মোহাম্মদ আশরাফুল
মোহাম্মদ আশরাফুল

ওভার দ্য টপ

মুশফিকের আউটটাই টার্নিং পয়েন্ট

বড় একটা সুযোগ হারালাম কাল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়ের এত কাছে গিয়েও হারতে হলো। দুর্ভাগ্যই বলব। ম্যাচটা দেখে ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বেঙ্গালুরুতে ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচটা মনে পড়ল। সেদিন ৩ বলে ২ রান দরকার ছিল জিততে, বাংলাদেশ হেরেছিল। কালকের ম্যাচটা অতটা ‘ভুতুড়ে’ ছিল না, কিন্তু অনেকটা কাছাকাছি ছিল। ছোটখাটো ভুল, শট নির্বাচন, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মেজাজ বুঝতে না পারা, আমাদের হারের কারণ। এ জিনিসগুলো থেকে আমরা কবে বের হয়ে আসব, বুঝতে পারছি না।

আজ শুরুটা একদম চাহিদামতোই ছিল। টসে জিতলাম, ফিল্ডিং নিলাম। বোলাররা দুর্দান্ত বোলিং করল। কিন্তু আমি মনে করি শেষের দিকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলাম আমরা। কয়েকটি সহজ ক্যাচ পড়ল। মোস্তাফিজুর রহমান শেষ ওভারে ১৯ রান দিল—ম্যাচের মোমেন্টাম বলে যে বিষয়টা থাকে, সেটি তখনই আসলে চলে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে। ১৪তম ওভার পর্যন্ত যেখানে ক্যারিবীয়দের কোনো ছক্কা নেই, সেখানে বাকি ইনিংসে তারা মারল ৭টি ছক্কা! ক্যাচ মিসের কথা যদি বলেন, রোস্টন চেজের দুটি ক্যাচের চেয়েও বাংলাদেশের বড় ক্ষতি করেছে হোল্ডারের ক্যাচ ফেলে দেওয়া। আফিফ সাধারণত ভালো ফিল্ডার। কিন্তু আজকে তাঁর দুর্ভাগ্যই।

ক্যাচ মিস ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে

আজ দল নির্বাচনটা আমার ভালো লেগেছে। সাকিব আল হাসানকে ওপেনিংয়ে পাঠিয়ে অন্য কিছুর চেষ্টাটাও ভালো লেগেছে। ব্যাটিংয়ে লিটন দাস ভালো করেছে। সে তাঁর দায়িত্ব পালন করেছে। সব মিলিয়ে আমরা ভালোই এগিয়ে গিয়েছিলাম জয়ের দিকে। কিন্তু মুশফিকুর রহিম ওই মুহূর্তে ওই স্কুপটা কেন যে খেলল বুঝতে পারছি না। সে হয়তো দলের ভালোর জন্যই ওই শটটা খেলেছিল। লেগে গেলে তো বাউন্ডারিই হয়ে যেতে পারত। কিন্তু সেটা হয়নি। তবে আমি বলব, মুশফিকের মতো একজন ব্যাটসম্যান, অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ওই সময় শটটা না খেললেও পারত। ক্রিকেটিং শট খেলেই রান বের করা যেত। আউট হওয়ার একটু আগেই তো কী সুন্দর একটা স্কয়ার কাট খেলে বাউন্ডারি পেল সে। আমি মুশফিকের আউটটিকে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট বলব। লিটনের সঙ্গে ভালো একটা জুটি গড়েছিল সে। একটা দায়িত্ব ছিল তাঁর।

‘স্কুপ’ খেলে দলের বিপদ ডাকলেন মুশফিকুর রহিম

মাহমুদউল্লাহ লিটনকে ভালোই সঙ্গ দিয়েছে। লিটন-মাহমুদউল্লাহ জুটিতেও আমরা ম্যাচ জিততে পারতাম। কিন্তু একটা জিনিস আমার অদ্ভুত লেগেছে, ইনিংসের ১৭তম ওভারটায় কেন দুই সেট ব্যাটসম্যান একটু চার্জ করবে না, কেন ওই সময় মাত্র ৩ রান আসবে। মুশফিকের আউটটিকে যদি টার্নিং পয়েন্ট বলি, তাহলে লিটন-মাহমুদউল্লাহ ম্যাচটা কঠিন করেছে ১৭তম ওভারেই। জেসন হোল্ডার লিটনের যে ক্যাচটা নিল—সেটা তাঁর মতো উচ্চতার কোনো ক্রিকেটারের পক্ষেই সম্ভব। এ জায়গায় আমি লিটনের, বাংলাদেশের দুর্ভাগ্যই বলব।

আর দুটি ম্যাচ বাকি বাংলাদেশের। গ্রুপের অন্যতম সেরা দুই দলের বিপক্ষে—অস্ট্রেলিয়া আর দক্ষিণ আফ্রিকা। ক্রিকেটীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এ দুই ম্যাচে আমাদের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এখন অলৌকিক যদি কিছু হয়। দলের যে অবস্থা, এখন কেবল অলৌকিক কিছুরই আশা করতে পারে বাংলাদেশ।