>যশপ্রীত বুমরাকে বোলিং নিয়ে পরামর্শ দিয়ে একটা টুইট করেছিলেন মাঞ্জরেকার। কিন্তু সেটা মোটেও পছন্দ হয়নি ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকদের। ফলে যা হওয়ার তাই হলো। একের পর এক শ্লেষাত্মক মন্তব্যে বিদ্ধ হয়েছেন মাঞ্জরেকার
কী এক বিপদে পড়েছেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার!
সারা জীবন ক্রিকেটকেই সাধনা মেনেছেন, এক সময় ভারতের জার্সিতে মাঠ মাতিয়েছেন। এখন ক্রিকেটের সঙ্গে আছেন ধারাভাষ্য বক্স থেকে। তা এমন একজনের কি ইচ্ছে হতে পারে না ক্রিকেট নিয়ে কোনো বিশ্লেষণাত্মক মন্তব্য করার? সাবেক ভারতীয় ব্যাটসম্যান করেছেন বটে, কিন্তু সে জন্য ভারতের ক্রিকেট সমর্থকদের কাছ থেকেই এত খোঁচা শুনতে হবে তা যদি ঘুণাক্ষরেও টের পেতেন আগে!
মাঞ্জরেকার কথাটা বলেছেন ভারতের এখনকার দলের ফাস্ট বোলিং তারকা যশপ্রীত বুমরাকে উদ্দেশ্য করে। হ্যামিল্টনে গত পরশু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা দেখেছে সুপার ওভারের নাটক, সেখানে ভারতের হয়ে সুপার ওভারটা করেছেন বুমরাই। ভালো করেননি খুব একটা। তাঁর ছয় বলে ১৭ রান তুলেছেন নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন ও মার্টিন গাপটিল। এরপরও অবশ্য শেষ দুই বলে দুই ছক্কা মেরে ভারতকেই জয় এনে দিয়েছেন রোহিত শর্মা। তা ভারত জিতলেও বুমরার বোলিংয়ের একটা নেতিবাচক দিক চোখে পড়েছে মাঞ্জরেকারের।
ম্যাচের পর টুইটারে তাই সাবেক ভারতীয় ব্যাটসম্যান লিখেছেন, ‘বুমরাহর সুপার ওভারটা দেখলাম। ও এত অসাধারণ একজন বোলার কিন্তু আমার মনে হয়েছে আরও ভিন্ন কৌণিক সুবিধা পাওয়ার জন্য ও ক্রিজটাকে আরও বেশি ব্যবহার করতে পারে।’
সহজ-সাধারণ বিশ্লেষণ। এতটুকু করার পুরো অধিকারই আছে মাঞ্জরেকারের। কিন্তু ওই যে, যারে দেখতে নারি, তার চলন বাঁকা! মাঞ্জরেকারের মন্তব্যে তেমন অনুভূতিই সম্ভবত হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকদের। একে তো মাঞ্জরেকারের ধারাভাষ্য পছন্দ না করা মানুষের সংখ্যা কম নয়, তার ওপর গত নভেম্বরে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গোলাপি বলের টেস্টের তৃতীয় দিনে বিখ্যাত ভারতীয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলের উদ্দেশ্যে মাঞ্জরেকারের মন্তব্য মোটেও ভালোভাবে নেয়নি সাধারণ মানুষ। ‘গোলাপি বল দেখায় ভারতীয় খেলোয়াড়দের অসুবিধা হচ্ছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার’—ভোগলের এমন মন্তব্যের জবাবে ভোগলের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না খেলার দিকটা টেনে এনে আত্ম দম্ভী মাঞ্জরেকার বলেছিলেন—বল দেখায় মোটেও অসুবিধা হচ্ছে না। তিনি সেটা জানেন কারণ তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন, যেটা ভোগলে কোনো দিন খেলেননি।
চারদিকে সমালোচনার জেরে মাঞ্জরেকার পরে ক্ষমা চেয়েছিলেন বটে, কিন্তু সাধারণ মানুষের মন তাতে সম্ভবত গলেনি। সময়ের অন্যতম সেরা বোলার বুমরাকে পরামর্শ দেওয়া তাঁর এই টুইটের মন্তব্যগুলোই সেটির প্রমাণ। কার্তিক নামে একজনের মন্তব্য, ‘এসব বন্ধ করুন, আপনি নিজে খুবই গড়পড়তা খেলোয়াড় ছিলেন।’ শুভময় নামের আরেকজনের মন্তব্য, ‘২০১৯ সালের সঞ্জয় মাঞ্জরেকার ২০২০ সালে ফিরে এসেছেন। কেন সঞ্জয়? আমার তো মনে হয়, সাধারণ মানুষের খোঁচা খাওয়া আপনার প্যাশন।’ চান পাল সিং নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘প্লিজ অন্য দেশের বোলারদেরও কিছু পরামর্শ দিন, যাতে তাঁরাও একইরকম বিব্রত বোধ করতে পারে।’
একটা বিশ্লেষণাত্মক মন্তব্য করেও কী শ্লেষের মুখে পড়ছেন মাঞ্জরেকার! আজ তেমন কোনো মন্তব্য করেন কি না, তা-ই এখন দেখার। ভারত ও নিউজিল্যান্ডের পাঁচ টি-টোয়েন্টির সিরিজের চতুর্থটি যে ওয়েলিংটনে বাংলাদেশ সময় আজ দুপুর একটায়। আগের তিন ম্যাচের তিনটিই জিতেছে ভারত।