>কাল জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মাসাকাদজা। বিদায়ী ম্যাচের সংবাদ সম্মেলনে এসে ফিরে দেখলেন ফেলে আসা ক্যারিয়ারটা। আর তার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জিম্বাবুয়ে অধিনায়কের মনে পড়ল বন্ধু মাশরাফিকেও
কাল সকালে যখনই হ্যামিল্টন মাসাকাদজার মনে পড়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আজই তাঁর শেষ—চোখ বেয়ে নেমে এসেছে অশ্রুর ধারা। মাসাকাদজা অশ্রুসিক্ত হয়েছিলেন সেদিনও, যেদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায়ের সিদ্ধান্ত জানালেন দলকে।
বিদায়ী ম্যাচে অবশ্য তাঁকে আবেগ স্পর্শ করেনি খুব একটা। শেষটা রাঙানোর প্রত্যয়ে ৪২ বলে ৭১ রানের ইনিংস খেলে প্রথমবারের মতো (৯ বারের দেখায়) আফগানদের বিপক্ষে জিম্বাবুয়েকে এনে দিয়েছেন জয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের শেষ ম্যাচ, শেষ ইনিংসটা খেলার আগে পেয়েছেন ‘গার্ড অব অনার’। নেমেছেন বিশেষ জার্সি পরে। ম্যাচের পর পেয়েছেন বিসিবির বিশেষ সম্মাননা আর স্মারক উপহার। উপহার নিয়েই মাসাকাদজা এসেছেন সংবাদ সম্মেলনে।
উপহারের একটি হচ্ছে ফ্রেমে বাঁধানো ক্যারিয়ারের কিছু মুহূর্ত, সেখানে লেখা ‘থ্যাংকস মুধারা হ্যামি।’ জিম্বাবুয়ের আঞ্চলিক ভাষায় মুধারা মানে ‘পরিণত’। মাসাকাদজা এই ডাক নাম পেয়েছেন ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই, মাত্র ১৭ বছর বয়সে। ক্যারিয়ারের উষালগ্নে মুগ্ধ করেছিলেন পরিণত ব্যাটিংয়ে, নামের সঙ্গে মিল রেখে শেষটাও করলেন একইভাবে।
বাংলাদেশকে তিনি মনে করেন ‘দ্বিতীয় বাড়ি’। ক্রিকেটের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা মাসাকাদজাকে ভীষণ মুগ্ধ করে। এখানে অবশ্য তিক্ত-আনন্দ দুই স্মৃতিই আছে তাঁর—
* তিক্ত স্মৃতি:
‘প্রথমবারের মতো এখানে আমরা যখন টেস্ট সিরিজ হারলাম (জানুয়ারি ২০০৫, বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সিরিজ জয় যেটি)। তখন বাংলাদেশ এখনকার মতো শক্তিশালী দলে পরিণত হয়নি। ওই হার ছিল আমার ক্যারিয়ারের খুব তিক্ত একটা অভিজ্ঞতা।’
* সুখ স্মৃতি:
‘ঢাকা লিগে খেলা। যে ক্লাবে খেলেছি, সে ক্লাবে জড়িয়ে থাকা মানুষগুলোর সঙ্গে পরিচয় হওয়া। সবচেয়ে আনন্দদায়ী স্মৃতি হচ্ছে মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গে ক্লাব ক্রিকেট খেলা। আমার মনে হয় তার গল্প অনেকেই জানে না। সে কিসের মধ্যে দিয়ে গেছে, সেটা জানে না। একবার আমি মাশরাফিকে বলেছিলাম, তোমার জীবন নিয়ে একটা বই লেখা উচিত। এটা সত্যি অনুপ্রেরণাদায়ী হবে। এই মানুষটা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে যা দিয়েছে সেটা অনেকে হয়তো জানে না। তার সঙ্গে সময় কাটানো আমার জীবনের অন্যতম আনন্দদায়ী স্মৃতি।’
মাসাকাদজা বিদায়ও নিলেন হাসিমুখে। নিজে দুর্দান্ত খেলেছেন, দল জিতেছে। ভীষণ সম্মান আর ভালোবাসা নিয়ে ছেড়েছেন মাঠ—একজন খেলোয়াড়ের কাছে এটাই তো অনেক বড় পাওয়া।