ভারতীয় ক্রিকেটকে বদলে দিয়েছিল যে দিনটা, দুদিন আগে (২৫ জুন) ছিল সে দিনের ৩৬তম বর্ষপূর্তি। এটা সেই দিন, যেদিন ভারত অল্প রান নিয়েই শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিশ্বকাপের ফাইনালে হারিয়ে দিয়েছিল। সেদিনের পর থেকে ভারতের ক্রিকেট অনেক এগিয়ে গেছে, পরিণত হয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটের বড় শক্তিতে। কয়েক বছর আগেও খেলাটির সবচেয়ে শক্তিশালী কণ্ঠস্বর ছিল ভারতের। সাম্প্রতিক সময়ে সেটা কিছুটা কমে গেছে।
১৯৮৩ সালের সেই জয়টি যেমন ভারতের ক্রিকেটকে বদলে দিয়েছে তেমনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের পতনের শুরুটাও সেখান থেকেই। পরের দেড় দশক তারা টেস্ট ক্রিকেটে কর্তৃত্ব দেখালেও আইসিসি বিশ্বকাপের ফাইনালে আর পৌঁছাতে পারেনি। এটা ঠিক এরপর দুইবার তারা আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। টি-টোয়েন্টি সংস্করণে তারা ভয়ংকর। কিন্তু ৭০-এর দশক থেকে ৯০-এর দশকের শুরু পর্যন্ত অন্যান্য সংস্করণে তারা যেমন অসাধারণ দল ছিল, সে রকম আর কখনো হতে পারেনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়েরা বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতেই খেলে বেড়াতে চায়। এ জন্য তাদের শারীরিক ফিটনেসও টি-টোয়েন্টি খেলার মতো। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ আন্দ্রে রাসেল। অসম্ভব প্রতিভাবান এই ক্রিকেটার ৪ ওভারের বেশি বল করতে পারে না। ব্যাটও করতে পারে ৪ ওভারের কিছু বেশি। এর থেকে বেশি কিছু তার শরীর নিতে পারে না। তারপরও ২০১৯ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছে কিন্তু ম্যাচগুলো জিতে আসতে পারেনি। প্রতিপক্ষ দলগুলোকে তারা ভুগিয়েছে, ম্যাচ নিয়ে সংশয় তৈরি করেছে কিন্তু ম্যাচ জিতে আসতে পারেনি।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচটি জেতার পর ভারত আত্মবিশ্বাসী থাকবে। সামান্য রানের পুঁজি নিয়েও তাদের শারীরিক ভাষা ছিল অসাধারণ। একমুহূর্তের জন্যও তাদের উদ্বিগ্ন মনে হয়নি। তাদের আকাশচুম্বী আত্মবিশ্বাসের কারণেই সম্ভবত অনভিজ্ঞ আফগানিস্তানের মনে সংশয় তৈরি হয়েছে যারা নিজেদের মাত্র দ্বিতীয় বিশ্বকাপ খেলছে।
তবে কিছু ব্যাটসম্যানের আউট দেখে মনে হয়েছে তারা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী ছিল। এটা হতেই পারে, কারণ নতুন বলে আফগানিস্তানের বোলারদের খুবই সাধারণ মনে হয়েছে। তাদের সত্যিকারের শক্তি হচ্ছে স্পিনাররা। শুরুর উইকেটগুলোর পর অসাধারণ এক হাফ সেঞ্চুরি করে কোহলিও যখন আউট হয়ে গেল ব্যাটসম্যানরা তখন আরও চাপে পড়ে গেল।
ভুবনেশ্বর কুমার এখন ফিট, এটা খুব ভালো একটা সংবাদ। তারপরও যদি ভারতীয়রা তাকে আরও কিছুদিন বিশ্রাম দিতে চায়, সেটা খারাপ না। হ্যাটট্রিক করার পর শামিকে বাদ দেওয়া বেশ কঠিন। খেলাটাই এমন।
দলে জায়গা পাকা করার জন্য বিজয় শংকরও সম্ভবত আরও একটি ম্যাচ পাচ্ছে। আরেকবার ব্যর্থ হলে ভালো শুরুর পর তার আউট হয়ে যাওয়ার অভ্যাসটা তার বিপক্ষে যাবে। ভারতের জন্য এটা আরেকটা পরীক্ষা হবে। ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের দুই স্মরণীয় দিন, ২৫ জুন ও ২ এপ্রিলের পুনরাবৃত্তির জন্য এ রকম পরীক্ষা বেশ ভালো।