ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচের আগেও বৃষ্টি ভাবাচ্ছে মাহমুদউল্লাহকে
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচের আগেও বৃষ্টি ভাবাচ্ছে মাহমুদউল্লাহকে

বাংলাদেশ দলের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর

বৃষ্টির ভয় গায়ানাতেও

ডমিনিকায় বৃষ্টির সঙ্গে লুকোচুরি করতে হয়েছে। গায়ানাতেও তা-ই। গতকাল তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচের ভেন্যুতে এসে মেঘলা আকাশই পেয়েছে বাংলাদেশ দল। আজ সকালেও বৃষ্টি হয়েছে। তবে আগামীকালের ম্যাচ সামনে রেখে আজ অনুশীলনটা অন্তত করতে পেরেছে বাংলাদেশ দল।

পূর্বাভাসে অবশ্য সুখবর নেই। বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে আগামীকালও। শেষ পর্যন্ত দুই দলের ম্যাচের ভাগ্যে কি আছে, সেটি অনুমান করা কঠিন। আপাতত ম্যাচটা পুরোপুরি হবে ধরেই প্রস্তুত হচ্ছে বাংলাদেশ দল।

আজ গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ কাভার করতে যাওয়া সাংবাদিকদের মাহমুদউল্লাহ বলছিলেন সে কথা, ‘বৃষ্টির বিষয়টা আমাদের হাতে নেই। আমরা আমাদের প্রস্তুতি সাধ্যমতো নেওয়ার চেষ্টা করব। আমরা ইতিবাচকভাবে চিন্তা করব যে ম্যাচটা পুরোপুরি হবে।’

তবে মাহমুদউল্লাহ ম্যাচের ওভার কমে যাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না, ‘না হলে আমাদের সেটা মানসিকভাবে মানিয়ে নিতে হবে। প্রস্তুত থাকতে হবে। হয়তো ওভার কমতে পারে। ব্যক্তিগতভাবে এবং দলগতভাবে আমাদের সবসময় মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে মানিয়ে নিতে। তারপর পরিস্থিতি যেটাই আসুক আমরা চেষ্টা করব মানিয়ে নিয়ে আমাদের ক্রিকেটটা খেলে যেতে।’

গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে অনুশীলনের আগে গা গরম করছেন ক্রিকেটাররা

এ তো গেল প্রকৃতির অনিশ্চয়তার কথা। বাংলাদেশ দলের বিভিন্ন বিভাগের পারফরম্যান্সের অনিশ্চয়তাও মাহমুদউল্লাহকে ভাবাচ্ছে। এই যেমন টপ অর্ডার টি-টোয়েন্টি দলের ধারাবাহিক দুশ্চিন্তার নাম। বোলিং ছিল স্বস্তির জায়গা, টি-টোয়েন্টি দলের বোলিং নিয়ে আশাটা এমন, অন্তত মাঝারি মানের রান পেলেও বোলাররা ম্যাচটা জিতিয়ে দেবেন। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচেই সেই বোলিং আক্রমণই ১৯৩ রান দিল!

বাংলাদেশ দলের এমন দ্বিমুখী সমস্যার ব্যাপারে মাহমুদউল্লাহকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি খেলাটাই এরকম। অনেক সময় ওপেনাররা ভালো শুরুর পরও মিডল অর্ডার সেটা টেনে নিয়ে নাও যেতে পারে। তারপরও কাউকে না কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে। আগের ম্যাচে সাকিব যেরকম একটা ইনিংস খেলল, আমরা ১৬০-এর কাছাকাছি চলে গিয়েছিলাম। এরকম একজনকে করতে হবে। সঙ্গে কয়েকজনকে ১৫-২০-৩০ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলতে হবে। তাহলে হয়তো আমরা ধারাবাহিকভাবে ১৬০-১৭০ করতে পারব।’

কত রান করতে পারলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানো সম্ভব, সেটিরও একটা মানদন্ড ঠিক করে রেখেছে বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহর কথায় সেটির আভাস, ‘আমাদের বিশ্বাস ব্যাটসম্যানরা যদি ধারাবাহিকভাবে ১৬০-১৭০ রান করতে পারে বোলাররা সেটা ডিফেন্ড করতে পারবে। হয়তো আগের ম্যাচে পেস বোলাররা ভালো করতে পারেনি। কিন্তু অনেক ম্যাচেই কিন্তু বোলাররা প্রতিপক্ষকে অল্প রানে আটকে রাখতে পেরেছে।’

টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান রান খরাও মাহমুদউল্লাহকে এখনই ভাবাচ্ছে না। এক-দুই ম্যাচের ব্যর্থতায় কাউকে বাদও দেওয়ার পক্ষে তিনি নন, ‘চিন্তার বিষয় হিসেবে দেখছি না। যারাই সুযোগ পাচ্ছে তাদের প্রতি যেন আমরা আস্থা রাখি। যেন ওরা টিম ম্যানেজম্যান্টের সিদ্ধান্তে আস্থা রাখতে পারে। যে যখন সুযোগ পাবে সে যেন ঠিক মতো সুযোগটা পায়। কমপক্ষে তিন-চারটা ম্যাচ যেন সুযোগ পায়। এরপর যদি কেউ ভালো না করে তখন হয়তো আরেকজনকে দেখব। কিন্তু সুযোগ দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। যেন ওরা যেন বুঝতে পারে – আমার কাছে সুযোগ আছে। আমি যেন এটা ঠিক মতো ব্যবহার করি।’

তবে টপ অর্ডার অপরিবর্তিত থাকলেও বোলিং আক্রমণে পরিবর্তনের আভাস পাওয়া গেল মাহমুদউল্লাহর কথায়। গায়ানার উইকেটের চরিত্রের কারনে দলে ফিরতে পারেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। সেক্ষেত্রে তিন পেসারের একজনকে নাসুমের জন্য জায়গা ছাড়তে হবে। মাহমুদুউল্লাহ গায়ানায় খেলার অভিজ্ঞতা থেকে বলছিলেন, ‘শেষবার যখন খেলেছি, তখন উইকেট কিছুটা স্লো ছিল। আজকেও দেখে মনে হয়েছে কিছুটা ড্রাই। এখন কালকে উইকেট, কন্ডিশন কেমন থাকবে সেটা দেখতে হবে।’