এশিয়া কাপের ফাইনালে বড়রা পারেননি। ভারতের কাছে হেরে আরও একবার আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে মাশরাফিদের। বড়দের সেই আক্ষেপ হয়তো পুরোপুরি দূর করতে পারবেন না, তবে ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ দেওয়ার সুযোগ তৌহিদ হৃদয়দের সামনে। কদিনের ব্যবধানে কাল আবারও বাংলাদেশ-ভারত লড়াই। পার্থক্যটা হচ্ছে এবার অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে। আর ম্যাচটা ফাইনাল নয়, সেমিফাইনাল। মাঠটা দুবাই নয়, মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম।
বাংলাদেশ যুবাদের অধিনায়ক তৌহিদ হৃদয় আশা প্রকাশ করলেন, বড়দের এশিয়া কাপ ফাইনালের একটা প্রতিশোধ ছোটদের আঙিনায় নেওয়ার, ‘অবশ্যই আমরা আমাদের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করব। সেমিফাইনালে জেতা অনেক বড় অর্জন হবে। ভারতকে হারাতে পারলে সেটা বড় খবর হবে, সবাই অনেক খুশি হবে।’
অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের প্রথম সেমিফাইনালের আগের দিন দুই দলকে প্রতিপক্ষ নয়, নিজেদের নিয়েই বেশি মনোযোগী দেখাল। টানা তিন জয়ে শেষ চার নিশ্চিত করা ভারতকে সেটা মানায়। প্রথম দুই ম্যাচে নেপাল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে করেছে ৩০৪ ও ৩৫৪ রান। সেঞ্চুরি করেছেন তিন ব্যাটসম্যান। উল্টো দিকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পাকিস্তানের ১৮৭ তাড়া করে ১৯১ রান। ওই ম্যাচেই শামীম হোসেনের ৬৫ রান বাংলাদেশি কোনো ব্যাটসম্যানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। ব্যাটসম্যানরা যে বড় রান করতে পারছেন না আর তাতে যে দলের রান ২০০ পেরোচ্ছে না, সেটা চিন্তার বিষয়। অধিনায়ক হৃদয়ও সেটা মানেন, ‘বড় ইনিংস খেলতে না পারলে রান বড় হচ্ছে না। আমাদের বড় ইনিংস অবশ্যই খেলতেই হবে।’
শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে পারবেন তো তাঁরা? হৃদয়ের কথা হচ্ছে, ‘আসলে অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে খুব বেশি পার্থক্য থাকে না। আমি এর আগেও ভারতের সঙ্গে খেলেছি। অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, অনূর্ধ্ব-১৯ ম্যাচে প্রায় দলগুলোই সমান। আমরা এর আগের এশিয়া কাপে ভারতকে হারিয়েছিলাম।’
কাল যদি ভারতকে হারাতে পারে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল, প্রথমবারের মতো যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠে যাবে তারা। বাংলাদেশ যুব দলের অধিনায়কের স্বপ্ন আপাতত এটাই, ভারত-বাধা টপকে উঠে যেতে চান ফাইনালে। আর সেটি তিনি যেতে চান বোলারদের ওপর ভরসা করে, ‘আমাদের যে বোলিং লাইনআপ, আমাদের বিপক্ষে রান করা একটু কঠিন। বোলাররা এখন পর্যন্ত যে বোলিংটা করেছে, সেটা ধরে রাখতে পারলেই আমাদের বিপক্ষে রান করা সহজ হবে না।’
বাংলাদেশ এদিকে ভারত-বধে ছক আঁটছে, ওদিকে প্রতিপক্ষ তাদের যেন পাত্তাই দিচ্ছে না! ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ওপেনার আর এবারের এশিয়া কাপে এখন পর্যন্ত তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের (১৫১) মালিক দেবদূত পাড়িক্কালের কথা শুনে তাই মনে হবে, ‘আমাদের কোনো পরিকল্পনা নেই। কেননা, আমরা জানিই না বাংলাদেশ কেমন খেলে।’
বাংলাদেশ কেমন খেলে, সেটির প্রমাণ হয়ে যাবে কাল। এখন হৃদয়রা আরেকটি আফসোসের গল্প লিখবেন, নাকি সাফল্যের, সেটিই হচ্ছে কথা।