মোস্তাফিজ ও শরীফুল
মোস্তাফিজ ও শরীফুল

মোস্তাফিজের কাছে কাটার শিখছেন শরীফুল

জিম্বাবুয়ে সফর থেকেই শরীফুল ইসলামের পেস-বৈচিত্র্য ছিল চোখে পড়ার মতো। উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে দারুণ বোলিং করেছিলেন তরুণ বাঁহাতি পেসার। অভিষেকের পর থেকে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ভরসার নামও হয়ে উঠছেন। নিউজিল্যান্ড সফরে আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর থেকে বাংলাদেশের সব কটি টি-টোয়েন্টিতেই খেলেছেন শরীফুল। অস্ট্রেলিয়া সিরিজেও ৪ ম্যাচে নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমানের সমান ৭ উইকেট।

এবার নিজের বোলিংয়ে নতুন অস্ত্র যোগ করতে চান শরীফুল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের পাঁচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচটি আগামীকাল, তার আগে শরীফুল জানালেন, মোস্তাফিজের কাছেই তিনি কাটার শিখছেন।

শরীফুল ধীরে ধীরে দলের নির্ভরযোগ্য বোলারদের একজন হয়ে উঠছেন

এ সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার কাছে মোস্তাফিজ স্লোয়ারের সঙ্গে কাটারের মিশেলে হয়ে উঠেছেন দুর্বোধ্য। এখন পর্যন্ত চারটি ম্যাচেই বাংলাদেশ অভিন্ন একাদশ খেলিয়েছে। মোস্তাফিজের সঙ্গে সেখানে পেসার হিসেবে খেলছেন শরীফুল।

মোস্তাফিজের কাটারের ধরনটা একেবারেই আলাদা, শরীফুলও জানেন। তবে শিখতে চান সেটিই, ‘মোস্তাফিজ ভাইয়ের কাছে আমি তাঁর মতো কাটারটা শেখার চেষ্টা করছি। আমি এখনো চেষ্টা করছি অনুশীলনে। কিন্তু ম্যাচে এখনো এটা চেষ্টা করিনি। ওনার কাটারের পদ্ধতিটা একেবারেই ভিন্ন ধরনের। (তবে) আমি শিখছি। আর উনি বলেন যে মিরপুরে ডানহাতি ব্যাটসম্যানের জন্য কাটারটা খুবই বিপজ্জনক। কারণ হালকা থেমে (বল) একটু টার্ন করে স্পিনারদের মতো। উনি এটাও বলেছেন যে কাটারটা (যেন এমনভাবে শিখি) যাতে বেশি বেশি ব্যবহার করতে পারি।’

শুধু কাটারের শিক্ষা নয়, বোলিংয়ের আগেও মোস্তাফিজের পরামর্শ পাচ্ছেন শরীফুল, ‘আমি সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে খেলেছি মোস্তাফিজ ভাইয়ের সাথে। এরপর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলেছি। এখন তো জাতীয় দলে খেলছি। ওনার সাথে বোলিং করার মজাই আলাদা। উনি সব সময় ইতিবাচক কথাই বলেন। ব্যাটসম্যানকে দ্রুত পড়ে ফেলতে পারেন। কোনটা করা উচিত, কোনটা করা উচিত না—আমি বোলিং করতে আসার আগেই এসব বলে দেন। যেহেতু আমার অভিজ্ঞতা কম, এমন একজন বড় মাপের ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের পরামর্শগুলো নিলে তাই সবকিছু খুব সহজ হয়। আমি নিজেও অনেক সময় তাঁকে ডাকি পরামর্শের জন্য।’

মিরপুরের পিচে মোস্তাফিজের কাটার...অস্ট্রেলিয়া এর কুল কিনারা পাচ্ছে না

মোস্তাফিজের পরামর্শের সঙ্গে শরীফুলের কাজে আসছে তাঁর ইতিবাচক মানসিকতাও, ‘অনেক ম্যাচেই এমন পরিস্থিতির মুখে পড়েছি যে প্রথম দিকে আমি রান দিয়ে ফেলি। অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে বলেন বা জাতীয় দল বলেন, যখনই শুরুর দিকে (প্রথম স্পেলে) রান দিই, আমি ভাবি যে ফিরে আসার জন্য এখনো ১২টা বল আছে। একটা ব্রেক থ্রু দিলে দলের জন্য ভালো হবে। দুই ওভারে ভালো করে দলকে এগিয়ে নেওয়ার ইতিবাচক মানসিকতাটা থাকে। অনূর্ধ্ব-১৯ থেকেই এমন ইতিবাচক মানসিকতা তৈরি হয়েছে আমার। ভাবি, শুরুতে খারাপ করলেও শেষ দিকে ভালো করতে পারব।’

শুধু নিজের মাঝে নয়, দলের সবার মধ্যেই শরীফুল ইতিবাচক মানসিকতা দেখতে পাচ্ছেন, ‘দেখেন, আমাদের দলে এখন সবাই পারফর্ম করছে। একজন অন্যজনের ওপর ভরসা করছে, সব একজনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছে না। এ জিনিসটা খুব ভালো লাগে। সবাই নিজের ওপরই ভরসা রাখছে। একজন আউট হলে অন্যজন (হাল) ধরছে। সবাই যদি ইতিবাচক চিন্তা করে, সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে আমাদের জন্য জয় পাওয়াটা সহজ হবে।’

সিরিজের প্রথম চার ম্যাচে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ। প্রথম তিন ম্যাচে জিতেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ফেলেছিল মাহমুদউল্লাহর দল, চতুর্থ ম্যাচে জেতে অস্ট্রেলিয়া।