নিউজিল্যান্ডকে অভিনন্দন। অবিশ্বাস্য একটি ম্যাচ দেখলাম। মানুষ ক্রিকেট কেন এত পছন্দ করে, সেটিই তুলে ধরেছে ম্যাচটি। হারটা দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড় ও সমর্থকদের জন্য অনেক যন্ত্রণার। বিশ্বকাপে দল সাফল্য পাবে—২০ বছর ধরেই তো এই আশায় বসে আছে তারা। তবে ফল যা-ই হোক না কেন জীবন ও খেলা দুটির একটিও থেমে থাকবে না। ম্যাচের পর এবি ডি ভিলিয়ার্স যেমন বলল, ‘আগামীকালও সূর্য উঠবে।’
আমরা এর চেয়েও বেশি যন্ত্রণাদায়কভাবে হেরেছি। ১৯৯৯ বিশ্বকাপের টাই হওয়া সেমিফাইনালটাকেই সবার আগে রাখব। এই দলের কোনো খেলোয়াড় অবশ্য সেই ম্যাচে ছিল না। পরশু ছেলেরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সমানতালে লড়েছে। শেষ বলের আগের বল পর্যন্ত ওরা ম্যাচে ছিল। কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত পারলাম না।
তবে আমি মনে করি ওই সময়ে বৃষ্টি না এলে আমরা সহজেই জিতে যেতাম। বৃষ্টিটা এমন সময় এল ও এত সময় ধরে থাকল, সবকিছুই ওলটপালট হয়ে গেল। কিন্তু আবহাওয়া নিয়ে কথা বলার কী আছে, কারও তো এর ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই। এবিও (ডি ভিলিয়ার্স) আবহাওয়া, ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিকে দায়ী করেনি। সে একমাত্র নিজেকেই দায়ী করতে পারে। কোরি অ্যান্ডারসনের রানআউটটা সে যেভাবে মিস করল! অবশ্য আমরা আরও সুযোগ নষ্ট করেছি। তবে এবার আমরা চোক করিনি। যেটা দরকার সেটা হলো প্রতিপক্ষকে প্রচণ্ড চাপে ফেলা ও ভুল করতে বাধ্য করা। সব খেলারই এই নিয়ম।
১২ ওভার হাতে রেখে ৩ উইকেটে ২১৬, দক্ষিণ আফ্রিকার রান নিশ্চিতই সাড়ে তিন শ ছাড়াত। ওই ১২ ওভারের ৫টি করতে হতো আবার ওদের পঞ্চম বোলারকে। কিন্তু হলো না। আমি দৈবে বিশ্বাসী নই, কিন্তু কিছু মানুষ কেন বিশ্বাস করে সেটা অন্তত বুঝি! আমি শুনেছি পরশু অকল্যান্ডে বৃষ্টি হয়েছিল শুধু স্টেডিয়াম এলাকাতেই। আর মেঘলা আবহাওয়া রইল ঘণ্টা দুয়েক। মেঘটা এতই ছোট ছিল যে রাডারেও ধরা পড়েনি। কিন্তু সবকিছু তো ওতেই বদলে গেল।
এই মুহূর্তে ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবাটা মুশকিল। পরের ম্যাচ, পরের টুর্নামেন্ট এসব নিয়ে এখনই ভাবা অবান্তর। তবে আমাদের টেস্ট ক্রিকেট আছে! এবি যখন সাদা পোশাক গায়ে চড়াবে, তখন আবার মনে হবে আমরাই এক নম্বর।
মনে হয় না দক্ষিণ আফ্রিকার ছেলেরা দ্বিতীয় সেমিফাইনালটা দেখবে। তবে আমি দেখব। অস্ট্রেলিয়াই ফেবারিট, যদিও আমি মনে হয় ভালো সুযোগ আছে ভারতেরও। আমি নিশ্চিত আমার পুরোনো বন্ধু ও গুরু ডানকান ফ্লেচার স্বাগতিকদের বিস্ময় উপহার দেওয়ার জন্য ছক কাটছেন।
যে-ই ফাইনালে উঠুক না কেন, নিউজিল্যান্ডকে হারাতে খুব খুব ভালো খেলতে হবে। (হক-আই)