এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখনো অপরাজিত পাকিস্তান। সুপার টুয়েলভে টানা চার ম্যাচ জিতে সবার আগে সেমিফাইনালের টিকিট কেটেছে বাবর আজমের দল। এ নিয়ে পাকিস্তানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ পুরো ক্রিকেট–বিশ্ব। কিন্তু এমন কীর্তির পরও পাকিস্তানকে শিরোপা জয়ে ফেবারিট ভাবছেন না অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার টম মুডি। ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররা এখনো পাকিস্তানকে নিরঙ্কুশভাবে ফেবারিট বলতে পারছেন না।
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে ভারতকেই সবচেয়ে ফেবারিট বলে এসেছে বেশির ভাগ মানুষ। সেই ভারতকে ১০ উইকেট হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছে পাকিস্তান। এরপর তারা নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান ও নামিবিয়াকে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে জায়গা করে নিয়েছে সেমিফাইনালে। চার ম্যাচেই ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে বাবরের দল ছিল দুর্দান্ত।
তবে ক্রিকেট পণ্ডিতদের কেউ কেউ এখনো পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ ফেবারিট বলার চেয়ে অন্যতম ফেবারিট বলতেই পছন্দ করছেন। তাদের কাছে ইংল্যান্ডই নিরঙ্কুশ ফেবারিট। এখনো সেমিফাইনাল নিশ্চিত না হলেও টানা চার ম্যাচ জিতেছে তারাও। চার ম্যাচেই ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছিল ইংল্যান্ডেরও।
টুর্নামেন্টের এ পর্যায়ে এসে নতুন করে ফেবারিটদের কথা বলতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অলরাউন্ডার টম মুডির কথা, ‘এ টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের পারফরম্যান্স এখন পর্যন্ত অসাধারণ। কিন্তু তাদের ফেবারিট বললে হয়তো ভুল করা হবে। ইংল্যান্ড যেভাবে খেলছে সেদিকে একটু নজর দিতে হবে।’
ভারতের সাবেক পেসার অজিত আগারকার পাকিস্তানে ‘অন্যতম ফেবারিট’ উল্লেখ করে বলেছেন, ‘আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে এবং তারপর দেখি কী হয়। বছরের পর বছর ধরে পাকিস্তানকে দেখে আসছি, তারা আবার তেমন (অননুমেয়) হয়ে যায় কি না, সেটা দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে।’
তবে এখন পর্যন্ত পাকিস্তান যে ক্রিকেট খেলেছে, তা ভালো লেগেছে আগারকারের, ‘তারা ভালো বোলিং করছে। ব্যাটিংটাও ভালো হয়েছে। সত্যি বলতে কি ফিল্ডিংও ছিল অসাধারণ। এরপরও আমার কাছে তার ফেবারিটদের একটি।’
ভারতের সাবেক ওপেনার গৌতম গম্ভীরের কাছে পাকিস্তানের বোলিং বিভাগটাই সবচেয়ে ভালো। তবে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং পাকিস্তানের চেয়ে অনেক ভালো বলেই মনে করেন তিনি। দুই দলের তুলনা টেনে গম্ভীর বলেছেন, ‘পাকিস্তান দেখিয়েছে শুধু বোলিং দিয়েও টুর্নামেন্ট জেতা যায়। তবে পাকিস্তানকে ফেবারিট বলাটা একটু কঠিনই। এখন পর্যন্ত যা দেখেছি, আমি ইংল্যান্ডের পক্ষেই বাজি ধরব।’
গম্ভীর পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে বেশি মুগ্ধ হয়েছেন হারিস রউফের বোলিং দেখে। মাঝের ওভারে এসে তাঁর বোলিং সত্যিই অসাধারণ হয়েছে বলে মনে করেন তিনি, ‘নতুন বলে বল করা সহজ। প্রথম ওভার বোলিং করাও সহজ। বিশেষ করে আপনি যদি সুইং করাতে পারেন। শাহিন শাহ আফ্রিদি তো নতুন বলে বোলিং করে। কিন্তু হারিস বোলিং করে মাঝের ওভারে আর শেষের দিকে। তার অসাধারণ বোলিংই এ টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের বোলিং বিভাগকে সেরা বানিয়েছে।’
ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএনের সিনিয়র এডিটর উসমান সামিউদ্দিন পাকিস্তানের আসল রূপ দেখার জন্য আরেকটু অপেক্ষা করতে চান, ‘আমার মনে হয় পাকিস্তান ব্যাটিংয়ের দিক থেকে একটু পিছিয়ে। সেমিফাইনালে গেলেই বোঝা যাবে পাকিস্তানের আসল অবস্থা আসলে কী।’