চলতি আইপিএল সানরাইজার্সের জার্সিতে দুর্দান্ত খেলছেন আফগানিস্তানের লেগ স্পিনার রশিদ খান। ফলে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আওয়াজ তুলেছে, রশিদকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হোক। যা নজরে এসেছে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিরও। তিনি সোজাসাপ্টা বলে দিয়েছেন, রশিদকে হারাতে চান না তাঁরা।
রশিদ খান যেন বিশ্ব ক্রিকেটের নতুন ‘হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা’। বিশে পা রাখা এই আফগানের মুখে জাদুর বাঁশি নেই, জাদু আছে হাতের কবজিতে। বল হাতে নিয়ে যেভাবে ইচ্ছে সেভাবেই নাচাচ্ছেন ব্যাটসম্যানদের। বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানরাও তাঁর গুগলির সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করছেন নিমেষেই।
আইপিএলের দর্শকদের কাছে রশিদ হয়ে উঠেছেন বিনোদনের ফেরিওয়ালা। ব্যাটসম্যানদের ব্যাট থেকে আসা চার-ছক্কাগুলোই সাধারণত গ্যালারির দর্শকদের প্রধান বিনোদন। কিন্তু রশিদের কবজির মোচড় থেকে যে মোহনীয় বৈচিত্র্য বের হচ্ছে, দর্শকদের বিনোদনের জন্য এই-বা কম কী! রশিদে এতটাই মজেছেন ভারতীয় দর্শকেরা, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ঝড় উঠেছে—রশিদ খানকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হোক।
কেনই-বা রশিদকে নিয়ে মজবে না! বেশি দূর যাওয়ার প্রয়োজন নেই। গতকাল কলকাতার মাঠে কলকাতাকে হারিয়ে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ফাইনাল নিশ্চিত করল কার জাদুতে? কোনো সন্দেহ ছাড়াই উত্তর আসবে রশিদ। ব্যাট হাতে ১০ বলে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ৩৪ রান করে অপরাজিত থেকে দলকে এনে দিয়েছেন লড়াই করার পুঁজি। আবার বল হাতে ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। স্বাভাবিকভাবে ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠেছে রশিদের হাতে।
১৬ ম্যাচে ২১ উইকেট নিয়ে আইপিএলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি রশিদ, ইকোনমি ৬.৭৮। এমন খেলোয়াড়কে চাইতে পারে যেকোনো দল! কিন্তু চাইলেও তো আর পাওয়া যায় না। ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের পক্ষে থেকে রশিদকে নাগরিকত্ব দেওয়ার আবেদনের বিষয়টির নজরে এসেছে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিরও। আফগান প্রেসিডেন্টও মজা করেছেন বিষয়টি নিয়ে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে মজা করে টুইট করেছেন আশরাফ, ‘আমাদের নায়ক রশিদ খানকে নিয়ে আফগানরা গর্ব করে। আমাদের খেলোয়াড়দের দক্ষতা প্রমাণের জন্য সুযোগ দেওয়ার জন্য আমাদের ভারতীয় বন্ধুদের প্রতি কৃতজ্ঞ। রশিদ সবাইকে মনে করিয়ে দিচ্ছে, আফগানিস্তানের ভালো দিকগুলো কী। ক্রিকেট বিশ্বের একটি সম্পদ সে। না, আমরা ওকে যেতে দেব না।’