এবারের রঞ্জি ট্রফিতে খেলবেন না ঋদ্ধিমান সাহা
এবারের রঞ্জি ট্রফিতে খেলবেন না ঋদ্ধিমান সাহা

‘বয়সের কারণে’ ঋদ্ধিমানের বাদ পড়া মানতে পারছেন না কিরমানি

ঋদ্ধিমান সাহাকে নিয়ে ভারতের ক্রিকেটে তোলপাড় চলছে। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের দল থেকে বাদ পড়ার পর ক্ষোভ প্রকাশ করেন ঋদ্ধিমান। তাঁর সেই ক্ষোভ দেখানো নিয়ে দেশটির ক্রিকেট মহলে আলোচনার তুমুল ঝড়। এবার সেই আলোচনায় যোগ দিলেন ভারতের সর্বকালের সেরা উইকেটকিপারদের একজন সৈয়দ কিরমানি। সাবেক এ উইকেটকিপারের কথায় প্রকাশ পেয়েছে ঋদ্ধিমানের প্রতি তাঁর সমর্থনের বিষয়।

ঋদ্ধিমানকে এই সময়ে ভারতের সেরা উইকেটকিপারই মনে করেন কিরমানি। তবে তাঁর বয়সটাও যে একটু বেশি হয়েছে এবং এটাই টেস্ট দলে তাঁকে না নেওয়ার কারণ, এটাও বোঝেন ভারতের সাবেক এই ক্রিকেটার। ঋদ্ধিমানের টেস্ট দল থেকে বাদ পড়া নিয়ে কিরমানি বলেছেন, ‘আমি এ ছেলেটিকে খুব উঁচু মানের মনে করি। আমার মতে, টেকনিক্যালি সে এই সময়ে ভারতের সবচেয়ে দক্ষ উইকেটকিপার। কিন্তু নির্বাচক কমিটি, টিম ম্যানেজমেন্ট এবং দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা হয়তো অন্যকিছু ভাবছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে।’

ভারতের সাবেক উইকেটকিপার সৈয়দ কিরমানি

ঋদ্ধিমানের বয়স হয়ে গেছে ৩৭ বছর। এই বয়সের কাউকে দলে না রেখে ভারতের নির্বাচক এবং টিম ম্যানেজমেন্ট চাইছে নতুন কাউকে সুযোগ দিতে। এটা তারা করছে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই। এ কারণেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ভারতের নির্বাচকেরা উইকেটকিপার হিসেবে দলে রেখেছেন ২৪ বছর বয়সী ঋষভ পন্ত ও ২৮ বছর বয়সী শ্রীকর ভারতকে। পন্ত ভারতের হয়ে ২৮টি টেস্ট খেললেও শ্রীকর ভারত আছেন অভিষেকের অপেক্ষায়।

বয়সের বিষয়টি বলতে গিয়ে কিরমানি তাঁর নিজের এবং শচীন টেন্ডুলকারের দল থেকে বাদ পড়ার বিষয়টিও টেনে এনেছেন, ‘বয়সের কারণে বাদ পড়ার বিষয়টি অনেক দিনের ব্যাপার। আমি এর শিকার হয়েছি। তারা শচীন টেন্ডুলকারকেও ছাড় দেয়নি, তাই না? আমি অবশ্য মনে করি, ৩০ বছর বয়স থেকেই একজন খেলোয়াড় পরিণত হতে শুরু করে। এর আগপর্যন্ত তো সে শেখার মধ্য দিয়েই যায়।’

বয়সের কারণে শচীন টেন্ডুলকারকেও দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল, এমনটিই বলেছেন কিরমানি

কিরমানি এখানেই থামেননি। ঋদ্ধিমান আর তাঁর বাদ পড়ার মধ্যে যে একটি মিল আছে, টেনে এনেছেন সেই প্রসঙ্গও, ‘আমার মতো ঋদ্ধিমানও ক্যারিয়ারে ফর্মের চূড়ায় থাকা অবস্থায় দল থেকে বাদ পড়ল। তাহলে আমরা কেন শুধু ক্রিকেটারদের (বয়স) নিয়েই কথা বলি? প্রশাসকদের বেলায় কী হবে?’

গত বছরের নভেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কানপুরে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ৬১ রান করেছিলেন ঋদ্ধিমান। ড্র হওয়া সেই টেস্টে তাঁর ইনিংসটি দলের জন্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ১০৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলা ভারত ৮ নম্বরে ব্যাট করতে নামা ঋদ্ধিমানের ওই ইনিংসেই ৭ উইকেটে ২৩৪ রান করে ইনিংস ঘোষণা করতে পেরেছিল। ওই ইনিংসের পরপরই ঋদ্ধিমানকে বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী নাকি হোয়াটসঅ্যাপে একটা বার্তা পাঠিয়েছিলেন—তিনি যত দিন দায়িত্বে আছেন, ঋদ্ধিমান দলে থাকবেন। কিন্তু পরে কোচ রাহুল দ্রাবিড় ডেকে নিয়ে তাঁকে বলেছেন, তিনি টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনায় নেই। এটাই ক্ষুব্ধ করেছে ঋদ্ধিমানকে।

ভারতের উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা সুযোগ পাননি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট দলে

ঋদ্ধিমান এবার বাংলার হয়ে রঞ্জি ট্রফি না খেলার ঘোষণা দিয়েছেন। এটাকে অনেকে ঋদ্ধিমানের সম্ভাব্য অবসরের ইঙ্গিত হিসেবে ধরে নিচ্ছেন। কিন্তু ভারতের ১৯৮৩ বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য কিরমানি মনে করেন এখনই ঋদ্ধিমানের অবসর নেওয়াটা ঠিক হবে না, ‘বুঝতে পারছি না, তাকে তারা কীভাবে কোন বার্তা দিয়েছে। তাই আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারব না। তবে বিষয়টিকে ঋদ্ধির ক্রীড়াসুলভ দৃষ্টিতেই দেখা উচিত এবং দলে ফিরে আসার জন্য রঞ্জি ট্রফিতে মনোযোগ দেওয়া উচিত।’