দক্ষিণ আফ্রিকায় দূরে থাকুক, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দেশের মাটিতেও কোনো টেস্ট শতক ছিল না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। তরুণ তুর্কি মাহমুদুল হাসানের ব্যাটেই দূর হলো সেই শূন্যতা। বাংলাদেশের জার্সিতে মাহমুদুলের প্রথম শতকটা অনন্য হয়ে উঠছে তা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট শতক বলে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে বাংলাদেশের আগের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ছিল মুমিনুল হকের। ২০১৭ সালে পচেফস্ট্রুমে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ৭৭ রান করেছিলেন বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক।
ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়েই ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে প্রথম শতকটি পেলেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী বাংলাদেশ দলের সদস্য মাহমুদুল। ডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন ২৬৯ বলে। বলের হিসেবে টেস্টে বাংলাদেশের মন্থরতম শতকের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে জায়গা পেয়েছে ইনিংসটি।
৪৪ রান নিয়ে দিন শুরু করা মাহমুদুল তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন বাংলাদেশের ইনিংসের ৯৭তম ওভারে। দক্ষিণ আফ্রিকার বাঁহাতি স্পিনার কেশব মহারাজের করা পঞ্চম বলটিকে পয়েন্ট দিয়ে সীমানার দিকে পাঠিয়ে ২ রান নিয়েই শতক পুরো করেছেন ২১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ব্যাটিং করে প্রথম শতক পাওয়া মাহমুদুল ৫০ ছুঁয়েছিলেন ১৭০ বলে। অর্ধশতকে ৫টি চার ছিল তাঁর। তুলনায় দ্বিতীয় ৫০ রান ‘রকেট’ গতিতেই করেছেন গত ডিসেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট অভিষিক্ত মাহমুদুল। ৫০ থেকে ১০০ পর্যন্ত যেতে যে মাত্র ৯৯ বল লেগেছে তাঁর। এই সময়ে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৫টি চার ও ১টি ছক্কা।
আজ লিটন দাসকে ষষ্ঠ উইকেটে ৮২ রান যোগ করা মাহমুদুল একমাত্র ছক্কাটি মেরেছেন অফ স্পিনার সাইমন হারমারকে। লাঞ্চের আগের ওই ওভারের প্রথম বলেও চার মেরেছিলেন মাহমুদুল।
পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে ০ ও ৬ রান করে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু করা মাহমুদুল নিউজিল্যান্ড সফরে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের প্রথম ইনিংসে ৭৮ রান করেছিলেন। ফিল্ডিং অনুশীলনে আঙুলে আঘাত পেয়ে ওই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে পারেননি মাহমুদুল। ওই চোটের কারণে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টেও খেলা হয়নি তাঁর। এরপর বাংলাদেশের জার্সিতে প্রথমবার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েই তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ফেললেন তরুণ ব্যাটসম্যান।
টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম শতক হলেও দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে মাহমুদুল আজই প্রথম তিন অঙ্ক ছুঁলেন না। ২০২০ সালে অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনে নেমে ঠিক ১০০ রান করেছিলেন। ওই ম্যাচে ম্যাচসেরার পুরস্কারটাও উঠেছিল মাহমুদুলের হাতে।