লর্ডস টেস্টের প্রথম দিন যেন শুরু হয়েছিল উইকেট–বৃষ্টি। ইংল্যান্ড–নিউজিল্যান্ড প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে কাল উইকেট পড়েছে ১৭টি। আজ প্রথম সেশনে পড়ল আরও ৬ উইকেট। এরপর বৃষ্টিটা থেমেছে। দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনের পর তৃতীয় সেশনেও কোনো উইকেট পড়েনি লর্ডসে।
লর্ডসের উইকেট–বৃষ্টি থেমেছে নিউজিল্যান্ডের দুই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ড্যারিল মিচেল ও টম ব্লান্ডেলের জুটিতে। নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে পঞ্চম উইকেটে তাঁদের দুজনের অবিচ্ছিন্ন ১৮০ রানের জুটিতে স্কোরবোর্ডে ৪ উইকেটে ২৩৬ রান তুলে দিনের খেলা শেষ করেছে কিউইরা। ৬ উইকেট হাতে রেখে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের চেয়ে তারা এগিয়ে ২২৭ রানে। ব্লান্ডেল অপরাজিত । মিচেল অপরাজিত আছেন ৯৭ রানে, তাঁর সঙ্গী ব্লান্ডেলের রান ৯০।
প্রথম দিন বিকেলের ধসে এলোমেলো ইংল্যান্ড কাল দ্বিতীয় দিন শুরু করে ৩ উইকেট হাতে রেখে, ১৬ রানে পিছিয়ে থেকে। শেষ পর্যন্ত লিড নেয় বেন স্টোকসের দল, তবে সেটি ৯ রানের বেশি হয়নি। আধা ঘণ্টার একটু বেশি সময়ের মধ্যেই কাল গুটিয়ে যায় স্বাগতিকেরা। ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের মূল ভরসা হয়ে ছিলেন মূলত বেন ফোকস, তবে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের স্কোর থেকে ২ রান আগেই টিম সাউদির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।
আগের দিনই জ্যাক লিচের কনকাশন বদলি হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়েছিল ম্যাট পারকিনসনের, তবে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর অভিষেক হয় গতকাল। তাঁর ব্যাটে লিডসূচক রানটি আসে ইংল্যান্ডের, যদিও বেশি দূর যেতে পারেননি তিনি। কাল ইংল্যান্ডের ৩ উইকেটের ২টিই নেন টিম সাউদি, যিনি বোলিং শেষ করেন ৫৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে। ২১ রানে ৩ উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট। প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড ১০ উইকেট হারিয়েছে ৮২ রানের ব্যবধানে।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামা নিউজিল্যান্ড আবারও শুরুতেই উইকেট হারায়। প্রথম ইনিংসের মতোই তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে জেমস অ্যান্ডারসনের শিকার হন উইল ইয়াং, আবার ১ রান করেই। টম ল্যাথাম ও কেইন উইলিয়ামসনের জুটি কিছুক্ষণ টিকেছিল, দুজন মিলে ব্যাটিং করেন ৯.১ ওভার। ইংল্যান্ডকে পরের ব্রেকথ্রু এনে দেন ম্যাথু পটস। ম্যাচে দ্বিতীয়বার উইলিয়ামসনকে ফেরান তিনি, এবার কিউই অধিনায়ক করেন ১৫ রান। পরের ওভারে এসে টম ল্যাথামের উইকেটও নেন অভিষিক্ত পটস। ৩ উইকেট হারিয়ে, ২৯ রানের লিড নিয়ে মধ্যাহ্নবিরতিতে যায় নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় দিনই প্রথম টেস্ট শেষ হয়ে যাবে কি না, এমন আলোচনাও ছিল তখন।
বিরতির পর আঘাত করেন স্টুয়ার্ট ব্রড, ডেভন কনওয়ে আউট হন ১৩ রান করে। নিউজিল্যান্ডের রান তখন ছিল ৫৬। তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর শুরুও এরপরই, দ্বিতীয় সেশনে ওই ১টি উইকেটই হারায় কিউইরা। ৪ উইকেটে ১২৮ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যায় নিউজিল্যান্ড, ব্লান্ডেল-মিচেলের জুটি তখন অবিচ্ছিন্ন ছিল ৭০ রানে।
বিরতির পর ম্যাচের প্রথম অর্ধশতকের দেখা পান ব্লান্ডেল। ম্যাথু পটসকে চার মেরে মাইলফলকে পৌঁছান তিনি। পরের ওভারে অর্ধশতক পান ড্যারিল মিচেলও। তুলনামূলক পুরোনো বলে সে অর্থে হুমকি তৈরি করতে পারেননি ইংল্যান্ড পেসাররা। ম্যাচে প্রথম স্পিনার হিসেবে বোলিংয়ে আসা পারকিনসনও প্রথম ৬ ওভারে দেন ২১ রান।