সূচি অনুযায়ী বাংলাদেশ দলের অনুশীলন ছিল দুপুর ২টায়। কিন্তু ব্যাটিং অনুশীলনের জন্য মুশফিকুর রহিম যথারীতি এক ঘন্টা আগেই মাঠে হাজির। সঙ্গে ছিলেন লিটন দাস। মুশফিকের সেই অনুশীলন চলল বিকেল পর্যন্ত।
নেটে মুশফিকের ব্যাটিংও হচ্ছে চোখে পড়ার মতো। ‘গুড শট’, ‘ওয়েল লেফট’ – জাতীয় দলের কোচিং স্টাফের সদস্যদের এমন প্রশংসা বাক্যও শোনা যাচ্ছিল নিয়মিত। মুশফিকের ব্যাটিং দেখে সবচেয়ে খুশি সম্ভবত ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স।
এতটাই যে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে মুশফিকের ব্যাটে বড় রানের ভবিষ্যদ্বাণীই করে বসলেন তিনি। অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সিডন্স বলছিলেন, ‘মুশফিক এখানে গত দুই দিন যেভাবে ব্যাটিং করছে, তাতে আমি নিশ্চিত যে, এখানে সে রান করবে।’
মুশফিকের রানখরার বিষয়টিও মাথায় আছে সিডন্সের। দক্ষিণ আফ্রিকার পোর্ট এলিজাবেথে ৫১ রানের ইনিংসটি বাদ দিলে টেস্টের মুশফিকের সর্বশেষ ফিফটি খুঁজতে গেলে ৮ ইনিংস পেছনে যেতে হবে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সুপার লিগের চারটি ইনিংসেও বড় রান পাননি। উইকেটে থিতু হয়ে ২০-৩০ এর ঘরে থেমে গেছে মুশফিকের চারটি ইনিংস।
সিডন্স অবশ্য সাম্প্রতিক ফর্মকে বড় করতে দেখতে রাজি নন, ‘সব ব্যাটসম্যানের এমন একটা সময় যায়, যখন সে তেমন রান পায় না। তবে আমি মুশির ব্যাটিং দেখতে মুখিয়ে রয়েছি। তার সঙ্গে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কাজ করেছি। আমার মনে হয়, সে ভালো একটি সিরিজ কাটাবে।’
টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হকের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও আত্মবিশ্বাস জাগানোর মতো নয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৮৮ রানের ইনিংসটির পর সর্বশেষ ৭ ইনিংসে কোনো ফিফটি নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজটা তো কেটেছে দুঃস্বপ্নের মতো। যেখানে চার ইনিংসের কোনোটিতেই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি, মোট রান মাত্র ১৩।
কিন্তু খেলাটা যেহেতু চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে, মুমিনুলের কাছে শতক ছাড়া কিছুই চাইছেন না সিডন্স। মুমিনুলের ১১টি টেস্ট শতকের সাতটিই যে এই মাঠে! সিডন্স যেমন বলছিলেন, ‘আমি তো তাকে বার বার একটা কথাই বলছি, চট্টগ্রামে তার ৯টি (৭টি) টেস্ট সেঞ্চুরি আছে। এবার আরও দুটি সেঞ্চুরি করার সুযোগ পাচ্ছে সে। এই মাঠটা সে ভালোবাসে। মুমিনুলকে যথাযথভাবে প্রস্তুত করার চেষ্টা করছি। সে–ও অনেক আত্মবিশ্বাসী।’
প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার বোলিংয়ে অবশ্য চ্যালেঞ্জ দেখছেন এই অস্ট্রেলীয় কোচ।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছে তাই প্রথম ইনিংসে বড় রানের দাবি সিডন্সের। তিনি বলছিলেন, ‘ওদের বোলিংটা ভালো। ব্যাটিংও খারাপ না। আমরা অবশ্যই দুটি টেস্টই জিততে চাই। সে জন্য আমাদের প্রথম ইনিংসে ভালো করতে হবে। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম ইনিংসে দারুণ কিছু শুরু পেয়েছিলাম, কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো করতে পারিনি। এবার সেদিকেই মনোযোগ। প্রথম ইনিংসে আরও বড় সংগ্রহ দাঁড় করানোই হয়তো আমাদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
সেই লক্ষ্য পূরণে মুশফিক ও মুমিনুলকে অগ্রণী ভূমিকাতেই দেখতে পাচ্ছেন সিডন্স।