বিশ্বে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ভারত। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। বেড়ে গেছে মৃত্যু। করোনা পরিস্থিতির কারণে এরই মধ্যে মাঝপথে স্থগিত হয়ে গেছে আইপিএল। অথচ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্বটা ভারতের। আগামী ১৮ অক্টোবর ভারতেই আয়োজিত হওয়ার কথা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
করোনা পরিস্থিতি সামাল দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করতে মরিয়া বিসিসিআই (ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড)। তবে ভারতের এমন পরিস্থিতিতে স্বাগতিক হওয়ার ব্যাপারটা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার মাইক হাসি। তাঁর এভাবে ভারতের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য আবার পছন্দ হয়নি সুনীল গাভাস্কারের।
আইপিএল স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর বিদেশি ক্রিকেটাররা ফিরে গেছেন যাঁর যাঁর দেশে। আইপিএলে এবার চেন্নাই সুপার কিংসের ব্যাটিং কোচ ছিলেন হাসি। আইপিএল স্থগিত হওয়ার পর ভারতে থাকা অবস্থায় করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরপর দেশে ফিরে গিয়ে বলেছেন, ভারতের যে অবস্থা তাতে বিশ্বকাপ আয়োজন সম্ভব নয়, ‘এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে আমার মনে হয়, ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করা খুব কঠিন। আমরা আইপিএলে আট দল দেখেছি। বিশ্বকাপেও এমন সংখ্যক লোক থাকবে। হয়তো আরও বেশি দল আসবে দেশের বাইরে থেকে। আর বেশি ভেন্যুতে খেলা হবে। আমি আগেও বলেছিলাম, যখন আলাদা আলাদা শহরে খেলা হয়, তখনই ঝুঁকি বেড়ে যায়।’
হাসির এমন মন্তব্যে বেজায় চটেছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কার। হাসিকে এক হাত নিয়ে বললেন, যখন ভারতীয় দল অস্ট্রেলিয়ায় ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট সিরিজ খেলতে গিয়েছিল, তখন অস্ট্রেলিয়াতেও করোনা সংক্রমণ বাড়ছিল, তখন কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু ভারতে খেলতেই যত সমস্যা! হাসির ওপর ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন, ‘যখন টাকার ঝনঝনানি শোনানো ভারত সফর চলছিল, তখন তো অস্ট্রেলিয়ায় করোনা আক্রান্ত শহরেও খেলা হয়েছিল। তখন তো কারও মধ্যে কোনো অনুতাপের ছিটেফোঁটা দেখা যায়নি। হোক না সেটা কয়েক শ বা কয়েক লাখ (ভারতের ক্ষেত্রে), অস্ট্রেলিয়ায় কিন্তু কেউ বলেনি যে ভারতের সফরটা বাতিল হওয়া উচিত।’
স্পোর্টস্টারের কলামে গাভাস্কার বলেছেন, ভারত যেমন সে সময় অস্ট্রেলিয়ার সিদ্ধান্তকে সম্মান দেখিয়েছে, তেমন সম্মান তাদেরও প্রাপ্য, ‘যার বিশ্বকাপ ভারত থেকে সরিয়ে নিতে চাইছি, তাদের কাছ থেকে সহমর্মিতা আশা করছি। আগস্টের মধ্যে যদি পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে নেওয়া হোক। কিন্তু এখনই ঝাঁপিয়ে পড়ার দরকার নেই।’
আশার কথা, গত ৪৫ দিনের মধ্যে ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে কম করোনা শনাক্ত হয়েছে। কমেছে মৃত্যুর সংখ্যাও। এ সময়ের মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৯২১ জনের। আর মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৬১৭ জনের। অথচ চলতি মাসের শুরুতে দৈনিক সংক্রমণের শনাক্তের সংখ্যা রেকর্ড ৪ লাখ ১৪ হাজার হয়েছিল। করোনার শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমতে থাকায় আশা দেখছেন গাভাস্কার, ‘যখন মিস্টার ক্রিকেট নিজের দেশে রওনা হলেন, তখন বুঝতে পেরেছিলেন চলতি বছরের অক্টোবরে ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হচ্ছে না। হ্যাঁ, আমি মানছি যে ভারতে এখন ভয়ংকর দুঃসময় চলছে, কিন্তু বিশ্বকাপ শুরু হতে এখনো মাস চারেক বাকি আছে। প্রতিদিন টিকা নেওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। অনেক বেশি শহর আর রাজ্য করোনার বিস্তার রোধে কাজ করছে।’