১৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৭। জোহানেসবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা। সেদিন টি-টোয়েন্টি সংস্করণে মাত্র তিনটি ম্যাচের অভিজ্ঞতা সম্বল করে বাংলাদেশ খেলতে নেমেছিল বিশ্বকাপে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছিল প্রতিপক্ষ। প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশ জিতেছিল।
আগে ব্যাটিং করা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৬৫ রান তাড়া করতে নেমে ব্যাটিং পাওয়ারপ্লেতেই ২ উইকেটে ৬০ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ। চার ওভারের মাথায় দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও নাজিমুদ্দিন আউট। কিন্তু অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল আর আফতাব আহমেদ ক্যারিবীয় বোলারদের চোখে চোখ রেখেই লড়াইটা জারি রেখেছিলেন।
শর্ট বলে পুল শট। কখনো লফটেড কাভার ড্রাইভ। স্লগিং। স্টাম্প ধেয়ে আসা ফুল লেন্থের বলে স্কুপ। স্লোয়ার বলে অন ড্রাইভ। তখন দশ ওভারের ক্রিকেট টি-টেনের প্রচলন সে সময় ছিল না। যদি থাকত তাহলে আশরাফুল আর আফতাবের ব্যাটিংকে সে সংস্করণের আদর্শই ভাবা যেত।
দুজনের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশ দলকে ১৬৫ রান ১৫ ওভারে তাড়া করতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি জিতে যায় দুই ওভার বাকি থাকতেই—৬ উইকেটে। আশরাফুল ২৭ বলে ৬১ রান করে আউট হয়েছিলেন, ৪৯ বলে ৬২ রান করে অপরাজিত ছিলেন আফতাব। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের মূল পর্বে সেটিই বাংলাদেশ দলের একমাত্র জয়।
স্মৃতিচারণা থাক। দৃষ্টি ফেরাই এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ২৯ অক্টোবর, ২০২১, শারজা, সংযুক্ত আরব আমিরাত...
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৪৩ রান তাড়া করছে বাংলাদেশ দল। দুই ওপেনারের উইকেট হারিয়ে পাওয়ারপ্লে শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৯। জয়ের খুব কাছে গিয়েও ম্যাচটা হারল বাংলাদেশ, মাত্র ৩ রানে।
২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই ম্যাচ, আর ২৯ অক্টোবর ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ। দুটি ম্যাচেই খেলেছেন ক্রিস গেইল, ডোয়াইন ব্রাভো ও রবি রামপল। বাংলাদেশ দলেও দুই ম্যাচেই ছিলেন সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ ২০০৭ সালের সেদিন যে মেজাজে টি-টোয়েন্টি খেলেছিল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলেছিল ঠিক উল্টো মেজাজে। সেদিন ক্যারিবীয় দলে ছিলেন শিবনারায়ণ চন্দরপাল, ডেভন স্মিথ, রাম নরেশ সারওয়ানের মতো ধরে খেলা ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশ দলটা ছিল সম্পূর্ণ তরুণ। উইকেটে এসেই তাঁরা মারা শুরু করতেন। আউট হলে আউট।
সময়ের আবর্তে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে। দুবার টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপও জিতেছে। ক্রিস গেইল, ডোয়াইন ব্রাভোরা পরিণত হয়েছেন টি–টোয়েন্টির বড় তারকায়। আর বাংলাদেশ ঢুকে গেছে খোলসে। টি–টোয়েন্টি সংস্করণের শুরুতে অনেকেই মনে করতেন, ‘আউট হলে আউট’ মানসিকতার কারণে এটিতে খুব ভালো করবে বাংলাদেশ। কিন্তু হয়েছে উল্টোটা। টেস্ট দুর্বলতার জায়গা সব সময়ই, কিন্তু টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে বিরক্তিকর একটা দলে। সেই নব্বইয়ের দশকের মানসিকতায় আর যা–ই হোক টি–টোয়েন্টি চলে না। সেই ‘ধরে খেলা’, ‘উইকেট হাতে রেখে খেলা’, ‘শেষ কয়েক ওভারে না হয় মারা যাবে’—এ ধরনের চিন্তাভাবনাই এখন টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পরিকল্পনা।
টি–টোয়েন্টিতে অন্য দলগুলোর ভাবনা পুরোপুরি উল্টো। বড় দলগুলোর কথা না হয় বাদই দেওয়া গেল। আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, এমনকি নামিবিয়ার মতো দলও অনেক ইতিবাচক। এই দলগুলোর কেউই হারার আগে হেরে বসে না। অথচ বাংলাদেশ দলকে দেখলে মনে হয় কেমন যেন দ্বিধান্বিত একটা দল। টি–টোয়েন্টিতে ব্যাটিং কেমন করতে হবে, এ নিয়ে বিভ্রান্তিতে গোটা দল।
একসময় বিসিবির হাই পারফরম্যান্স বিভাগের কোচ ছিলেন সাইমন হেলমট। তিনি এখন বিশ্বের বিভিন্ন টি–টোয়েন্টি লিগে কাজ করেন। আইপিএল, বিগ ব্যাশ, সিপিএল থেকে নিয়মিতই ডাক আসে তাঁর। এই সাইমনই বাংলাদেশে থাকার সময় ক্রিকেটারদের বলতেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে প্রতি বলের হিসাবটা ছক্কা থেকে শুরু হয়। ছক্কা না হলে চার, এরপর তিন, দুই, এক। এখনকার টি-টোয়েন্টির মানসিকতা এমনই। ১২০ বলের খেলায় উইকেটের গুরুত্ব নগণ্য। উইকেটে এসেই মারা শুরু করতে হবে।’
কিন্তু বাংলাদেশের উইকেটে টি–টোয়েন্টি খেললে, কেউই উইকেটে এসে মারতে পারবেন না। এ দেশের উইকেট মারতে দেবে না। মিরপুরের উইকেটের বাউন্স নাকি এতটাই অসম যে খেলোয়াড়েরা বলেন দুই ম্যাচ খেললেই নাকি তাঁদের ব্যাট ভেঙে যায়। তাঁরা খেলেন একদিকে, বল যায় আরেক দিকে। ব্যাটসম্যানরা নিজেরাও জানেন না, কখন কী হবে। একবার দেশের এক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার বলেছিলেন, ‘এভাবে ব্যাটিংয়ের উন্নতি হয় না। ভারতে দেখবেন উইকেট ফ্ল্যাট হলে আসলেই ফ্ল্যাট। ব্যাটসম্যানরা খেলেও সেভাবে। যে বল যেভাবে খেলা দরকার, সেভাবেই চালিয়ে খেলে ওরা। যদি গুগলি করে গুগলির মতোই শট খেলে। আমাদের উইকেটে গুগলি খেলতে গেলে বল যায় কাভারে। আমরা শট খেলব কি খেলব না, এই দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকি। কারণ, আমরা খেলিই তেমন উইকেটে।’
উইকেটের কারণে মেরে খেলার সাহস, অভ্যাস কিছুই তৈরি হয় না। বিষয়টি অনেকটা শট খেলার সামর্থ্যে ডান্ডা–বেড়ি পরিয়ে দেওয়ার মতো। ঘরোয়া ক্রিকেট আর ঘরের মাঠের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যখন বছরের পর বছর এমন উইকেটে খেলা হয়, শট খেলা নিয়ে দোটানার জন্ম হয় সেখানেই। সেটিই হয়ে যায় অভ্যাস। বিশ্বকাপ দলে থাকা এক ব্যাটসম্যান যেমন বলছিলেন, ‘আমি বাংলাদেশে ১১০-১২০ স্ট্রাইক রেটে খেলতে পারলেই হলো। এখানে এটাই চলে।’
বাংলাদেশে আরও একটা জিনিসের চল আছে। দল নির্বাচনও হয় টি-টোয়েন্টির আধুনিক ধারণার বিরুদ্ধে গিয়ে। দল নির্বাচনের আগে যেকোনো ঘরোয়া টুর্নামেন্ট শেষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকাটা দেখে নেন নির্বাচকেরা। কে কত গড়ে রান করলেন, সেটিই গুরুত্বপূর্ণ। কে ম্যাচের কোন অবস্থায় কত স্ট্রাইক রেটে রান করলেন, সেটি মুখ্য নয়। ক্রিকেটাররাও বিষয়টি জানেন। তাঁরাও স্ট্রাইক রেট বিসর্জন দিয়ে সেরা পাঁচ রান সংগ্রাহকের তালিকায় থাকতে চান। কারণ, জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার মানদণ্ড তো সর্বোচ্চ রান করা, সেই রান ব্যাটসম্যানরা স্বার্থপরের মতো খেলে করেছেন কি না, তাতেই তো নজর দেওয়া হয় না।
যেকোনো ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে টি-টোয়েন্টি খেলতে ফাস্ট বোলিং, সুইং বোলিং ও লেগ স্পিন দরকার। মন্থর উইকেটে মিডিয়াম পেস ও ফিঙ্গার স্পিন হলেই চলে। বাংলাদেশে যার অভাব নেই। ভালো জায়গায় বল করে গেলেই হয়। বাকি কাজটা তো উইকেটই করে দিচ্ছে! তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেন ছাড়া ধারাবাহিকভাবে ১৪০ কিলোমিটারের বেশি বেগে বল করেন না কেউই।
অফ স্পিনার, বাঁ হাতি স্পিনাররা উইকেট থেকে টার্ন পাওয়ায় লেগ স্পিনারের আর দরকার হয় না। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এমন উদাহরণের অভাব ছিল না। ক্লাবের ভাবনা অনেকটা এমন ছিল যে লেগ স্পিনার খেলিয়ে ঝুঁকি নিয়ে কী লাভ! ফিঙ্গার স্পিনাররাই তো কাজ করে দিচ্ছে। লেগ স্পিন করিয়ে শুধু শুধু বাড়তি রান খরচের ঝুঁকি নেওয়ার–ই বা কী দরকার, অফ স্পিন ও বাঁহাতি স্পিনই বরং নিরাপদ। রানও কম দেয়, উইকেটও নেয়। এই ধাঁচের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট পৃথিবীর কোথাও হয় না। টি-টোয়েন্টির সঙ্গে যে ‘নিরাপদ’ শব্দটাই যায় না। বাংলাদেশের ঘরোয়া লিগে টি–টোয়েন্টি খেলা হয় নিজেদের ‘নিরাপদ’ করে।
‘ব্যাটিং পাওয়ারপ্লেতে ধরে খেলি। পরে পুষিয়ে দেব’—বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানদের এসব ভ্রান্ত ধারণার জন্ম হয়েছে এভাবেই। কারণ, শুরুতে ধরে খেলে পরে আর পুষিয়ে দিতে দেখা যায় না বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানদের। টি-টোয়েন্টি অনেকটা ফ্যাশনের মতো। সময়ের সঙ্গে ফ্যাশন যেমন বদলাতে থাকে, টি-টোয়েন্টির ছকও তেমন বদলাতে থাকে। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টির চলমান ফ্যাশন থেকে অনেক দূরে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ‘ম্যাচ-আপ’ এখন অনেক বড় আলোচনা। অন্যান্য দলের মতো বাংলাদেশও ‘ম্যাচ-আপ’ ধরে টি-টোয়েন্টি খেলার চেষ্টা করে। বাঁহাতি-ডানহাতি সমন্বয়ের কারণ সেটিই। কিন্তু ‘ম্যাচ-আপ’ ধরতে গিয়ে মাঝেমধ্যে ম্যাচের অবস্থা ভুলে যায় বাংলাদেশ। তখন মনে হয়, মাহমুদউল্লাহ বা কোচ রাসেল ডমিঙ্গো নয়, খেলাটা চালাচ্ছেন বাংলাদেশ দলের কম্পিউটার অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরন।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রতিনিয়ত ব্যাটসম্যানরা বদলায়। এক জায়গায় দুর্বলতা থাকলে সেটি নিয়ে কাজ করে নিজেকে বদলে ফেলেন। বোলারদের ক্ষেত্রেও গল্পটা একই। বেসবলে এসব ঘটনা সব সময়ই হয়। ক্রিকেটে আগে এসব ছিল না, কারণ ক্রিকেটে বিশ্লেষণ ছিল না। এখন এক মৌসুমে একজন ব্যাটসম্যান একধরনের শট খেলে সফল হলেই যে পরের মৌসুমে হবেন, ব্যাপারটা তা নয়। এক মৌসুমে ইয়র্কার কার্যকর মনে হলেও পরের মৌসুমে সেটি তেমন কার্যকর না–ও হতে পারে। খেলাটা প্রতিনিয়ত এভাবেই বদলে যাচ্ছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এমন জোয়ার–ভাটার সঙ্গে বাংলাদেশ দল পাল্লা দিতে পারছে কি না, সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে।
তা না হলে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং লাইনআপে এত ‘ধরে খেলা’র ব্যাটসম্যান থাকবে কেন? যেকোনো টি-টোয়েন্টি দলে ধরে খেলার ক্রিকেটার দরকার। ব্যাটিং অর্ডারে যার জায়গা হবে চার নম্বরে। যেখান থেকে তিনি খেলাটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন, যদি দল বিপদে পড়ে। যদি বোলাররা সিম, সুইং, স্পিন পেয়ে থাকে, ওপরের সারির তিন ব্যাটসম্যান দ্রুত আউট হয়ে যায়, তখন চার নম্বর ব্যাটসম্যান এসে হাল ধরবে। অস্ট্রেলিয়া যেমন স্টিভ স্মিথকে এই দায়িত্বে খেলাচ্ছে। নিউজিল্যান্ডে কেন উইলিয়ামসন, ভারতে বিরাট কোহলি এই দায়িত্বেই খেলে থাকেন। তাঁদের আশপাশে থাকে একঝাঁক মারকাটারি ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশ দলের টপ অর্ডারে এ মুহূর্তে সবাই যেন ধরে খেলার দায়িত্ব পালন করেন। দ্রুত রান করার ব্যাটসম্যান দলে একজনও নেই।
দলের মূল ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেটই তাঁর প্রমাণ। সাকিব আল হাসান (১২০), মাহমুদউল্লাহ (১১৯), মুশফিকুর রহিম (১১৫) ও তামিম ইকবালদের (১১৬) কেউই ১২০ স্ট্রাইক রেটের ওপরে রান করেন না। অথচ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ক্রিকেটের শুরুর তারকাদের স্ট্রাইক রেট ছিল আরও বেশি। আশরাফুলের কথাই যদি ধরি, বাংলাদেশ হয়ে ২৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ শেষে আশরাফুল স্ট্রাইক রেট ১২৬.৪০। আফতাব খেলেছেন ১১ ম্যাচ, তাঁর স্ট্রাইক রেট ১২৮.০৮।
এ তো গেল এক প্রজন্মের কথা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মূল শঙ্কার কারণ নতুন প্রজন্মের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং ধরন। লিটন দাস যেমন এক বছর আগেও ১৪০ স্ট্রাইক রেটে খেলতেন। লিটনের আগ্রাসী ব্যাটিং বাংলাদেশ দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর শ্রীলঙ্কার নিদাহাস ট্রফিতে ইতিহাস গড়া জয় পেয়েছিল। সেই লিটন এখন রান করেন ১২০-১২৫ স্ট্রাইক রেটে। তাঁর ধরে খেলার কারণে বাংলাদেশ দল আগে যা একটু পাওয়ারপ্লেতে রান পেত, সেটিও পাচ্ছে না। লিটনও যে ধরে খেলে পরে পুষিয়ে দেওয়ার মন্ত্র জপা শুরু করেছেন। সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ নাঈমরাও একই পথে হাঁটছেন। ঝুঁকি না নিয়ে ৬-৭ রান রেটের ওয়ানডে মেজাজে টি-টোয়েন্টি খেলে বড় মঞ্চে ভালো করা যায় না, সেটি এবারের বিশ্বকাপেই খুব বাজেভাবে প্রমাণ হয়ে গেছে।
বাংলাদেশের উল্টো ঢঙে খেলে আফগানিস্তান ভীতি ছড়াচ্ছে বড় বড় দলের মনে। কি সুইং, কি গতি, কি স্পিন—ক্রিজে যে–ই আসছেন সে–ই খেলছেন মারকুটে ক্রিকেট। আফগানিস্তানের ব্যাটিংয়ের সময় টিভি পর্দা থেকে যেন চোখ সরানোই দায়। বাংলাদেশ ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যেমন ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলত, আফগানরা এবার যেন সেই ধাঁচের ক্রিকেটই খেলছে। তাদের ব্যাটসম্যানরাও পিএসএল, সিপিএল, টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে সুযোগ পাচ্ছেন। আমাদের ব্যাটসম্যানরা দিন দিন হচ্ছেন খোলসবন্দী।
খোলনলচে না পাল্টালে, প্রক্রিয়াটা ঠিক না করলে, ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেদের ভাবনা না বদলালে টি–টোয়েন্টি চিরদিনই বাংলাদেশের ক্রিকেটের বড় ‘দুঃখ’ হয়েই রয়ে যাবে।