>বিশ্বকাপে সময়টা ভালো যাচ্ছে না মাশরাফি বিন মুর্তজার। বাংলাদেশ অধিনায়কের খারাপ সময়ে তাঁকে নিয়ে ধৈর্য ধরতে বলেছেন মোহাম্মদ আশরাফুল।
একসময় দুজন ছিলেন জাতীয় দলের সতীর্থ। ২০০১ সালে প্রায় কাছাকাছি সময়েই জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক দুজনের। একসঙ্গে জাতীয় দলে খেলেছেন অনেক দিন। জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। মাশরাফি বিন মুর্তজা বর্তমান অধিনায়ক । দুজনই ভালো বন্ধু। কিন্তু সময় এই দুজনকে দুই জায়গায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। ম্যাচ ফিক্সিং-কাণ্ডে নিষিদ্ধ হয়ে ক্রিকেট ক্যারিয়ারটাই প্রায় শেষ হয়ে গেছে আশরাফুলের। মাশরাফি নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। তবে এবারের বিশ্বকাপে যখন মাশরাফি ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নিয়ে সমস্যায় আছেন, তখন বন্ধুর মতোই পাশে দাঁড়ালেন আশরাফুল। মাশরাফির ব্যাপারে সবাইকে ধৈর্য ধরতে বলেছেন তিনি।
২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত তিনটি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে শুরু করা বাংলাদেশ শেষ দুই ম্যাচে হেরেছে নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ ম্যাচটি ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে বৃষ্টি। ঠিক ছন্দে নেই মাশরাফি। তিন ম্যাচের মধ্যে কেবল ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই ১০ ওভারের কোটা পূরণ করেছেন। ইংলিশদের বিপক্ষে ৬৮ রান দিয়ে উইকেট পেয়েছেন ১টি। এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টান টান উত্তেজনার ম্যাচে ৫ ওভার বল করে ৩২ রান দিয়ে পাননি কোনো উইকেট। উইকেটশূন্য ছিলেন প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের দিনেও। সেদিন আবার ৬ ওভারে রান দিয়েছিলেন ৪৯।
অধিনায়কের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স ভালো না হলে সমালোচনা হবেই। মাশরাফির শরীরে তাই বিঁধছে নানা ধরনের সমালোচনার তির। এ অবস্থায় সবাইকে মাশরাফির ব্যাপারে একটু ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন আশরাফুল, ‘প্রথম ম্যাচে আমরা জিতেছি। সেখানে অতটা অবদান রাখতে পারেনি মাশরাফি। ওর ফিটনেসটা আগের চেয়ে একটু কমেছে। আমার কাছে মনে হয় আগে রানআপটা আরও দ্রুত ছিল। এই বিশ্বকাপে একটু কমেছে। এই দুই–তিনটা ম্যাচে হয়তো সেটিই সবার চোখে পড়েছে। তবে রান কিন্তু বেশি দেয়নি সে। এ ছাড়া শেষ ম্যাচে ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছে। পুরো ১০ ওভার বল করেছে। ওকে নিয়ে আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে।’
মাশরাফির নেতৃত্বে সেমিফাইনাল খেলার লক্ষ্য নিয়ে ইংল্যান্ডে গেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ দলও যথেষ্ট ভালো। অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে অনেক দেশের চেয়েও এগিয়ে। আশরাফুল এ ব্যাপারে একমত হলেও দলের বোলিংয়ে দুর্বলতা দেখছেন তিনি। সে কারণেই সেমিফাইনালে খেলাটাকে একটু কঠিন মনে করেন তিনি, ‘আমাদের দল অসাধারণ। যতগুলো বিশ্বকাপ খেলেছি, এটাই আমাদের সেরা দল। তবে বোলিংটা দুর্বল। এটা মানতেই হবে। সে কারণে শীর্ষ চারে খেলাটা একটু কঠিন। যে ধরনের উইকেটে খেলা হচ্ছে, এই উইকেটে আমাদের বোলারদের জন্য রান কম দেওয়া খুব কঠিন কাজ। অন্যান্য দলের বোলাররাও প্রচুর রান দিচ্ছে।’
তাঁর আরেক সাবেক সতীর্থ সাকিব আল হাসানকে এবার বেশ অন্য রকম মনে হচ্ছে আশরাফুলের, ‘এবার সাকিব অনেক বেশি ইনভলভড। মাশরাফিকে সে খুব ভালো সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এটা খুব ভালো দিক।’
পরের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচটিকে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের টার্নিং পয়েন্ট মনে করেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের চেয়ে এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ বেশি বিপজ্জনক। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে আমরা তাদের সব জায়গায় হারিয়েছি। কিন্তু এখন দলে সাত-আটজন নতুন যোগ দিয়েছে। ক্রিস গেইল, আন্দ্রে রাসেল, হেটমায়ার এসেছে। তারা খুব আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ও বোলিং করছে। নিউজিল্যান্ডের মতো দলের বোলিংয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ৪২১ রান করেছে। বোঝাই যাচ্ছে তারা খুব আক্রমণাত্মক মানসিকতা নিয়ে বিশ্বকাপে এসেছে।’