ভিলিয়ার্সের জন্য যে তাঁদের বিরহ দহন লাগছে!
কেন-ই বা লাগবে না? ডি ভিলিয়ার্স এবার বিপিএলে মাঠে নামার আগে ধুঁকছিল পয়েন্ট তালিকার ছয়ে। আজ রংপুরের হয়ে ছয় নম্বর ম্যাচটি খেলার পর দলটির অবস্থান কোথায়? শেষ চারে। একটু কম বলা হলো। গ্রুপপর্বের প্রথম ছয় ম্যাচ শেষে রংপুর ছিল ছয়ে। আর ডি ভিলিয়ার্সকে নিয়ে বাকি ছয় ম্যাচ সহ মোট ১২ ম্যাচ শেষে সেই রংপুর-ই পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে! ডি ভিলিয়ার্সকে উড়িয়ে এনে রংপুর তো ভাবতেই পারে, টাকাটা জলে যায়নি। বরং পারফরম্যান্সের মণি-মুক্তো হয়ে উঠে এসেছে।
সেই মণি-মুক্তো তুলতে গিয়েও ডি ভিলিয়ার্স একটা বৃত্ত পূরণ করে গেছেন। শুরু করেছিলেন ৩৪ রান দিয়ে থামলেনও সেই ৩৪ রানেই। এ জন্য কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসকে দোষ দিতে পারেন রংপুরের ভক্তরা। কুমিল্লা আজ আরেকটু বেশি রান করলে তো ডি ভিলিয়ার্সকে আরেকটু বেশি সময়ের জন্য ব্যাটিং করতে দেখা যেত। অথচ, বেরসিক কুমিল্লা কি না ৭২ রানে অলআউট! এই ম্যাচ জেতাতে গিয়ে ডি ভিলিয়ার্স অপরাজিত ছিলেন ৩৪ রানে। তার আগের পাঁচ ম্যাচে তাঁর স্কোরগুলো দেখুন—৩৭, ১০০*, ১, ৪১, ৩৪।
রংপুর এই ছয় ম্যাচেই জিতেছে। শীর্ষ রান সংগ্রাহকের তালিকায় অন্যান্য ব্যাটসম্যানেরা যেখানে ১১ কিংবা ১২ ম্যাচ করে খেলেছেন সেখানে এই প্রোটিয়া মাত্র ৬ ম্যাচেই উঠে এসেছেন শীর্ষ পনেরোয়। এই শীর্ষ পনেরোজনের মধ্যে ব্যাটিং গড়ে ডি ভিলিয়ার্সের (৬১.৭৫) চেয়ে এগিয়ে শুধু শীর্ষস্থানীয় রাইলি রুশো (৮৫.৬৬)। স্ট্রাইক রেটে (১৬৮.০২) অবশ্য টেক্কা দিয়েছেন বাকি ১৪জনকে। আর এই পনেরো ব্যাটসম্যানের মধ্যে সেঞ্চুরি করা তিনজনের একজনও ডি ভিলিয়ার্স।
শুধু রংপুর সমর্থক কেন, বিপিএল সমর্থকদের ডি ভিলিয়ার্সের জন্য তাই মন পুড়বে না কেন?