স্টাম্প উপড়ে নিয়েছে রুবেল হোসেনের বল। ওদিকে হুংকার ছুড়ে উদ্যাপন করছেন রুবেল, ওদিকে মাথা নিচু করে আরেকবার শ্যাডো করলেন সাকিব। ফিরে যেতে যেতেও থামলেন।
আম্পায়াররাই থামালেন। রুবেলের বল বৈধ ছিল কি না, সেটা দেখতে চাইছেন তাঁরা। একটু কি আশা জেগেছিল সাকিব আল হাসানের মনে? ভাগ্যটা যদি সহায় হয়, তাহলে আরেকটা সুযোগ পেলেও তো পেতে পারেন!
বেশ সময় নিয়েই পরীক্ষা করা হলো। কিন্তু রুবেলের পায়ের পেছন ভাগ ভালোভাবেই দাগের মধ্যে ছিল। ফলে জীবন পাওয়া হলো না সাকিবের। আরও একবার ব্যর্থ হয়েই ফিরতে হলো নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা এই অলরাউন্ডারকে। ৯ বলে ১১ রানে ফিরেছেন সাকিব। তাঁর দল জেমকন খুলনা আজ বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে তুলেছে ১৪৬ রান।
অবশ্য দারুণ বোলিং করে এটাকেই জয়ের জন্য যথেষ্ট জানিয়েছেন সাকিবেরা। তাড়া করতে নেমে মুশফিকরা অলআউট হয়েছেন ১০৯ রানে।
প্রথম দুই ম্যাচে মাত্র ২৭ রান করেছিলেন সাকিব। তাই কী বুঝে দুদিন আগে তৃতীয় ম্যাচে নেমে গিয়েছিলেন ইনিংস উদ্বোধন করতে। ভাগ্য বদলায়নি, উল্টো সেদিন মাত্র ৩ রানে ফিরেছেন। আজও ইনিংসের শুরুতে দেখা গেল সাকিবকে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যে কাজ কখনো করেননি, তাতে আজও স্বচ্ছন্দ মনে হয়নি। রুবেলের বলের লাইন মিস করে হয়েছেন বোল্ড। তার আগের ৮ বলেও দুই চারে মাত্র ১১ রান করেছেন। নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে চার ম্যাচে ৪১ রানই বলে দিচ্ছে, ছন্দে ফিরতে সময় লাগবে এই অলরাউন্ডারের।
সাকিবের আগেই ফিরে যান অন্য ওপেনার এনামুল হক। সাকিবের পর জহুরুল ইসলামও পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই বিদায় নেন। ৩০ রানে ৩ উইকেট হারানো খুলনার ইনিংসটা তাই গতি পায়নি কখনোই। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ নেমে ইমরুল কায়েসকে নিয়ে বিপদ কাটিয়েছেন। ৫৬ রানের জুটিটা যদিও এগিয়েছে ওয়ানডে ছন্দে। চতুর্থ উইকেটে এই জুটিটা ছিল ৫১ বলে।
১৪তম ওভারে ব্যক্তিগত ২৯ রানে ফিরেছেন ইমরুলও। ২৭ বলের ইনিংসটা শেষ হওয়ার পর একটু গতি পেয়েছে খুলনার ইনিংস। শেষ ৬ ওভারে ৬০ রান পেয়েছে খুলনা। তাতে অবশ্য অবদান আরিফুল হক ও শুভাগত হোমের। ১১ বলে ১৯ রান করেছেন ছয়ে নামা আরিফুল। আর আটে নেমে ৫ বলে ১৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন শুভাগত।
শেষ ওভারে সাকিবের মতোই রুবেলের বলে বোল্ড হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ৪৭ বলে ৩ চারে ৪৫ রান করেছেন খুলনা অধিনায়ক। অবশ্য উইকেটের যে অবস্থা, এ ইনিংসই দল জেতানোর জন্য যথেষ্ট হয়ে উঠতে পারে।
শুরু থেকেই দারুণ বল করা রুবেল ৩ উইকেট নিয়েছেন ২৮ রান খরচায়। তাঁর সঙ্গে নতুন বল হাতে নেওয়া অভিষিক্ত শফিকুল ইসলাম ৩৪ রানে পেয়েছেন ২ উইকেট। তবে খুলনাকে মূল চাপে ফেলেছেন নাসুম আহমেদ ও নাঈম হাসান। ৪ ওভারে মাত্র ১০ রানে ১ উইকেট নাসুমের। নাঈম ১৬ রান দিয়ে ১ উইকেট পেয়েছেন তাঁর ৩ ওভারে।
তাড়া করতে নামা ঢাকা প্রথম ওভারেই উইকেট হারিয়েছে। প্রথম বদলি হিসেবে বল করতে এসে উইকেট মেডেন পেয়েছেন সাকিব। প্রথম দুই ওভারে কোনো রান দেননি সাকিব। ৪ ওভারে স্পেলে মাত্র ৮ রান দিয়েছেন সাকিব।
১৪ রানে ৩ উইকেট হারানো দলকে টানার চেষ্টা করেছেন মুশফিকুর রহিম (৩৭) ও ইয়াসির আলী (২১)। কিন্তু ইয়াসির ফেরার পর সব চাপ মুশফিকের ওপর এসেছে। শুভাগতর বলে মুশফিক ফেরার পর ঢাকার জয়ের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। ২১ রানে ৫ উইকেট হারায় দলটি। শুভাগত হোম ১৩ রানে পেয়েছেন ৩ উইকেট।