>২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হারার দিনকে ক্যারিয়ারের ‘সবচেয়ে বাজে দিন’ বলেই মনে করেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক এউইন মরগান
জেমস অ্যান্ডারসনকে ইয়র্কার মেরেছিলেন রুবেল হোসেন। ছত্রখান উইকেট, জয়ের আনন্দে তাঁর ভোঁ দৌড়। দেশের সেই হার ধারাভাষ্যকক্ষে বসেই দেখেছেন সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেইন। তখন তাঁর কথাগুলো অনেকের মনে থাকার কথা। বাংলায় সে কথার অর্থ দাঁড়ায়—‘বাংলার বাঘেরা ইংলিশ সিংহদের বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে দিল। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরা দিন।’
এটি ২০১৫ বিশ্বকাপের স্মৃতি। গ্রুপপর্বে আগেই তিন ম্যাচ হেরে ছিটকে পড়ার শঙ্কায় ছিল ইংল্যান্ড। শঙ্কা নিয়েই তারা মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশের। আর বাংলাদেশ ওই ম্যাচটা জিতলে নাম লেখাত কোয়ার্টার ফাইনালে। সে ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১৫ রানে হারিয়ে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশই উঠেছিল নকআউটপর্বে। খুব স্বাভাবিকভাবেই তাই ওই দিনটা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরা হলে ইংল্যান্ডের জন্য তা অবশ্যই বাজে দিন। ইংলিশ অধিনায়ক এউইন মরগান জানালেন সেটিই।
এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেবেন মরগান। বাংলাদেশের কাছে অ্যাডিলেডের সে হার আজও ভোলেননি তিনি। ইএসপিএনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, সে দিনটি ছিল তাঁর ‘ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে দিন’।
২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে অনেকটাই পাল্টে গেছে বাংলাদেশ দল। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমীহ আরও বেড়েছে। কিন্তু গত বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশকে অতটা শক্তিশালী মনে করতেন না বিশ্লেষকেরা। অন্তত অস্ট্রেলিয়ান কন্ডিশনে ইংল্যান্ডকে হারানোর মতো শক্তি বাংলাদেশের নেই, বলেই মনে করা হয়েছিল। কিন্তু পাশার দান উল্টে দিয়ে ম্যাচটা জিতে শেষ আটে উঠে যায় বাংলাদেশ।
আরেকটি বিশ্বকাপ যখন দুয়ারে, আর প্রসঙ্গ যখন ইংল্যান্ড, তখন সে ম্যাচটি ঘুরে ফিরে আসবেই। সে ম্যাচটি হেরে ইংল্যান্ড দল মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়েছিল বলে জানিয়েছেন মরগান, ‘নকআউট পর্বে ওঠার আগে বিদায় নেওয়াটা ছিল বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়ার মতো।’ বাংলাদেশের কাছে হারের সেই ধাক্কা সামলে উঠতে অনেক সময়ই লেগেছে ইংল্যান্ডের। মরগান নিজেই জানালেন সে কথা, ‘অনেক সময়ই লেগেছে। বাটলার-ওকসরা ম্যাচটা খুব ভালোভাবেই মনে রেখেছে। কারণ ওই হার সব সময় মনে করিয়ে দেয়, কখনোই খুব ভালো হয়ে ওঠা যায় না। আপনাকে সব সময় শিখতে হবে। ভীষণ হতাশার সেই বিশ্বকাপের পরই আমরা সবকিছু আকস্মিক পাল্টে ফেলার সিদ্ধান্ত নেই।’
২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে ওয়ানডে খেলার ধাঁচ রাতারাতি পাল্টে ফেলে ইংল্যান্ড। বিশেষ করে তাদের ব্যাটিং কতটা পাল্টেছে পরিসংখ্যানেই সেই প্রমাণ মেলে—সবশেষ বিশ্বকাপের আগে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে ৩৪ ইনিংসে ৩০০-র বেশি রান তুলেছিল দলটি। কিন্তু বিশ্বকাপের পর এই চার বছরে ইংল্যান্ড সেই একই কাজ করেছে ৩৮ বার! এবার ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে প্রতিটি দল একে-অপরের মুখোমুখি হবে, তাই নকআউট পর্বের আগেই গতবারের হারের শোধ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে মরগানের দল।
ইএসপিএনের সঙ্গে মরগানের আলাপচারিতার ভিডিও লিংক: