>আইপিএলের শুরুতে মুম্বাইয়ের একাদশে নিয়মিত ছিলেন মোস্তাফিজ। দল হেরেছে। একাদশ থেকে বাদ পড়ার পরপরই দল জেতা শুরু করল। দুর্ভাগ্যই বলতে হবে বাংলাদেশি পেসারের। জয়ের ধারায় থেকে মুম্বাই পেস বোলিংয়ে পরিবর্তন আনবে—এমন সম্ভাবনা ক্ষীণই।
হার, হার, হার, জয়, হার, হার—মোস্তাফিজুর রহমান যে ছয়টি ম্যাচ খেলেছেন, মুম্বাই ইন্ডিয়ানস জিতেছে মাত্র একটি। মোস্তাফিজের কপালও বটে, ডাগআউটে তাঁর ঠিকানা হতেই জিততে শুরু করল মুম্বাই। জয়, হার, জয়, জয়, জয়—প্রায় নিভতে বসা মুম্বাইয়ের শেষ চারের আশার সলতে ভালোভাবেই জ্বলছে। জয়ের ধারায় থাকা মুম্বাই কি পেস বোলিংয়ে শিগগিরই কোনো পরিবর্তন আনবে? সে সম্ভাবনা কমই দেখা যাচ্ছে। সেটিই যদি হয়, শেষ চারের আগে বাকি তিন ম্যাচে মোস্তাফিজকে একাদশে দেখার সম্ভাবনা যথেষ্ট ক্ষীণই।
ম্যাচে সুযোগ পাবেন কি পাবেন না, সেটি আগ থেকে জানার উপায় নেই। মোস্তাফিজ নিজেও নিশ্চিত নন কবে তিনি ফের সুযোগ পাবেন। আশায় থাকা ছাড়া এই মুহূর্তে তাঁর কিছু করারও নেই। তিনি শুধু এতটুকুই বলতে পারছেন, পুরো টুর্নামেন্ট খেলেই দেশে ফিরবেন। ক্রিকেটীয় হিসাব–নিকাশের নিরিখে মোস্তাফিজের সে আশা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা কমই।
মুম্বাই যে নিয়মিত চার পেসার নিয়ে খেলছে, তাতে জসপ্রীত বুমরা আর হার্দিক পান্ডিয়া থাকবেনই। ধারাবাহিক ভালো খেলে দুজন প্রশ্ন তোলার সুযোগও রাখেননি। পান্ডিয়ার কাছ থেকে বোলিং-ব্যাটিং দুই বিভাগেই সেবা পাচ্ছেন রোহিত শর্মা। ডেথ ওভারে বুমরার ওপর পূর্ণ আস্থা অধিনায়কের। ভারতীয়দের সঙ্গে নয়, একাদশে সুযোগ পেতে মোস্তাফিজের প্রতিদ্বন্দ্বিতা আসলে মিচেল ম্যাকক্লেনহান আর বেন কাটিংয়ের সঙ্গে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে বাংলাদেশ পেসারকে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে কাটিংয়ের সঙ্গে।
মোস্তাফিজকে বসিয়ে কাটিংকে নিয়ে যে পাঁচটি ম্যাচ খেলেছে মুম্বাই, চারটিতেই জিতেছে। কিন্তু দলের জয়ে এই অস্ট্রেলীয় পেসার খুব যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পেরেছেন, সেটিও নয়। এমনকি রোহিত তাঁকে দিয়ে এক ম্যাচেও ৪ ওভারের কোটা পূরণ করাননি। ৫ ইনিংসে বোলিং করেছেন ১২ ওভার। প্রায় ১০ ইকোনমিতে পেয়েছেন ২ উইকেট। বোলিং পারফরম্যান্সে ৬ ম্যাচে ৮.৩৪ ইকোনমিতে ৭ উইকেট নেওয়া মোস্তাফিজের চেয়ে কাটিং কোথায় এগিয়ে, প্রশ্নটা অনেকেই তুলতে পারেন। তবে মুম্বাই টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে পাল্টা যুক্তিও থাকবে—কাটিং ব্যাটিং পারেন, শেষ দিকে ঝড় তুলতে পারেন। সেটির কিছুটা প্রমাণও পাওয়া গেছে সবশেষ কলকাতার ম্যাচে। তাঁর ৯ বলে ২৪ রানের ছোট্ট ঝোড়ো ইনিংসেই ইডেন গার্ডেনে মুম্বাই গড়েছে ২০০ পেরোনো স্কোর। ব্যাটিং সামর্থ্য দেখাতে কাটিং যদিও সময় নিয়েছেন ৩ ইনিংস। তবুও অস্ট্রেলীয় পেসারের প্রতি আস্থা হারাচ্ছে না মুম্বাই।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, এই মুহূর্তে হয়তো ‘উইনিং কম্বিনেশন’ ভাঙতে আগ্রহী নয় মুম্বাই টিম ম্যানেজমেন্ট। বুমরা, হার্দিক পান্ডিয়া, ম্যাকক্লেনহান, কাটিং—চার পেসারকে নিয়ে শেষ চারে পা রাখাটা নিশ্চিত করাটাই প্রাধান্য পাবে আইপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের কাছে। শেষ চার নিশ্চিত হলে তখন হয়তো মোস্তাফিজকে আরেকবার বাজিয়ে দেখতে পারে মুম্বাই।