মাশরাফি বিন মুর্তজা ঘটনাটা মনে করতে পারেন কিনা, কে জানে! মনে করতে না পারলেও সমস্যা নেই। অসাধারণ এক ঘটনার সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে গেছে আজ থেকে ১৪ বছর আগে। সেটি এমন একটা ঘটনা, ক্রিকেট ইতিহাসে যার নজির আর নেই।
ক্রিকেটে বাবা-ছেলের গল্প কম নেই। বিখ্যাত বাবার পথ অনুসরণ করে অনেকেই ক্রিকেটে এসেছেন। কেউ কেউ বাবার নাম রাখতে পেরেছেন, কিংবা নিজের যোগ্যতা দিয়েই বাবার কীর্তিকেও ছাড়িয়ে গেছেন। বাবার খ্যাতির বিড়ম্বনায় ছেলের ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ইতিহাসও আছে। আবার আছে ক্রিকেটার বাবাকে অনুকরণ না করে পুরোপুরি ভিন্ন পেশায় বিখ্যাত হওয়ার কাহিনি।
মাশরাফি ক্রিকেট ইতিহাসের বিখ্যাত এক ‘বাবা-ছেলে’ ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে। তাঁর বলেই যে আম্পায়ার বাবা আঙুল তুলেছিলেন ব্যাটসম্যান ছেলের বিরুদ্ধে। ক্রিকেট মাঠে আম্পায়ার বাবা ছেলেকে আউট ঘোষণা করছেন, এমন ঘটনা আর নেই। ক্রিকেট ইতিহাসের এ ঘটনা একমেবাদ্বিতীয়ম।
২০০৬ সালে কেনিয়া সফরে যায় বাংলাদেশ। ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক মানচিত্র থেকে কেনিয়া প্রায় হারিয়ে গেলেও এক সময় এই কেনিয়াই ছিল বাংলাদেশের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী। নাইরোবি জিমখানায় ২০০৬ সালের ১৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে বাংলাদেশ জিতেছিল ২ উইকেটে। প্রথমে ব্যাটিং করে কেনিয়া স্কোরবোর্ডে ১৮৪ রান তুললে, বাংলাদেশ সে রান টপকে যায় ৮ উইকেট হারিয়ে। ম্যাচটিতে অন্যতম আম্পায়ার ছিলেন কেনিয়ারই সুভাষ মোদী। তিনি ছিলেন কেনিয়ার সাবেক ক্রিকেটার হিতেশ মোদীর বাবা। ১৪তম ওভারে মাশরাফি হিতেশের বিপক্ষে এলবিডব্লুর আবেদন করেন। সঙ্গে সঙ্গেই সুভাষ আঙুল তুলে জানিয়ে দেন নিজের সিদ্ধান্ত।
পরে এ ঘটনাটি নিয়ে হিতেশ বলেছিলেন, ‘বাবা আবেদনের সময় কোনো দ্বিধায় ভোগেননি আমাকে আউট ঘোষণা করতে। তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, যেহেতু আমি খেলছিলাম, তাই বাবার ওই ম্যাচে আম্পায়ার না হলেই পারতেন। তিনি অবশ্য আইসিসির মনোনীত আম্পায়ার ছিলেন।’
ক্রিকেটে ছেলের বিরুদ্ধে বাবার সিদ্ধান্ত অবশ্য আরও একটি আছে। এই তো কিছুদিন আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে বাজে ভাষা ব্যবহারের জন্য ছেলে স্টুয়ার্ট ব্রডকে জরিমানা করেছিলেন ম্যাচ রেফারি বাবা ক্রিস ব্রড। ছেলে অবশ্য এর কিছুদিন পর কিছুটা কপট অভিমান করে বলেছিলেন বাবা ক্রিসকে তিনি এ বছরের বড়দিনের উপহারের তালিকা থেকে বাদ দেবেন।
১৪ বছর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের পর হিতেশ বাড়ি ফিরে বাবা সুভাষকে কি বলেছিলেন?