২০০৭ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে পাকিস্তানের হার কষ্ট দেয় ইমরান নাজিরকে।
২০০৭ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে পাকিস্তানের হার কষ্ট দেয় ইমরান নাজিরকে।

মৃত্যুর আগেও যে কষ্ট ভুলবেন না নাজির

দৃশ্যটা আবারও দেখলে মনে হবে মিসবাহ-উল-হক মৃত্যুদণ্ডের জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছেন। উইকেটেই বসে পড়লেন হাঁটু গেড়ে। নিচু মাথা, যেন বোঝাতে চাচ্ছিলেন যে ‘অপরাধ’ তিনি করেছেন তার সাজা ওটাই হওয়া উচিত। ৪ বলে দরকার ৬ রান—এ অবস্থায় শেষ উইকেট জুটিতে মিসবাহ খেললেন ‘স্কুপ প্যাডেল’। শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচটা নিয়েছিলেন শ্রীশান্ত। আর দর্শকেরা বুঝে নিয়েছিল, পাকিস্তান তো এমনই!

ওপেন করতে নেমে দ্রুত রান তোলার খ্যাতি কুড়িয়েছিলেন ইমরান নাজির।

মঞ্চ যা-ই হোক পাকিস্তান সব সময়ই অননুমেয়। ১৩ বছর আগের সেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালেও—যেখানে আবার প্রতিপক্ষ ছিল ভারত—এর অন্যথা ঘটেনি। শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৩ রান। ৩ বলের মধ্যে ৭ রান নিয়ে শিরোপাটা পাকিস্তানের নাগালের মধ্যে নিয়ে এসেছিলেন মিসবাহ। তাঁর ভুলেই মুঠো ফসকে যায়। পাকিস্তান ক্রিকেটে এ ‘দুঃখ’ ভোলা কঠিন। ইমরান নাজির তো সরাসরি বলেই দিলেন, ভারতের কাছে ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের হার তাঁকে কষ্ট দেবে শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত।

ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচে এক প্রান্তে ঝড় তুলেছিলেন ইমরান নাজির। মোহাম্মদ হাফিজ প্রথম ওভারে ফিরলেও অন্য প্রান্তে ১৪ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। মিসবাহ থাকতে জয় দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু শেষ ওভারে ওভাবে হৃদয় ভাঙবে তা শুধু ইমরান নাজির কেন পাকিস্তানের কোনো সমর্থকই হয়তো ভাবেননি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে তাও বিশ্বকাপের ফাইনালে ৫ রানে হারের সেই দাগ তাই নাজিরের কাছে অমোচনীয়, ‘ক্রিকেটের দিক থেকে এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অনুশোচনা। শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত এই কষ্ট থাকতে। আমরা ইতিহাস গড়ার সুযোগ পেয়েছিলাম।’ এক ইউটিউব শো-তে এমন কথা বলেন পাকিস্তানের হয়ে ৭৯ ওয়ানডে ও ২৫ টি-টোয়েন্টি খেলা নাজির।

পাকিস্তানের সেই অবিশ্বাস্য হারে কাঠগড়ায় নিজেকেও তোলেন তিনি। নিজে তো দুর্দান্ত একটা শুরু পেয়েছিলেন। ষষ্ঠ ওভারে আউট হওয়ার আগে পাকিস্তানের স্কোরবোর্ডে উঠেছে ৫৩ রান। ২ উইকেটে পড়েছিল। নাজির যদি তখন আরও ঠান্ডা মাথায় ইনিংস টানতেন তাহলে ফলটা তো অন্যরকমও হতে পারত! এখন কিন্তু এই ভাবনাটা পোড়ায় তাঁকে, ‘ব্যক্তিগত জায়গা থেকে বলতে পারি ম্যাচটা আমার একাই জেতানো উচিত ছিল। কারণ একজন খেলোয়াড়ের মাঝ ব্যাটে বল লাগা শুরু হলে সে আত্মবিশ্বাসী থাকে।’