এউইন মরগানের স্মৃতিতে ওই ম্যাচটা এখনো টাটকা। মাত্রই তো দুই সপ্তাহ আগের কথা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই হারতে হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে, বলা ভালো, ক্রিস গেইলের কাছে। তখন কি ভেবেছিলেন, ‘প্রতিশোধ’ নেওয়ার সুযোগটা পেয়ে যাবেন চূড়ান্ত মঞ্চেই?
ইডেন গার্ডেনের ফাইনালের আগে কাল সংবাদ সম্মেলনে ইংলিশ অধিনায়ক অবশ্য প্রতিশোধের কথাটা সরাসরি বলেননি। তবে ফাইনাল বলেই এই ম্যাচটা যে অন্য রকম সেটি তো তাঁকে মানতেই হয়, ‘আমরা জানি, এই ম্যাচটা আর দশটা ম্যাচের মতো হবে না। এমনকি সেমিফাইনালের আগেও ফাইনাল নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা হচ্ছিল। আমি চাই, খেলোয়াড়েরা নিজেদের উজ্জীবিত করুক। হয়তো আজ সবাই একটু চাঙা থাকবে। তবে যখন দরকার, আমাদের উত্তেজনাটা কমিয়ে আনতে হবে। নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করতে হবে।’
১২ মাস আগেও এই দিনের কথা হয়তো মরগানের সুদূরতম কল্পনাতেও ছিল না। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডকে অচল বলেই রায় দিয়ে দিয়েছিলেন অনেকে। মরগান নিজেই তো এত দূর ভাবেননি, ‘১২ মাস আগের চেয়ে এখনকার পরিস্থিতি একেবারেই অন্য রকম। সত্যি বলতে কী, এটা বিশ্বাস করা একটু কঠিনই। আমি কখনোই ভাবিনি, এত দ্রুত আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব। বা দাঁড়ালেও সেটা এমন হবে।’ কিন্তু এই ঘুরে দাঁড়ানো ইংল্যান্ডের রহস্য কী? মরগান নিজেদের বদলে যাওয়া মানসিকতাকেই বড় করে দেখছেন, ‘সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে খেলোয়াড় ও নেপথ্যের স্টাফদের সবার মানসিকতায় একটা পরিবর্তন এসেছে। কালকে (আজ) সেই বদলে যাওয়ার একটা ফল দেখার সুযোগ আমাদের সামনে। খুবই রোমাঞ্চিত। আমি গর্বিত। খুবই, খুবই গর্বিত।’
কিন্তু ইংল্যান্ডের সেই পালাবদলে শুভ সমাপ্তি টানার পথে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় বাধা তো একজনই, গেইল। গ্রুপ পর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওপেনার অমন অতিমানবীয় হয়ে দাঁড়াতেই তো ইংল্যান্ডের ১৮৩ রানও হয়ে গেল সামান্য। তবে সেমিফাইনালে ভারতের সঙ্গে ম্যাচের পর শুধু গেইল-জুজুতে সন্ত্রস্ত হয়ে থাকাটাও বোকামি। মরগান সেটাই মনে করিয়ে দিলেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে আমাদের গ্রুপ ম্যাচের আগেই বলেছিলাম, গেইল মানেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ নয়। একটা ভালো দলের বিপক্ষে খেললে এক বা দুজনকে গুরুত্ব দেওয়াও উচিত নয়। যে কেউই ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। আমার মনে হয়, ভারতও সেটা দেখেছে, যারা আগের ম্যাচটা দেখেছে তারাও এটার সাক্ষী।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কখনো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে পারেনি ইংল্যান্ড। শুধু গেইলরা নয়, ইতিহাসও আজ ইংলিশদের সামনে বাধা। মরগান অবশ্য অতীত নিয়ে আচ্ছন্ন নন, ‘আমার মনে হয় না এটা বড় কোনো ব্যাপার হবে। আমার মনে হয়, এটা পুরোপুরি আলাদা দুটি দল। আর আমরাও প্রথম ম্যাচের পর একটু একটু করে উন্নতি করেছি। তাই ওই ম্যাচের সঙ্গে ফাইনালের তুলনা করা কঠিন।’
ইডেন গার্ডেন মরগানের নিজের কাছেও চেনা। কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে এখানে দুই মৌসুম আগেও খেলেছেন। দল ভালো খেললেও নিজের ব্যাট এখনো সেভাবে হাসছে না। আজ চেনা ইডেনেই মরগান হয়তো সব অতৃপ্তি ঘোচাতে চাইবেন।