‘মুখোশের আড়ালে’র মন্তব্য শামি যেন গুরুত্ব না দেন

মোহাম্মদ শামি একা নন। সেটি প্রমাণ করে দিয়েছেন তাঁর সতীর্থরাই। পাকিস্তানের বিপক্ষে বল হাতে ‘বাজে একটি দিন’ শামিকে যে এমন পরিস্থিতির মুখে দাঁড় করিয়ে দেবে, সেটি কি তিনি ভেবেছিলেন! কেবল ধর্মের কারণে তাঁকে দেশ থেকে চলে যেতে বলা হয়েছে, এমনকি তাঁর জাতীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই পাকিস্তানের কাছে হেরেছে ভারত। এই হার ক্রিকেটের বিশ্ব আসরে ১২ ম্যাচ পর পাকিস্তানের কাছে ভারতের হার। তা–ও ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শামির বোলিংকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন মনের মধ্যে জাতিগত ও ধর্মীয় বিদ্বেষ নিয়ে ঘোরা সমর্থকেরা। অথচ কত ম্যাচেই না নিজের বোলিং দিয়ে ভারতকে জিতিয়েছেন শামি।

প্রথম ম্যাচে ভালো করেননি শামি, তাতেই তাঁকে ‘পাকিস্তানি’ বানিয়ে দিয়েছে বিদ্বেষীরা

ভারতীয় পেসারের পাশে অনেকেই দাঁড়িয়েছেন। অধিনায়ক বিরাট কোহলি তো সোজাসাপ্টাই বলে দিয়েছেন, ধর্ম নিয়ে মানুষকে আক্রমণ করার চেয়ে জঘন্য জিনিস আর কিছুই হতে পারে না। তিনি ধর্মীয় বিদ্বেষের বিরুদ্ধে বলেছেন, ‘ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা কোনোমতেই উচিত নয়। ধর্ম একান্তই পবিত্র ও ব্যক্তিগত বিষয়।’ কোহলি আক্রমণকারীদের ‘কাপুরুষ’ও বলেছেন। তাঁর মতে, এ ধরনের মন্তব্যকারীদের সামনাসামনি এসব কথা বলার সাহস নেই বলেই তাঁরা আড়ালে এসব বলেন।

ভারতের সাবেক কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান সুনীল গাভাস্কার ব্যাপারটাকে গুরুত্বই দিতে চান না। তিনি এসব নিয়ে মোটেও বিচলিত নন। তাঁর মন্তব্য খুবই পরিষ্কার, ‘যারা আড়াল থেকে এ ধরনের মন্তব্য করে, তাদের সেই মন্তব্যগুলোর আদৌ কোনো গুরুত্ব আছে বলে আমি মনে করি না। মুখোশের আড়াল থেকে করা এসব মন্তব্য নিয়ে মাথা ঘামানোই উচিত নয়।’

শামিকে ‘মুখোশের আড়ালে’র মন্তব্যে গুরুত্ব দিতে মানা করছেন গাভাস্কার

গাভাস্কারের সন্তুষ্টি ও স্বস্তি অন্য জায়গায়। এমন বাজে পরিস্থিতিতে শামির পাশে গোটা ভারতীয় দল দাঁড়িয়েছে। তিনি মনে করেন, এ সময় একজন ক্রিকেটারের পাশে দাঁড়ানোটা খুব জরুরি, ‘ভালো লাগল যে বিরাট কোহলি ও তার দলের খেলোয়াড়েরা এ সময় শামির পাশে দাঁড়িয়েছে। এ সময় পরস্পরের পাশে থাকাটা জরুরি।’

কোহলি শামির প্রতি আক্রমণকে ‘মানবিকতার নিচু স্তর’ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন, ‘মানবিকতার সবচেয়ে নিচু স্তর দেখলাম।’ তিনি এ ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ আক্রমণের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতেও সোচ্চার হবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আমাদের ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্ব কখনো নষ্ট হতে দেব না। কখনোই এমন কিছু মেনে নেব না।’