শতকের পর সিমন্স
শতকের পর সিমন্স

এবারের বিপিএলে প্রথম শতক

মাশরাফিদের বিপক্ষে ঝড় তুলে ৫৯ বলে শতক সিমন্সের

ইবাদত হোসেন যখন ১৮তম ওভারটা করতে যাচ্ছেন, লেন্ডল সিমন্স তার অনেক আগেই এখন পর্যন্ত এবারের বিপিএলের সর্বোচ্চ ইনিংসের মালিক হয়ে গেছেন। তখন অপেক্ষা ছিল সিলেট সানরাইজার্সের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের শতকের।

আগের সর্বোচ্চ ছিল মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার বিপক্ষে খুলনা টাইগার্সের রনি তালুকদারের ৪২ বলে ৬১। আজ সেই ঢাকার বিপক্ষেই ১৩তম ওভারেই সেই অঙ্ক পেরিয়ে গেছেন, নিজের ইনিংসের ঠিক ৪২তম বলে ২ রান নিয়ে তাঁর রান হয়েছিল ৬৩।

ইবাদতের করা ১৮তম ওভার শুরু হওয়ার সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ব্যাট করছিলেন ৫৬ বলে ৯৩ রানে। ইবাদতের ওভারের প্রথম বলটি ব্যাটে-বলে হলো না। পরের বলেই এক্সট্রা কাভার দিয়ে চারে ৯৭ হয়ে গেল সিমন্সের।

১৪টি চার ও ৫টি ছক্কা মেরেছেন সিমন্স

বাকি তিন রানের জন্য অপেক্ষা? কীসের কী! পরের বলে পুল করে শর্ট ফাইন লেগ সীমানাছাড়া করলেন, সেই চারে ৫৯ বলেই হয়ে গেল তাঁর শতক! এবারের বিপিএল দশম ম্যাচে এসে দেখল প্রথম শতক।

কী দারুণ এক শতকই না হাঁকালেন সিমন্স! শুরুতে গুছিয়ে নিতে একটু সময় লেগেছে। সময় বলতে ঠিক ১০টি বল আর কী! প্রথম ১০ বলে তাঁর রান ছিল ৬, রুবেল হোসেনের করা চতুর্থ ওভারের শেষ দুই বলে দুই চার মেরে শুরু সিমন্স-ঝড়ের।

পরের ওভারে আন্দ্রে রাসেলের পাঁচ বল খেলে তিনটি চারসহ নিলেন ১৪ রান, তাতে পাওয়ার প্লে-র ষষ্ঠ ও শেষ ওভারে অন্য উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান এনামুল হক ফিরে গেলেও পাওয়ার প্লে শেষে সিলেটের রান ৫০!

নিজের বলে দারুণ ক্যাচ নিয়ে একটি উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি

মাঝে তিনে নামা মোহাম্মদ মিঠুন আর চারে নামা কলিন ইনগ্রাম এলেন আর গেলেন, কিন্তু ঢাকার কাঁটা হয়ে থেকে গেলেন সিমন্সই। দশম ওভারের তৃতীয় বলে কায়েস আহমেদকে সীমানার বাইরে আছড়ে ফেলে নিজের প্রথম ছক্কাও হয়ে গেল তাঁর।

পরের ওভারে আন্দ্রে রাসেলের ওপর আবার ঝড়, এবার রাসেলের পাঁচ বলে টানা দুটি চারের পর একটি ছক্কা! দ্বিতীয় চারে তাঁর ইনিংসে অর্ধশতকও হয়ে গেল। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৬০তম অর্ধশতক সিমন্স পেলেন ৩৪ বলে, ৮ চার ও ১ ছক্কায়।

কিন্তু সেখানেই থামার কোনো লক্ষণ থাকলে তো! কখনো কায়েস তো কখনো রুবেলের বলে চার মেরেছেন। আবার এদিকে ১৪তম ওভারে কায়েস আহমেদকে লং অনে ছক্কা মারার পরের ওভারে ছক্কা শুভাগত হোমের বলে।

প্রথম ৫০-এ পৌঁছাতে যেখানে ৩৪ বল লেগেছে, দ্বিতীয় ৫০-এ সিমন্স পৌঁছেছেন ২৫ বলে। এই ৫০-এ চার ৪টি, ছক্কা ৩টি।

সিমন্স ছাড়া সিলেটের কোনো ব্যাটসম্যান তেমন রান পাননি

তাঁর শতক যখন হচ্ছে, তখনো ১৭.৩ ওভারে সিলেটের রান ৪ উইকেটে ১৪৩। শতকের পর তাই আরও হাত খুলে মারতে চেয়েছিলেন সিমন্স। খুলেছিলেনও। রাসেলের করা ১৯তম ওভারের প্রথম দুই বলে দুই চারের পর তৃতীয় বলে ছক্কা! কিন্তু চতুর্থ বলেই আবার ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে তামিম ইকবালের হাতে ধরা পড়লেন।

আউট হওয়ার আগে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন ৬৫ বলের ১৪ চার ও ৫ ছক্কার ১১৬ রানের ইনিংসে।

সিমন্সের বাইরে সিলেটের ইনিংসে আসলে বলার মতো কিছু নেই। এনামুল হক (১৮), রবি বোপারা (১৩) ও অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন (১৩) কিছু রান করেছেন। তাতে ২০ ওভার শেষে সিলেট করতে পেরেছে ৫ উইকেটে ১৭৫ রান।

ঢাকার বোলারদের মধ্যে সিমন্সের ঝড়ের শিকার সবচএয়ে বেশি হয়েছেন আন্দ্রে রাসেলই। ৩ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে শেষ পর্যন্ত সেই সিমন্সকেই আউট করেছেন, এ-ই যদি রাসেলের সান্ত্বনা হয়! মাশরাফি বিন মুর্তজা ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন ইনগ্রামের উইকেট। কায়েস আহমেদ ও ইবাদত হোসেন পুরো ৪ ওভার বোলিংয়ে ১টি করে উইকেট নেওয়ার বিপরীতে রান দিয়েছেন যথাক্রমে ২৬ ও ২৯।