ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে আউট হওয়ার পর সুরঙ্গা লাকমলের পিঠ চাপড়ে দেন ভারতের খেলোয়াড়েরা
ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে আউট হওয়ার পর সুরঙ্গা লাকমলের পিঠ চাপড়ে দেন ভারতের খেলোয়াড়েরা

ভারতের দাপটে আড়াই দিনেই ছুটি মিলল করুনারত্নেদের

বেঙ্গালুরু টেস্টে ১ উইকেটে ২৮ রান নিয়ে কাল দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল শ্রীলঙ্কা। অবিশ্বাস্য কিছু না ঘটলে ম্যাচটা যে আজই শেষ হয়ে যাচ্ছে, বোঝা যাচ্ছিল।

জয়ের জন্য ৪৪৭ রানের লক্ষ্য—এই টেস্ট যে অন্তত ড্র হওয়ার সম্ভাবনা নেই, সেটাও পরিষ্কার। তবু প্রশ্ন ছিল, ভারতের মাটিতে গোলাপি বলের টেস্টে যে রেওয়াজ, শ্রীলঙ্কা কি তা কাটাতে পারবে? না, পারেনি।

আজ নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৮ রানে অলআউট হয়ে ২৩৮ রানে হেরেছে শ্রীলঙ্কা।

অর্থাৎ ভারতের মাটিতে গোলাপি বলে টেস্টে যে অলিখিত প্রথা, তা বজায় রইল। তার আগে একটি বিষয় খোলাসা করে নেওয়া ভালো। পাঁচ দিনের টেস্টে খেলা তিন দিনের মধ্যে শেষ হলে তা একটু আলাদা চোখে দেখা হয়। মানে, লড়াই ঠিক জমেনি।

২০১৯ সালে কলকাতায় প্রথম দিবা–রাত্রির টেস্টে স্বাগতিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃতীয় দিনে হেরেছিল বাংলাদেশ। সময়ের হিসাবটা ঠিক করে বলতে চাইলে সোয়া দুই দিনে হার বলা যায়।

শতক তুলে নেন করুনারত্মে

গত বছর আহমেদাবাদে ইংল্যান্ডের অবস্থা হয় আরও তথৈবচ। দুই দিনের মধ্যে হেরে ১৯৩৫ সালের পর জয়ের মীমাংসা হওয়া টেস্টগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ছোট টেস্টের জন্ম দেয় ইংল্যান্ড। আজ শ্রীলঙ্কা হারল তৃতীয় দিনে চা বিরতির পর।

অর্থাৎ ভারতের মাটিতে গোলাপি বলে তিন দিনের মধ্যে টেস্টের ফল মিলে যাওয়ার ধারা বজায় রইল।

বলের হিসাবে ভারতের মাটিতে দিবা–রাত্রির টেস্টে এটাই সবচেয়ে বড় ম্যাচ। আহমেদাবাদে ভারত–ইংল্যান্ড টেস্টের ফল মিলেছে ৮৪২ বলের মধ্যে, কলকাতায় ভারত–বাংলাদেশ ম্যাচের ফল এসেছে ৯৬৮ বলে আর বেঙ্গালুরু টেস্টে খেলা হয়েছে ১৩৪০ বল।

চিন্মাস্বামীর কঠিন উইকেটে স্রোতের বিপরীতে লড়ে শতক তুলে নেন দিমুথ করুনারত্নে। ১৭৪ বলে তাঁর ১০৭ রানের ইনিংসের প্রশংসায় রাসেল আর্নল্ডের টুইট, ‘যে কারও দেখা সেরা শতকগুলোর একটি...।’

৪ উইকেট নেন অশ্বিন

চা বিরতির আগেই ৩ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ৬৭ রান নিয়ে এক প্রান্ত ধরে রেখেছিলেন করুনারত্নে। কিন্তু বাকিদের কেউ তাঁকে সঙ্গ দিতে পারেননি। ওপেনার করুনারত্নের শতক, তিনে নামা কুশল মেন্ডিসের অর্ধশতকের (৫৪) পর নিচের সাতজনের মধ্যে শুধু ডিকভেলাই দুই অঙ্কে (১২) পৌঁছাতে পেরেছেন।

স্পিনাররা বড় বাঁক পেলেও ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন যশপ্রীত বুমরা। তবে ৫৫ রানে ৪ উইকেট নেওয়া অশ্বিন সেরা পারফরমার। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এ নিয়ে শত উইকেট নেওয়ার মাইলফলকের দেখা পেয়ে গেলেন অশ্বিন।

বিশ্ব ফার্নান্ডোর শেষ উইকেটটিও তাঁর। এর মধ্য দিয়ে জয় তুলে নেওয়া কোনো টেস্টে ২২তমবারের মতো প্রতিপক্ষের শেষ উইকেট নিলেন অশ্বিন। প্রয়াত স্পিন কিংবদন্তি শেন ওয়ার্নের রেকর্ডে ভাগ বসালেন এই বুদ্ধিমান অফ স্পিনার। ২ উইকেট নেন অক্ষর প্যাটেল।

ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কাকে এই প্রথমবারের মতো টানা চারটি টেস্ট সিরিজে হারাল ভারত। ২০০৫, ২০০৯ এবং এ বছরও ২–০ ব্যবধানে জিতল ভারত। মাঝে ২০১৭ সালে জয়ের ব্যবধানটা ছিল ১–০। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ইংল্যান্ডের কাছে হারের পর ঘরের মাঠে এ নিয়ে টানা ১৫টি সিরিজ জিতল ভারত।

ঘরের মাঠে টানা সিরিজ জয়ের ধারা বজায় রাখল ভারত

ঘরের মাঠে অন্য কোনো দল টানা ১০টির বেশি সিরিজ জিততে পারেনি। অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক টেস্ট সিরিজ জয়ের পর ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেছেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে এবং দলের খেলোয়াড় হিসেবে উপভোগ করেছি। দল হিসেবে আমরা কিছু অর্জন করতে চাই এবং সেটা পেরেছি।’