প্রতিটি বিশ্বকাপেই দলগুলো যায় নিজেদের সর্বোচ্চ সাফল্য অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে। কিন্তু কোনো কোনো দলের জন্য বিশ্বকাপ এমনই ‘অভিশপ্ত’ হয়ে ওঠে। কখনো কখনো এক বিশ্বকাপে সে রেশ কাটে না, একাধিক বিশ্বকাপেও জয়বঞ্চিত থাকতে হয় তাদের। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি সময় জয়বঞ্চিত থাকা দলগুলো নিয়ে ফিরে দেখা বিশ্বকাপের অষ্টম পর্ব
বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের অভিষেকটা হয়েছিল স্বপ্নের মতো। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে প্রথমবার অংশ নিয়ে প্রথম ম্যাচেই ১৩ রানে হারিয়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে। কিন্তু বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় জয়টা পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে তাদের, এটা কে ভাবতে পেরেছিল!
১৯৮৩ এর পর ১৯৯২—মাঝে কেটেছে ৯টি বছর। বিশ্বকাপে প্রথম জয়ের পর দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেতে ৯ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল দলটিকে। ম্যাচের হিসাব করলে প্রথম ও দ্বিতীয় ম্যাচ জেতার মাঝে মোট ১৮টি ম্যাচ একটানা হেরেছে জিম্বাবুয়ে! বিশ্বকাপে একটানা সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হারার রেকর্ড এটিই।
এই ১৮ ম্যাচের মধ্যে দুবার জেতার সম্ভাবনা তৈরি করেও জেতা হয়নি জিম্বাবুয়ের। প্রথমটি ১৯৮৩ বিশ্বকাপেই, ভারতের বিপক্ষে। মাত্র ১৭ রানে ভারতের ৫ উইকেট তুলে নিলেও কপিল দেবের অপরাজিত ১৭৫ রানের অসাধারণ ইনিংসের কাছে হার মানতে হয়েছিল জিম্বাবুয়েকে। আর দ্বিতীয়টি ১৯৯২ বিশ্বকাপে। অভিষিক্ত অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩১২ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েও হারতে হয়েছিল তাদের।
পরাজয়ের এই গেরো ১৯৯২ বিশ্বকাপেই খুলতে সমর্থ হয়েছিল আফ্রিকার দেশটি। অবশ্য প্রথম ইনিংস শেষে কেউই ভাবতে পারেননি, এই ম্যাচে জয়ী দলের নাম হবে জিম্বাবুয়ে। আগে ব্যাট করতে নেমে ইংলিশ বোলারদের সম্মিলিত তোপের মুখে পড়ে মাত্র ১৩৪ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল তারা। কিন্তু এডো ব্র্যান্ডেসের অসাধারণ বোলিংয়ে (১০-৪-২১-৪) সেই লো স্কোরিং ম্যাচে ইংলিশদের ৯ রানে হারিয়ে দেয় জিম্বাবুয়ে। এই জয় দিয়েই টানা ১৮ ম্যাচ হারার ধারাবাহিকতায় ছেদ টেনেছিল দলটি।
টানা সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হারের রেকর্ডে জিম্বাবুয়ের পরের স্থানটি স্কটল্যান্ডের। তবে একদিক থেকে স্কটল্যান্ডের রেকর্ডটিও অনন্য। ৩টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে মোট ১৪টি ম্যাচ খেলে সব কটিতেই হেরেছে তারা! বিশ্বকাপে একটিও জয় না পেয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হারের রেকর্ড এটি।
টানা ১১ ম্যাচ হেরে তালিকার পরের স্থানে আছে কানাডা। ২০০৩ বিশ্বকাপে কিংসমিডে বাংলাদেশকে ৬০ রানে হারানোর পর থেকে শুরু করে টানা ১১টি ম্যাচ হেরেছিল দলটি। অবশেষে ২০১১ বিশ্বকাপে দিল্লিতে কেনিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় জয় পেয়েছিল তারা। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে এই দুটি ম্যাচই জিততে পেরেছে কানাডা।
কানাডার পরের স্থানটিতে আছে হল্যান্ড। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দলটি হেরেছিল নিজেদের প্রথম ১০ ম্যাচেই। একাদশ ম্যাচে এসে নামিবিয়াকে ৬৪ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম জয়ের স্বাদ পেয়েছিল তারা। এরপর আর একটিই ম্যাচ জিততে পেরেছে তারা, ২০০৭ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডকে হারিয়েছিল ৮ উইকেটে।
একসময়ের সমীহ জাগানিয়া দল কেনিয়ার শক্তি খর্ব হয়েছে অনেক বছর আগেই। সেটির প্রতিফলন পড়েছে রেকর্ডেও। সবশেষ ২০১১ বিশ্বকাপের মূল পর্বে অংশ নেওয়া দলটি বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ৮ ম্যাচের প্রতিটিতেই হেরেছে।
আরও পড়ুন...