আরেকটি আইপিএল নিলাম সামনে। ব্যাপারটি এলেই মাশরাফি বিন মুর্তজার প্রসঙ্গটি সামনে চলে আসে। ২০০৯ সালে তাঁকে নিয়ে রীতিমতো দড়ি টানাটানি হয়েছিল নিলাম কক্ষে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ কোটিতে কলকাতা নাইট রাইডার্সে নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। আইপিএল নিলামে আর কোনো বাংলাদেশি ক্রিকেটারের দরই তাঁর চেয়ে বেশি ওঠেনি।
তখন বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম লড়াইটার নাম দিয়েছিল ‘ব্যাটল অব বলিউড’। ইংরেজি পত্রিকা ডেইলি স্টার একটা কার্টুনও করেছিল। একদিকে জুহি চাওলা, আরেক দিকে প্রীতি জিনতা দড়ি টানাটানি করছেন। মাঝে মাশরাফি বিন মুর্তজা! বলিউডের দুই নায়িকার টানাটানিতে ৬ লাখ ডলারে (প্রায় ৪ কোটি টাকা) উঠে গিয়েছিল তাঁর দাম। যেটি এখন পর্যন্ত আইপিএলের নিলামে বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ দর। এই অর্থে মাশরাফিকে পেয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স।
২০০৯ আইপিএলের নিলামে মাশরাফিকে নিয়ে দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি, বিশেষ করে বলিউডের দুই নায়িকার এই তুমুল আগ্রহ বেশ সাড়া ফেলেছিল ক্রিকেট বিশ্বে। যাঁকে নিয়ে এই আগ্রহ, তিনিও হয়তো অনেক আশা নিয়ে আইপিএল খেলতে গিয়েছিলেন। কিন্তু প্রত্যাশার পারদ যতটা ঊর্ধ্বমুখী ছিল, ততটাই বাজে হলো মাশরাফির আইপিএল-অভিজ্ঞতা।
১৬ মে জোহানেসবার্গে আইপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলেন মাশরাফি। ডেকান চার্জার্সকে ১৬১ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল কলকাতা। দ্বিতীয় ওভারে বোলিং করতে এসে মাশরাফি নিজের প্রথম ওভারেই দিলেন ১৫ রান। জিততে হলে ডেকানকে দরকার ছিল ৬ বলে ২১ রান। শেষ ওভারে বোলিং করার দায়িত্ব দেওয়া হলো ৩ ওভারে ৩৩ রান দেওয়া মাশরাফিকেই। শেষ ৪ বলে ১৮ রান তুলে ম্যাচ জিতিয়ে দিলেন রোহিত শর্মা। একটা ম্যাচেই শেষ হয়ে গেল মাশরাফির আইপিএল-অধ্যায়।
আসলেই কি শেষ? এখনো মাশরাফির কোনো আড্ডায় চলে আসে আইপিএল। আর আইপিএল প্রসঙ্গ এলেই চলে আসবে ৬ লাখ ডলারের কথা। মিরপুরে একটা ছয়তলা বাড়ি আছে মাশরাফির। ঢাকায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাটা তাঁর জমে এখানেই। অকপটেই বলেন, বাড়িটা তাঁর করা আইপিএলের টাকায়। মিরপুরে মাশরাফির নিজের ফ্ল্যাটের মতো এই বাড়িতেও সবার অবারিত দ্বার। নড়াইল থেকে নানা কাজে যাঁরা ঢাকায় আসেন, তাঁদের জন্য বাড়িটা ‘অলিখিত হোটেল’!
আর্থিক দিক দিয়ে আইপিএল থেকে মাশরাফির প্রাপ্তি মন্দ নয়। কিন্তু ২২ গজের প্রাপ্তিটা নিয়ে হয়তো কখনো আফসোসও ঝরে পড়ে অধিনায়কের মনে!