রানখরায় ভুগতে থাকা মুমিনুলের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন সাকিব
রানখরায় ভুগতে থাকা মুমিনুলের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন সাকিব

মুমিনুলের চেয়ে ভালো বিকল্প দেখেন না সাকিব

মুমিনুল হক আজও পারলেন না। মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও শূন্য রানে ফিরেছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক। গত জানুয়ারিতে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ঐতিহাসিক জয়ের টেস্টে এক ইনিংসে ৮৮ করেছিলেন। এর পর থেকে ব্যাটে রান নেই মুমিনুলের। আক্ষরিক অর্থেই নেই।

জানুয়ারিতেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চের পরের টেস্টে ৩৭ রান, এরপর সাত ইনিংসে দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি মুমিনুল। ০, ২, ৬, ৫, ২, ৯, ০—তাঁর সর্বশেষ ৭ ইনিংসের স্কোরগুলো পাশাপাশি রাখলে দেখতে ফোন নম্বরের মতোই লাগে। বাংলাদেশের পক্ষে টেস্টে সবচেয়ে বেশি শতক (১১টি) যাঁর, তাঁর ব্যাটিং ফর্মের এ অবস্থা যে কারও দুশ্চিন্তার জন্ম দেবে। টেস্ট থেকে মুমিনুলকে বাদ দেওয়ার সময় এসেছে কি না, সে প্রশ্নও উঠছে।

আজ মিরপুর টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে সাকিব আল হাসানের সংবাদ সম্মেলনেও প্রশ্নটা হলো। তবে সাকিবের উত্তর, এই মুহূর্তে মুমিনুলের কোনো বিকল্প নেই। বরং তাঁকে সবার এখন সমর্থন দেওয়া দরকার।

আমাদের টেস্ট ক্রিকেটের যে অবস্থা, তাতে মুমিনুলের চেয়ে ভালো কোনো বিকল্প আমাদের হাতে নেই।
মুমিনুলের বিরতি নেওয়ার প্রশ্নে সাকিব আল হাসান

মুমিনুল নিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের শেষ দিন সংবাদ সম্মেলনে নিজের বাজে ফর্ম নিয়ে একধরনের নির্লিপ্ত মন্তব্য করেছিলেন। বলেছিলেন, নিজের ব্যাটিং নিয়ে তিনি মোটেও চিন্তিত নন। কিন্তু মিরপুর টেস্টের দুই ইনিংসেই তাঁর ব্যর্থতা আবারও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

মুমিনুল কবে ফর্মে ফিরবেন, কীভাবে ফিরবেন—এই আলোচনা হলো আজ চতুর্থ দিনের সংবাদ সম্মেলনেও। সাকিব আল হাসানকে দিতে হলো তাঁর অধিনায়ককে নিয়ে ওঠা প্রশ্নের উত্তর।

স্বাভাবিকভাবেই মুমিনুলের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাকিব। বলেছেন, খারাপ এই সময়ে অধিনায়কের পাশে দাঁড়ানোটাই দলের সবার কর্তব্য, ‘একজন অধিনায়কের জন্য এই পরিস্থিতি অবশ্যই খুব কঠিন। এই সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, আমরা ওকে কীভাবে সমর্থন দিয়ে যাই, সেটা।’

সর্বশেষ ৭ ইনিংসের একটিতেও দুই অঙ্কে যেতে পারেননি মুমিনুল

মুমিনুলকে দল থেকে বাদ দেওয়ার প্রশ্ন যে উঠছে, সে ক্ষেত্রে তাঁর বিকল্প কে? সাকিব এই বাস্তবতাই তুলে ধরেছেন নিজের কথায়, ‘আমাদের টেস্ট ক্রিকেটের যে অবস্থা, তাতে মুমিনুলের চেয়ে ভালো কোনো বিকল্প আমাদের হাতে নেই। আমার কাছে মনে হয়, এটা কেবল একটা ইনিংসের ব্যাপার। একটা ভালো ইনিংস খেলে ফেললেই সেটা ওর সবকিছু বদলে দিতে পারবে।’

২০১৯ সালের শেষের দিকে ভারত সফরের আগে মুমিনুলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল টেস্ট অধিনায়কত্বের গুরুদায়িত্ব। সেটিও তিনি পেয়েছিলেন সাকিবের নিষেধাজ্ঞার কারণেই।

গত তিন বছরে মুমিনুলের অধীন ব্যর্থতার পাশাপাশি সাফল্যও আছে। তাঁর অধিনায়কত্বেই নিউজিল্যান্ডের মাটিতে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ। কিন্তু এর পর থেকে ব্যাট হাতে তাঁর ধারাবাহিক ব্যর্থতা দলীয় সাফল্য-ব্যর্থতা ছাপিয়ে দলে মুমিনুলের জায়গা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।