>ওয়ানডেতে এ বছরটা রাঙাতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, গত এক বছরে তিনিই টেস্টে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান। কাল সেঞ্চুরি করে মাহমুদউল্লাহ জানিয়ে রাখলেন, আফগানদের বিপক্ষে ছন্দ ধরে রাখতে তিনি তৈরি
দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ, সেটিও আবার নিজেদের মধ্যে ভাগ হয়ে খেলা। এই ম্যাচ এত গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার কী আছে! লাল দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান তাই দুবার ব্যাটিং করলেন। প্রথমবার তাসকিন আহমেদের বলে বোল্ড হয়েছেন গোল্ডেন ডাক মেরে। দ্বিতীয়বার তাইজুল ইসলামের বলে এলবিডব্লু হওয়ার আগে ৯ রান।
প্রস্তুতি ম্যাচের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ঝালিয়ে নেওয়া। সাকিব চেয়েছিলেন প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাটিংয়ের প্রস্তুতি ভালোভাবে সারতে। সেটি হয়নি। দুবার ব্যাটিং করে ৯ রানের বেশি করতে পারেননি। এখানে মাহমুদউল্লাহ সফল। বিশ্বকাপে প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো করতে পারেননি। শ্রীলঙ্কা সফরটা গেছে আরও বাজে। বাজে পারফরম্যান্সের সঙ্গে বাতাসে ভেসেছে আরও কিছু গুঞ্জন। পরে যদিও সংবাদমাধ্যমে খোলাসা করেছেন বিষয়টা। জানিয়ে দিয়েছেন, সাকিবকে জড়িয়ে তাঁর নামে যে কথা রটেছে, কোনোটিই সত্য নয়।
দুঃসময়ে এমন অনেক গুঞ্জনই হয়। মুখে হয়তো সে গুঞ্জন উড়িয়ে দেওয়া যায়। তবে দুঃসময় আর গুঞ্জন—একসঙ্গে উড়িয়ে দিতে চাই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভালো কিছু করতে যে মাহমুদউল্লাহ তৈরি, তাঁর ইনিংসই বলে দিচ্ছে। ৬৩ রানে ৪ উইকেট পড়ে গিয়েছিল মাহমুদউল্লাহর লাল দলের। ব্যাটিং বিপর্যয় থেকে দলকে রক্ষা করেছেন ২৮৩ মিনিট উইকেটে থেকে ১৮৯ বলে ১০৭ রানের এক উজ্জ্বল ইনিংস খেলে। ইনিংসে বাউন্ডারি ১০টি।
তাঁর কোনো স্কোরিং শটই সুযোগ দেয়নি বোলারদের। ঝুঁকি তিনি নিয়েছেন একবারই, আর তাতেই সুন্দর ইনিংসটার মৃত্যু। ডাউন দ্য উইকেটে এসে আরিফুল হকের লেংথ নষ্ট করতে চেয়েছিলেন, টাইমিং হয়নি। সানজিতের সহজ ক্যাচ হয়েছেন। এত ভালো ব্যাটিং করেছেন, তবুও আউট হওয়ার পর গজরাতে গজরাতে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ। হয়তো দিনটা শেষ করে আসার ইচ্ছে ছিল তাঁর। সেটি না হওয়ায় নিজের ওপরই রাগ ঝাড়লেন মাহমুদউল্লাহ।
ইনিংসের শেষটা নিয়ে মাহমুদউল্লাহ খুশি না হতে পারলেও তাঁর ব্যাটিং দেখে খুশি নির্বাচক হাবিবুল বাশার, ‘ওর জন্য খুব ভালো হয়েছে। প্রস্তুতি ভালো হয়েছে। এটা তাকে অনেক আত্মবিশ্বাসী করবে। খারাপ সময়ে একটু ভালো ইনিংস খেলতে পারলে আত্মবিশ্বাস অনেকখানি বাড়ে। খেলাটা দুই দিনের বলেই হয়তো শেষে ওই শট খেলেছে। না হলে মনে হয় না সে শটটা খেলত।’
গত কিছুদিনে ওয়ানডেতে তাঁর পারফরম্যান্স ভালো না হলেও গত এক বছরে মাহমুদউল্লাহই কিন্তু টেস্টে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান। ৬ টেস্টে ৫৭.১০ গড়ে ৩ সেঞ্চুরি ও ১ ফিফটিতে ৫৭১ রান করে আছেন সবার ওপরে। তাঁর ক্যারিয়ারের ৪ সেঞ্চুরির ৩টিই এসেছে এ সময়ে। তিনটি সেঞ্চুরি পেয়েছেন গত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি—তিন মাসের ব্যবধানে। হাবিবুল তাই বলছেন, ‘ওকে নিয়ে আমাদের সংশয় কখনোই ছিল না। গত এক বছরে দেখেন টেস্টে তার গড় ৫০-এর ওপরে। তবে গত কিছুদিন খারাপ সময় যাচ্ছিল বলে প্রস্তুতি ম্যাচের ইনিংসটা তাকে সামনে আরও ভালো করতে সহায়তা করবে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সে আত্মবিশ্বাসী হয়েই মাঠে নামবে।’