একজনের নাম মিরাজ, অন্যজন তাইজুল। যা ভাবছেন তা নয়, এরা জাতীয় দলের মিরাজ-তাইজুল নয়। এরাও ক্রিকেটার, তবে এখনো পেরোয়নি হাইস্কুলের গণ্ডি। আর কাল জাতীয় স্কুল ক্রিকেটে দেশের দুই প্রান্তের দুই ম্যাচে অসাধারণ কীর্তি গড়ে শিরোনাম মিরাজ-তাইজুলরা। প্রাইম ব্যাংক স্কুল ক্রিকেটে খুলনা ন্যাশনাল হাইস্কুলের মিরাজ সেঞ্চুরির পর পেয়েছে ৮ উইকেট। লালমনিরহাট রেলওয়ে সরকারি হাইস্কুলের ছাত্র তাইজুলও কাল ৮ উইকেট পেয়েছে।
শুধুই কি নাম, ক্রিকেটার হিসেবেও কত মিল মিরাজের সঙ্গে মিরাজের বা তাইজুলের সঙ্গে তাইজুলের। মেহেদী হাসান মিরাজের জেলা খুলনার বাসিন্দা মিরাজ হাওলাদারও অলরাউন্ডার। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মিরাজের মতো এই মিরাজও ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও অফ স্পিনার। ন্যাশনাল হাইস্কুলের অধিনায়কও ছোট মিরাজ।
অধিনায়কের অসাধারণ পারফরম্যান্সেই বঙ্গভাষী মাধ্যমিক স্কুলকে ১১৮ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে ন্যাশনাল স্কুল। প্রথম ব্যাট করে মিরাজের দল ২১.৩ ওভারে অলআউট ১৬৬ রানে। এই রানের ১১৪-ই মিরাজের। ৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর উইকেট আসা মিরাজ আউট দলকে ১৬৬ রানে রেখে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে। তার ৭৯ বলের ইনিংসে চার ১০টি, ছক্কা ৯টি। অষ্টম উইকেটে ৮৩ রান যোগ করেন মিরাজ, যেখানে তাঁর সঙ্গীর অবদান মাত্র ৪ রান। সঙ্গীর নামটাও চমকে যাওয়ার মতো, মেহেদী হাসান!
এরপর মিরাজের স্পিনে ঘায়েল হয়ে বঙ্গভাষী ১৫.৬ ওভারে অলআউট ৪৮ রানে। টানা আট ওভারের স্পেলে ৩০ রান দিয়ে ৮ উইকেট মিরাজের।
মানবিক বিভাগের ছাত্র মিরাজ কাল রাতে মুঠোফোনে জানাল বিখ্যাত ‘মিতা’র বোলিং তার ভালোই লাগে। তবে মেহেদী হাসান মিরাজ তার ‘আইডল’ নন। আইডলের নাম বিরাট কোহলি। ভারত অধিনায়কের মতো জেদও আছে মিরাজের। সেই জেদের ফলই নাকি কালকের এই পারফরম্যান্স, ‘আগের ম্যাচে হেরে গিয়েছিলাম। তাই একটু জেদ ছিল আজ কিছু করার। আমি উইকেটে আসার আগেই ৩ উইকেট নেই। ভালো করার ইচ্ছাটা আরও বাড়ল। তবে খেলেছি নিজের মতোই। শুরুতে এক-দুই করে নিয়ে পরে চড়াও হয়েছি। বোলিংয়েও চেষ্টা করেছি উইকেট নেওয়ার মতো বল করার।’
সেই চেষ্টায় কী দারুণভাবেই না সফল মিরাজ!
একই দিনে লালমনিরহাটে ২৩ রান খরচায় ৮ উইকেট পেয়েছে জেলার বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি হাইস্কুলের তাইজুল ইসলাম। মজার ব্যাপার, বিখ্যাত মিতার মতো এই তাইজুলও বাঁহাতি স্পিনার। রংপুর বিভাগীয় অনূর্ধ্ব-১৬ দলের ক্রিকেটার তাইজুলের এমন বোলিংয়ের পরও অবশ্য হেরেছে তার স্কুল। ১৬০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করা বর্ডার গার্ড হাইস্কুল ১১৮ রানে নবম উইকেট হারানোর পরও জিতে যায়।