সৌরভ গাঙ্গুলীর আমলেই ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচের পদে বসেছেন রাহুল দ্রাবিড়। সেটি সৌরভদের অনুরোধেই। ভারতের যুব ক্রিকেট দল, ‘এ’ দল আর বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির কোচ হিসেবে ভালোই ছিলেন দ্রাবিড়। সব সময়ই কিছুটা নিভৃতে কাজ করে যেতে পছন্দ করা ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা এ তারকার হাতে জাতীয় ক্রিকেট দলের দায়িত্ব তুলে দিতে পেরে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড দারুণ খুশি। ভবিষ্যতেও এভাবেই জাতীয় দলে মেধাবী ও সেরা তারকাদের কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ার ইচ্ছা তাদের।
ভারতীয় ক্রিকেট দলে ‘ফ্যাব ফাইভ’ বা ‘দুর্দান্ত পাঁচে’র গল্পটা বহু চর্চিত। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে এ শতকের প্রথম দশকটা এ ‘দুর্দান্ত পাঁচ’ ভারতীয় ক্রিকেট দলকে নিয়ে যায় অন্য উচ্চতায়। আজ ভারতীয় ক্রিকেট দলের যে অবস্থান, সেটির পেছনে এ ‘দুর্দান্ত পাঁচে’র অবদানও অবিস্মরণীয়। শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলী, রাহুল দ্রাবিড়, বীরেন্দর শেবাগ ও ভিভিএস লক্ষ্মণ—এই পাঁচ ক্রিকেটারকেই একসঙ্গে ‘দুর্দান্ত পাঁচ’ বলা হতো।
এ ‘দুর্দান্ত পাঁচে’র একজন সৌরভ গাঙ্গুলী এখন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি। আরেকজন রাহুল দ্রাবিড় ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচ। বাকি থাকল তিনজন—শচীন টেন্ডুলকার, ভিভিএস লক্ষ্মণ ও বীরেন্দর শেবাগ। তাঁদের মধ্যে লক্ষ্মণ এরই মধ্যে বসে গেছেন দ্রাবিড়ের ফেলে আসা একাডেমির কোচের আসনে। শেষের জনকে নিয়ে এখনো তেমন কিছু শোনা না গেলেও সৌরভ জানিয়েছে টেন্ডুলকার ভারতীয় ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারেন।
ভারতের অন্যতম ক্রীড়া সাংবাদিক বোরিয়া মজুমদারের সঙ্গে টেলিভিশনের ‘ব্যাকস্টেজ উইথ বোরিয়া’ অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে সৌরভ জানিয়েছেন তাঁর সাবেক সতীর্থদের নিয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা। বলেছেন, এখন না হলেও ভবিষ্যতে ভিভিএস লক্ষ্মণকে ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচের পদে দেখা যাবে।
দ্রাবিড় ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ২০২৩ পর্যন্ত। তবে তিনি নাকি কোচের পদে বসতে সেভাবে ইচ্ছুক ছিলেন না। বরং এ ব্যাপারে লক্ষ্মণের আগ্রহটাই ছিল বেশি। দ্রাবিড় নিজ শহর বেঙ্গালুরুতে জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির প্রধান কোচ হিসেবে খুশি ছিলেন। দ্রাবিড় ভারতীয় দলের কোচ হওয়ার পর লক্ষ্মণের হাতে এখন তুলে দেওয়া হয়েছে জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির দায়িত্ব।
সৌরভ লক্ষ্মণের কোচ হওয়া সম্পর্কে বোরিয়া মজুমদারের অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘ভারতীয় দলের হয়ে কাজ করার জন্য লক্ষ্মণ খুবই আগ্রহী ছিল, কিন্তু সেটি সম্ভব হয়নি। আগামী দিনে সে ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচ হতে পারে।’
রাহুল নাকি ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচ হতে চাননি। সৌরভ এটিও জানিয়েছেন অনুষ্ঠানটিতে, ‘রাহুল একটু চুপচাপ জীবন পছন্দ করে। নিজের মনে কাজ করে যায়। তা ছাড়া ওর ছেলেরা বড় হচ্ছে, এটাও ওর একটা চিন্তার কারণ ছিল। কারণ, কোচ হলে ৮-৯ মাস পরিবারের বাইরে থাকতে হয়। এটা রাহুল চাচ্ছিল না। আমাদের অনুরোধে সে শেষ পর্যন্ত রাজি হয়েছে।’